নেত্রকোণায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
ছবি : সংগৃহীত
নেত্রকোণায় পাহাড়ি ঢলের কারণে এখনও পানি বেড়েই চলেছে।মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সরেজমিনে ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী, শ্রীবরদী উপজেলায় গিয়ে দেখা যায়, ঢলের পানি কমতে শুরু করায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে দুর্ভোগ কমেনি মানুষের। জেলার ৫ উপজেলার দেড় লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। উজানের পানি বিভিন্ন নদ-নদী হয়ে বইছে ভাটির দিকে। বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছেন হাজারো মানুষ। তাদের খাবার ও বিশুদ্ধ পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে।
আশ্রয়কেন্দ্রে আসা লোকজন বলছেন, বন্যার পানিতে ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। হাজার হাজার হেক্টর জমির আমন ধান ডুবে গেছে।
এ দিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দেওয়া প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ময়মনসিংহ বিভাগের কংস, জিঞ্জিরাম, সোমেশ্বরী ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ-নদীগুলোর পানি বাড়ছে। ভোগাই নদের পানি স্থিতিশীল রয়েছে। শেরপুর জেলার ভোগাই নদ, নাকুয়াগাঁও এবং জামালপুর জেলার জিঞ্জিরাম নদী গোয়ালকান্দা পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের এক কর্মকর্তা বলেন, বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে নেত্রকোণায়। সোমেশ্বরী নদীর পানি কমলেও উব্দাখালী নদীর পানি বইছে বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে। বেড়েছে কংস নদীর পানিও। এতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, দুর্গাপুর, কলমাকান্দাসহ ৫ উপজেলার দেড়শতাধিক গ্রাম পানিবন্দি। এতে নেত্রকোণায় পানিবন্দি হয়ে আছেন কয়েক লাখ মানুষ। পানির তোড়ে ভেসে গেছে ফসলের মাঠ-মাছের ঘের।
নেত্রকোণার দায়িত্বরত সেনাবাহিনীর মেজর জিসানুল হায়দার জানান, পূর্বধলায় সেনাবহিনীর ত্রাণ সহায়ত অব্যাহত রয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় রান্না করা খাবার বিতরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ইমদাদুল হক জানান, বন্যার কারণে ২০২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে দুর্গাপুর ৬২, পূর্বধলা ১১, কলমাকান্দা ১০৯ ও সদরে ২০টি।
নেত্রকোণা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান বলেন, শুধু উপদাখালী ছাড়া বাকি সবগুলো নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উজানের ঢল উপদাখালী নদী দিয়ে নেমে যাচ্ছে বলে এই নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে।
জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস বলেন, পূর্বধলায় বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ৭-৮টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ৮০টি পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে এসে উঠেছেন। এ ছাড়া সব জায়গায় পানি কমতে শুরু করেছে। শিগগিরই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। কয়েকশ পরিবারকে এ পর্যন্ত ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রী মজুত রয়েছে।