লেবাননে এবার স্থল অভিযানের প্রস্তুতি ইসরায়েলের

লেবাননে এবার স্থল অভিযানের প্রস্তুতি ইসরায়েলের

সংগৃহীত

হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অব্যাহত বিমান হামলার মধ্যেই এবার লেবাননে সম্ভাব্য স্থল অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।

সম্ভাব্য স্থল অভিযানের অংশ হিসেবে উত্তর ইসরায়েলে সামরিক বাহিনীর চলমান মহড়া পরিদর্শন করেছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট। ফিলিস্তিনের গাজাতেও স্থল অভিযানের আগে নির্বিচার বিমান হামলা চালিয়েছিল দখলদার দেশটি।

ইসরায়েলের একটি সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম বলেছে, লেবাননে সম্ভাব্য স্থল অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। স্থল অভিযানের জন্য মহড়ায় অংশ নেওয়া সেনাদের সঙ্গে দেখা করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্ট বলেছেন, সম্প্রতি গাজা উপত্যকা থেকে লেবানন সীমান্ত স্থানান্তর করা ‘সাঁজোয়া বহরের যোদ্ধা ও প্যারাট্রুপারদের’ সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের নিজেদের বাড়িঘরে ফেরানোর লক্ষ্য অর্জনে আমরা যেকোনো ধরনের পদক্ষেপ নিতে ইচ্ছুক।’

টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লেবাননে স্থল অভিযান চালাতে মহড়া চালাচ্ছেন সেনারা।

গাজা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে গত এক বছর ধরে ইসরায়েল ও হেজবুল্লাহর মধ্যে আন্তঃসীমান্ত লড়াই চলছে। এতে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যাদের অধিকাংশই হেজবুল্লাহ যোদ্ধা। এছাড়া লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

হিজবুল্লাহ বলেছে তারা হামাসের সমর্থনে কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং গাজায় যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা তা থামাবে না। দুটি সংগঠনই ইরান সমর্থিত। ইসরায়েল, যুক্তরাজ্যসহ আরও অনেক দেশ তাদের সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বর্ণনা করে থাকে।

সম্প্রতি গাজা থেকে দেশের উত্তরাঞ্চলে নজর ফেরানোর কথা জানিয়েছিল ইসরায়েল সরকার। এরপর যোগাযোগযন্ত্র পেজার ও ওয়াকিটকি বিস্ফোরণ ঘটিয়ে লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর ভিত নাড়িয়ে দেয় ইসরায়েল। ওই ঘটনাকে হিজবুল্লাহর ওপর বড় ধরনের হামলার পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে দেখা হচ্ছিল।

এরই মধ্যে গত সোমবার থেকে গোটা লেবাননজুড়ে নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। সবচেয়ে বেশি হামলা হয় হিজবুল্লাহ অধ্যুষিত দক্ষিণাঞ্চলে।

লেবাননের গণমাধ্যম বলছে স্থানীয় সময় গত সোমবার সকাল সাড়ে ছয়টায় ইসরায়েলের বিমান হামলার প্রথম ঢেউ শুরু হয়। লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের সিডন, মারজেয়ুন, নাবাটিয়ে, বিনত জেবেইল, জেজ্জিন ও জাহরানি এবং পূর্বাঞ্চলীয় বেক্কা উপত্যকার জাহলে, বালবেক ও হারমাল জেলার কয়েক ডজন শহর, গ্রাম ও খোলা জায়গাকে লক্ষ্য করে দিনভর হামলা চালায় ইসরায়েল। দখলদার দেশটির হামলায় এখন পর্যন্ত ৬২০ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে সোমবার একদিনেই নিহত হয়েছেন ৪৯২ জন।

ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর পাল্টাপাল্টি হামলার জের ধরে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।