কুষ্টিয়ার দৌলতপুর রেজিস্ট্রি অফিস ঘিরে উত্তেজনা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর রেজিস্ট্রি অফিস ঘিরে উত্তেজনা

ছবি:সংগৃহীত

কুষ্টিয়ায় দৌলতপুরে রেজিস্ট্রি অফিস থেকে আওয়ামী লীগ আমলের মতো চাঁদা তোলার চেষ্টা নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের পর উত্তেজনা বিরাজ করছে। 

গত বুধবারের সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পক্ষ পৃথক মামলা করলেও পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করেনি। তাদের দাবি, পরিস্থিতি এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে। 

অন্যদিকে দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব বলছে, রেজিস্ট্রি অফিস থেকে কাউকেই কোনও প্রকার চাঁদা তুলতে দেওয়া হবে না।

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সাব রেজিস্ট্রি অফিস দখলে নিয়ে নতুন করে চাঁদাবাজির চেষ্টা করে বিএনপির একটি পক্ষ। সশস্ত্র মহড়াও দেয় তারা। অপর পক্ষ তাদের বাধা দিতে গেলে সৃষ্টি হয় উত্তেজনা। এ নিয়ে দৌলতপুর বাজারে বিএনপি অফিসে উভয়পক্ষ বৈঠকে বসে গত বুধবার। সেখানে ঘটে সংঘর্ষের ঘটনা। এতে আটজন আহত হয়।

ওইদিন রাতেই বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল নেতাদের এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, বিএনপি দলীয় নানা সংগঠন ও পদের নাম ভাঙিয়ে আওয়ামী আমলের মতোই দৌলতপুর রেজিস্ট্রি অফিস থেকে চাঁদা দাবি করা হচ্ছিল। বুধবার রাত ৮টায় দৌলতপুর উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ে ওই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে স্বাক্ষর করেন উপজেলা বিএনপির দফতর সম্পাদক শের আলী, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রাশেদুল হক শামীম, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মাসুদুজ্জামান রুবেলসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

লিখিত বক্তব্যে দাবি করা হয়, রেজিস্ট্রি অফিসে দুর্নীতি হচ্ছে না তাই চাঁদা দিতে অস্বীকার করা হলে বুধবার সকালে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আকবরের ছেলে উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাফর ইকবাল কর্নেলের নেতৃত্বে দলবল-অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে উপজেলা সংলগ্ন এলাকায় আসে। তারা হাতুরি, লোহার রড, হাত-কুড়াল, রামদা ও পিস্তল নিয়ে আসে। সঙ্গে ছাত্রলীগের কয়েকজনও ছিল বলে দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে। তবে স্থানীয় জনতা তাদেরকে প্রতিহত করেছে। সেসময় কয়েকজন আহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়।

অন্যদিকে উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাফর ইকবাল কর্নেল অভিযোগ করেছেন, উপজেলা ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কতিপয় নেতাকর্মী তার বাবা আকবর আলীর নাম ভাঙিয়ে এই চাঁদাবাজির চেষ্টা করে। তারা প্রতিবাদ করে। এ নিয়ে বুধবার সকালে দৌলতপুর উপজেলা বাজারে স্থানীয় বিএনপির কার্যালয়ে বৈঠকে বসে উভয়পক্ষ। পরে কথা-কাটিকাটির এক পর্যায়ে হামলা হয়। এতে আটজন আহত হয়।

এ নিয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লা বলেন, রেজিস্ট্রি অফিস থেকে কোনও চাঁদা তোলা হবে না। তিনি বলেন, দলিল লেখকদের ডেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে- সাধারণ মানুষ চাঁদার ৮ হাজার টাকা দিয়ে কেন জমি রেজিস্ট্রি করবে। তারা নির্ধারিত ১ হাজার ২শ’ টাকা ফি দিয়েই রেজিস্ট্রি করবে। 

এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় উভয়পক্ষই থানায় পৃথক মামলা করেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, মামলার আসামিরা জামিনের চেষ্টা করছেন বলে শুনেছি। জামিন না নিয়ে ঘুরলে বা কোনও উত্তেজনা সৃষ্টি করলে আসামিদের গ্রেফতার করা হবে।