ইউক্রেনে গোলাবারুদ স্থানান্তরের প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করলো ভারত

ইউক্রেনে গোলাবারুদ স্থানান্তরের প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করলো ভারত

ছবিঃ সংগৃহীত।

ইউরোপীয় ক্রেতারা ভারতীয় তৈরি গোলাবারুদ ইউক্রেনে সরবরাহ করছে— বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এমন একটি প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এটি ‘কাল্পনিক’ এবং ‘ভ্রান্ত’। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

রয়টার্সের ওই প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়, ভারতীয় অস্ত্র নির্মাতাদের তৈরি গোলাবারুদ ইউরোপীয় ক্রেতাদের মাধ্যমে ইউক্রেনে সরবরাহ করা হয়েছে। মস্কোর বারবার আপত্তি সত্ত্বেও দিল্লি এটি বন্ধ করতে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রন্ধির জয়সওয়াল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, প্রতিবেদনটিতে এমন বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে যা ভারতে ঘটেনি। বরং এতে ভারতের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অস্ত্রের অনিয়মিত স্থানান্তরের বিষয়ে ভারতের একটি ‘অনবদ্য রেকর্ড’ রয়েছে এবং ভারতের রপ্তানি বিধিনিষেধ অত্যন্ত কঠোর।

এখনও পর্যন্ত মস্কো এই প্রতিবেদন বা দিল্লির বিবৃতির ওপর কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

ভারতীয় অস্ত্র রপ্তানির নিয়ম অনুযায়ী,নির্দিষ্ট ক্রেতাদের কাছে সরবরাহ করা অস্ত্র তৃতীয় কোনও দেশে স্থানান্তরিত করা যাবে না। অননুমোদিত স্থানান্তর ভবিষ্যৎ বিক্রয় বিপন্ন করতে পারে। তাই মে মাসে ভারত রপ্তানি বিধিনিষেধ আরও কঠোর করে। ক্রেতাদের কাছে নিশ্চিত করতে বলে যে তৃতীয় কোনও দেশে অস্ত্র পাঠানো হবে না।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতীয় ও ইউরোপীয় সরকারি এবং প্রতিরক্ষা শিল্পের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি শুল্ক তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের ব্যবহার করা গোলাবারুদের একটি ক্ষুদ্র অংশ ভারত থেকে উৎপাদিত, যা কিয়েভের মোট অস্ত্র আমদানির এক শতাংশেরও কম।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইতালি এবং চেক প্রজাতন্ত্রসহ বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ ভারতীয় গোলাবারুদ ইউক্রেনে পাঠাচ্ছে।

মস্কো অন্তত দুইবার দিল্লির সাথে এই বিষয়টি উত্থাপন করেছে। এর মধ্যে একটি ছিল জুলাই মাসে উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠকে।

ভারত রাশিয়ার বিরুদ্ধে সরাসরি সমালোচনা থেকে বিরত থেকেছে। অবশ্য ভারতের এমন আচরণে বিরক্ত পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে, ভারত সবসময় দেশগুলোর আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মানের গুরুত্ব সম্পর্কে কথা বলে আসছে। যুদ্ধ বন্ধে কূটনীতি এবং আলোচনার জন্য ভারত বারবার আহ্বান জানিয়েছে।

ভারত ও রাশিয়া ঐতিহ্যগতভাবে উষ্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও রাশিয়া এখনও ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য ও প্রতিরক্ষা অংশীদার। গত বছর রাশিয়া ভারতের সবচেয়ে বড় তেল সরবরাহকারী ছিল। প্রতিরক্ষা খাতেও রাশিয়া ভারতের সবচেয়ে বড় মিত্র।

জুলাই মাসে তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফরে রাশিয়া সফর করেন নরেন্দ্র মোদি।

বিশ্লেষকদের মতে ভারতের বহুল প্রচলিত অজোটনীতি অনুসারে, এর কয়েক সপ্তাহ পর মোদি এমনকি ইউক্রেন সফরও করেন এবং জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনা করেন।