সুনামগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডে একই পরিবারের ৬ জন নিহত
সংগৃহীত ছবি
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় একই পরিবারের ৬ জন নিহত হয়েছেন।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের শীমের খাল নামক এলাকায় এ ঘটনা।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীন, ধর্মপাশা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আলী ফরিদ ও ধর্মপাশা থানার ওসি এনামুল হক ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন।
নিহতরা হলেন- পরিবারের প্রধান এমারুল (৫০), তার স্ত্রী পলি আক্তার ও তাদের চার সন্তান পলাশ, ফরহাদ, ফাতেমা বেগম ও ওমর ফারুক।
জানা যায়, প্রতিদিনের মতো রাতে আশপাশের বাড়িঘরসহ ওই পরিবারের লোকজন ঘুমাতে যান। রাত সাড়ে ১২টায় ধোঁয়া ও আগুন দেখতে পান আশেপাশের লোকজন। আগুন দেখে আশপাশের লোকজন গিয়ে দেখেন ভেতর থেকে দরজা জানালা বন্ধ করা। দেখতে দেখতে আগুনে ঘরটি ভস্মীভূত হয়। এ সময় ভেতরেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান ওই পরিবারের চার শিশুসহ ছয়জন।
যদিও স্থানীয়দের দাবি, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অনেকদিন ধরে ঝগড়াঝাটি লেগে ছিল। ঘটনার রাতে এমারুল ছাড়া সবাই ঘুমিয়ে ছিল। সেই ঝগড়ার জের ধরেই এমরুল তার ঘুমন্ত স্ত্রী ও সন্তানদের হাত-পা বেঁধে ঘরের চতুর্দিকে কেরোসিন ঢেলে দরজা আটকে আগুন ধরিয়ে দেয়। মুহূর্তেই আগুন হুহু করে সব জ্বালিয়ে দেয়। এই লেলিহান অগ্নিশিখা থেকে এমারুল নিজেও বাঁচতে পারেনি।
এ বিষয়ে ধর্মপাশা থানার ওসি এনামুল হক বলেন, মধ্যরাতে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে আগুন লাগার এ ঘটনা ঘটেছে। একই পরিবারের ৬ জন নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তদন্তসাপেক্ষে আগুন লাগার কারণ জানা যাবে।
ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীন বলেন, খবর পেয়ে আমরা ভোরে রওনা দিয়ে সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছি। আগুন কীভাবে লেগেছে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আশপাশের ঘরে আগুন যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, অগ্নিকাণ্ডের সময় ভেতর থেকে দরজা জানালা বন্ধ ছিল।
ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করতে আলামত সংগ্রহ করার কথা জানিয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (ধর্মপাশা সার্কেল) আলী ফরিদ আহমেদ বলেন, আমরা ঘটনার খবর শুনে ঘটনাস্থলে এসে ঘরে মৃত দেহগুলো পুড়ানো অবস্থায় দেখতে পাই। ঘরের দরজায় তালা ঝুলানো ছিল। চাবি নিচে পড়ে ছিল। ঘরের বিভিন্ন আলামতসহ মরদেহের সুরতহাল শেষে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেন। পুলিশ সুপার বলেন, আনোয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে। সিআইডি ও সিবিআইয়ের ক্রাইম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে কারণ উদঘাটনেও কাজ করবে।