আল-ফুরকান যা আল-কুরআনের অপর নাম। যার অর্থ হলো- সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী। নাজিল হয়েছিল রমজানের এক মহিমান্বিত রজনীতে, নাম তার লাইলাতুল কদর। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘রমজান তো সেই মাস, যে মাসে কুরআন নাজিল করা হয়েছে, যা মানবজাতির জন্য পুরোপুরি হিদায়াত এবং এমন দ্ব্যর্থহীন শিক্ষাসংবলিত, যা সত্য-সঠিক পথ দেখায় এবং হক-বাতিলের পার্থক্য সুস্পষ্ট করে দেয়।’ (সূরা বাকারাহ-১৮৫)
রমজান
রমজান আল্লাহর নৈকট্য ও পুণ্য লাভের সর্বোত্তম সময়। কেননা রমজান মাসে আল্লাহ রহমতের দুয়ার খুলে দেন এবং
মহান আল্লাহ বান্দার প্রতি দয়াশীল। রমজানে এই দয়ার পরিমাণ আরো বেশি বৃদ্ধি পায়। তিনি প্রতিটি আমলের প্রতিদান বৃদ্ধি করেন, বান্দার দোয়া কবুল করেন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। বিশেষত রমজানের এসব কল্যাণ লাভে বিশেষ তিনটি সময়ের কথা হাদিসে এসেছে।
নামাজ ও জাকাতের পর রোজা অবশ্যপালনীয় বা ফরজ ইবাদত হিসেবে বিবেচিত। ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ রোজা। মাহে রমজান ও রোজার মাসের গুরুত্বও মুমিনদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ মাসে পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছে। আগের অনেক আসমানি কিতাব রমজানে নাজিল হওয়ায় এ মাসের মর্যাদা সহজেই অনুমেয়।
পবিত্র রমজানকে হাদিসে ‘শাহরুল আজিম’ ‘শাহরুল মুবারাকাত’ বলা হয়েছে। এ মাসের সব মুহূর্ত, সব কাজ মহাপ্রভুর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে নিবেদন করাই মুমিন বান্দার একমাত্র কর্তব্য। এ মাসের শিক্ষণ-প্রশিক্ষণ, পরিশীলন ও অধ্যাত্মজাগরণে মানুষ প্রমাণ রাখে তার শ্রেষ্ঠত্ব ও মহান স্রষ্টার ‘প্রতিনিধিত্বে’র যোগ্যতা।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে পবিত্র রমজান মাসে এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো জানিয়েছে, রমজানে সৌদিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনা খুবই বিরল।
রহমত, নাজাত ও মাগফিরাতের বারতা নিয়ে পবিত্র মাহে রমজান আমাদের সামনে উপস্থিত হয়েছে। মহান প্রভু আমাদেরকে আরো একটি বরকতময় মাস উপভোগ করার সুযোগ করে দিয়েছেন। এ মাস এতটাই বরকতপূর্ণ যে, প্রতিটি আমলের বিনিময়স্বরূপ বান্দা পেয়ে যায় তার ৭০ গুণ বেশি প্রাপ্য। বন্ধ হয়ে যায় কবরবাসীর শাস্তি।
বিশ্ব নবী ও আখেরি বা শেষ নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পৃথিবীর বুকে পবিত্র কোরআনুল কারিম অধ্যয়ন, অনুশীলন ও প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব দিয়েই পাঠানো হয়েছিল।
রমজানের রোজা ইসলামের অন্যতম রোকন এবং ফরজ ইবাদত। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘হে ঈমানদাররা! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর; যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বনকারী হতে পারো।’ (সুরা বাকারা: ১৮৩)
পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের পর নফল সালাতের মধ্যে সর্বোত্তম মর্যাদাপূর্ণ এবং বরকতময় সালাত হলো সালাতুত তাহাজ্জুদ। মাহে রমজানে সালাতুত তাহাজ্জুদের সাওয়াব এবং ফজিলত অন্যান্য মাসের নফল সালাতের চেয়ে বহুগুণ বেশি এবং মর্যাদাপূর্ণ।