চলমান যুদ্ধের মধ্যেই ইউক্রেনের অস্ত্রপ্রধানসহ ৪ মন্ত্রীর পদত্যাগ

চলমান যুদ্ধের মধ্যেই ইউক্রেনের অস্ত্রপ্রধানসহ ৪ মন্ত্রীর পদত্যাগ

সংগৃহীত

টানা আড়াই বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন চালাচ্ছে রাশিয়া। অন্যদিকে রুশ এই আগ্রাসন মোকাবিলায় নিজেদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পশ্চিমা সহায়তায় পুষ্ট ইউক্রেন।

সম্প্রতি ইউক্রেনীয় বাহিনী রাশিয়ার অভ্যন্তরেও হামলা বাড়িয়েছে। এমন অবস্থায় পদত্যাগ করেছেন অস্ত্র উৎপাদনের দায়িত্বে থাকা ইউক্রেনের মন্ত্রী। একইসঙ্গে দেশটির অন্য আরও চারমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন।

রাশিয়ার সঙ্গে সংঘাতের এই গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে সরকারে বড় ধরনের রদবদল হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অস্ত্র উৎপাদনের দায়িত্বে থাকা ইউক্রেনের মন্ত্রী মঙ্গলবার পদত্যাগ করেছেন। তাকে এখন দেশটির প্রতিরক্ষা কর্মকাণ্ডের অন্য কোনও ভূমিকায় নিযুক্ত করা হতে পারে। অন্যদিকে সরকারি রদবদলের অংশ হিসেবে এদিন দেশটির অন্য চারজন মন্ত্রীও পদত্যাগ করেছেন।

এদিকে পৃথক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, মঙ্গলবার যারা পদত্যাগপত্র দিয়েছেন তাদের মধ্যে কৌশলগত শিল্পমন্ত্রী আলেকজান্ডার কামিশিন, বিচারমন্ত্রী ডেনিস মালিউস্কা, পরিবেশ সুরক্ষা মন্ত্রী রুসলান স্ট্রিলেটস, উপ-প্রধানমন্ত্রী ওলহা স্টেফানিশিনা ও ইরিনা ভেরেশচুক এবং ইউক্রেনের স্যাট প্রপার্টি ফান্ডের প্রধান ভিটালি কোভাল রয়েছেন।

এছাড়া প্রেসিডেন্টের অন্যতম সিনিয়র সহকারী রোস্টিস্লাভ শুর্মাকেও ডিক্রি জারি করে বরখাস্ত করা হয়েছে।

টেলিগ্রামে লেখা এক বার্তায় ক্ষমতাসীন সার্ভেন্ট অব পিপল পার্টির সংসদীয় নেতা ডেভিড আরাখামিয়া বলেছেন: ‘প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, এই সপ্তাহে বড় ধরনের সরকারি রদবদলের বিষয়ে আশা করা যেতে পারে। এই রদবদলে মন্ত্রিসভার সদস্যদের ৫০ শতাংশেরও বেশি পরিবর্তন করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগামীকালও আমাদের জন্য বরখাস্তের দিন হবে এবং তার পরের দিন হবে অ্যাপয়েন্টমেন্টের দিন।’

এদিকে রাতে নিজের ভিডিও ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ‘নতুন অবয়বে গঠন করা উচিত যাতে ইউক্রেন আমাদের প্রয়োজনীয় সমস্ত ফলাফল অর্জন করতে পারে’।

অন্যদিকে বিরোধী সংসদ সদস্য ইরিনা গেরাশচেঙ্কো সরকারের এই রদবদলের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, এটি ‘মন্ত্রীবিহীন সরকার। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতাবিহীন সংসদ। বুদ্ধিজীবী এবং কর্মীদের যে সংকট দেখা দিয়েছে সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষ চোখ বন্ধ করে রেখেছে।’

ইউক্রেনীয় সরকারে রদবদল ও পরিবর্তনের এই ঘোষণা এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় শহর পোলতাভাতে রাশিয়ান হামলায় ৫১ জন নিহত এবং আরও ২৭১ জন আহত হয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছেন, এই হামলার জন্য রাশিয়াকে চড়া মূল্য দিতে হবে। এছাড়া ‘রাশিয়ান সন্ত্রাস থেকে রক্ষা করতে পারে’ এমন আরও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহের জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।