বিজেপি নেতাদের উপর হামলা, তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার

বিজেপি নেতাদের উপর হামলা, তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার

জেপি নড্ডা ও অমিত শাহ। সঙ্গে অমিতের সেই টুইট।

বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সকালে ডায়মন্ড হারবারে যাওয়ার পথে ভারতের দক্ষিণ ২৪ পরগনার শিরাকোল-সহ বেশ কিছু এলাকায় নড্ডা, কৈলাস বিজয়বর্গীয়দের কনভয়ে ইট নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অভিযোগ, তৃণমূলের পক্ষ থেকে পরিকল্পনা করে এই হামলা করা হয়েছে।

যদিও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ একাধিক মন্ত্রী ও নেতা বলেছেন, শিরাকোলে তেমন কিছু ঘটেনি। মমতা বলেন, ‘‘গতকাল প্রচার পাননি, গুন্ডা নিয়ে জনসংযোগে গেছিলেন? কোথাও কোনও অশান্তি হয়নি, শুধু মিথ্যে বলছে বিজেপি।’ খবর আনন্দবাজার।

এঘটনায় বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডার গাড়ির উপর হামলার ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্যের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং রাজ্যপালের কাছে ওই ঘটনার পৃথক দু’টি তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়। ১২ ঘণ্টার মধ্যে ওই প্রতিবেদন কেন্দ্রর কাছে জমা দিতে হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি রিপোর্টে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ‘কেন নড্ডার নিরাপত্তায় এই গাফিলতি’?

ওই ঘটনার পরই কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহর সঙ্গে কথা হয় নড্ডার। তার পর বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব একের পর এক টুইটে এই ঘটনার প্রতি তাঁদের কড়া মনোভাব ব্যক্ত করেন। টুইটে অমিত শাহ লেখেন, ‘আজ বাংলায় বিজেপি-র সভাপতি জেপি নড্ডাজির উপর আক্রমণ খুব নিন্দনীয়। কেন্দ্রীয় সরকার এই ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। এই হিংসার জন্য বাংলার সরকারকে রাজ্যের শান্তিকামী মানুষদের জবাব দিতে হবে’। 

এর কিছু সময় পরেই সরাসরি রাজ্য সরকারকে খোঁচা দিয়ে তাঁর টুইট, ‘তৃণমূল শাসনের অধীনে বাংলা অত্যাচার, অরাজকতা ও অন্ধকারের যুগে পরিণত হয়েছে। টিএমসি-র অধীনে বর্তমানে বাংলায় যে ভাবে রাজনৈতিক হিংসা প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে স্বীকৃতি পাচ্ছে এবং চরম আকার নিচ্ছে তা, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী সব মানুষের কাছেই দুঃখজনক ও উদ্বেগজনক’। এই টুইটের পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে ঘটনার রিপোর্ট তলব নিছক সময়ের অপেক্ষা ছিল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

নড্ডার সঙ্গে কথা বলার পর কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ টুইট করেন, ‘কনভয়ে হামলার পরে নড্ডাজির সঙ্গে আমি ফোনে কথা বলেছি এবং তার কাছ থেকে তথ্য পেয়েছি। এই ঘটনা আসলে পশ্চিমবঙ্গে ক্রমহ্রাসমান আইনশৃঙ্খলার প্রতিচ্ছবি’। রাজনাথের পরের টুইট, ‘গণতান্ত্রিক দেশে রাজনৈতিক নেতাদের এ ভাবে লক্ষ্য করা খুব চিন্তার বিষয়। এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া উচিত। কে বা কারা এই ঘটনা ঘটাল, তা খুঁজে বার করতে হবে’।

নড্ডার কনভয়ে যে হামলা হতে পারে, তা আগাম জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এর পর কনভয়ে ইট নিক্ষেপের ফলে কেন্দ্রের কাছে যে ‘স্পষ্ট বার্তা’ গেছে, তা মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।