বন্যাকবলিত সিলেটে ৩৭ হাজারের বেশি মানুষ এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্র অনুযায়ী, সিলেট জেলায় এখন ৪৩৯টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে যেখানে এখনো ৩৭ হাজার ১৭৬ জন মানুষ অবস্থান করছেন।
সিলেটে
সিলেটে ভয়াবহ বন্যায় ৪০ হাজারের বেশি কাঁচা বাড়িঘর আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
সিলেটে চলমান বন্যায় প্রাণিসম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বন্যার পানিতে সিলেট জেলায় হাঁস-মুরগিসহ তিন হাজারের বেশি গবাদিপশু মারা গেছে। আর ডুবে গেছে গবাদিপশুর ৭১০টি খামার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ হযরত শাহজালাল (র:) ও হযরত শাহ পরান (র:) এর মাজার জিয়ারত করেন।শেখ হাসিনা সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও তৎসংলগ্ন এলাকার বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে আজ সকালে এখানে পৌঁছে অপরাহ্নে প্রথমে বিভাগীয় শহরে হযরত শাহজালাল (র:) এর মাজার জিয়ারত করেন।
বন্যা পরিস্থিতিতে পানিতে ডুবে, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে, বজ্রপাত ও টিলাধসে এক সপ্তাহে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে কমপক্ষে ২০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। প্রকৃতপক্ষে এই সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে। তবে, দুই জেলায় মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় সব তথ্য পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করতে বেরিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার সকাল ৮টায় তেজগাঁওয়ের পুরাতন বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারযোগে তিনি এই তিন জেলা পরিদর্শনে রওনা হন।
সিলেটে সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি এখনও বাড়ছে। তবে, বৃষ্টি কমায় কিছু কিছু এলাকায় পানি কমছে।দুর্গত এলাকার মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছে। বিদ্যুৎ ও মোবাইল ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।
সিলেট জেলার জৈন্তাপুরে টিলা ধসে ঘুমন্ত অবস্থায় শিশুসহ একই পরিবারের ৪ জনের প্রাণহানি হয়েছে।সোমবার ভোরে উপজেলার চিকনাগুল ইউনিয়নের সাতজনি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
থেমে থেমে পানি বেড়ে সিলেটের বেশির ভাগ এলাকাই এখন ভাসছে বন্যার পানিতে। উজানে বৃষ্টি না থামলে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হবে এমনটা আশঙ্কা করা হচ্ছে খোদ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে। জেলা প্রশাসনের হিসেবে সিলেটের ছয়টি উপজেলা বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানি উঠে গেছে নগরের বেশির ভাগ এলাকায়। পানির তোরে ভেঙে যাচ্ছে নদীরক্ষা বাঁধ।
উজানের ঢলে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সুরমা-কুশিয়ারাসহ সিলেটের সব নদ-নদীতে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে।