আবার নেশায় ডুবছেন নোবেল, দাবি সালসাবিলের

আবার নেশায় ডুবছেন নোবেল, দাবি সালসাবিলের

ছবি: সংগৃহীত

বিতর্কের সীমা ছাড়িয়েছিলেন সারেগামাপা খ্যাত গায়ক মাইনুল আহসান নোবেল। সবশেষে সংশোধনের জন্য রিহ্যাবে দেওয়া হয় তাকে। মাস তিনেক সেখানে থেকে ফিরেছেন। এখন অনেকটা অনুতপ্ত ও শান্ত।

সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট হয়েছিল তা। নিজের ভুল স্বীকার করে কাজে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। নোবেলের এমন স্বীকারোক্তিতে ক্ষমার ইরেজারে ক্ষোভ মুছে ফেলেন সংগীতপ্রেমীরা। ফের আশাবাদী হন তাকে নিয়ে। 

নোবেলের প্রাক্তন স্ত্রী সালসাবিল মাহমুদও তার প্রতি শুভকামনা রেখেছিলেন। তবে তার গতকাল রোববারের ফেসবুক স্ট্যাটাস বলছে ভিন্ন কথা। নিজের ফেসবুকে সালসাবিল লেখেন, ‘ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে। খুব দ্রুত বিচার না করে একটু সময় দিন, সত্যটা সবার সামনে চলে আসবে। যে যেটাতে অভ্যস্ত, সেটাই করতে থাকবে। ক্যামেরার সামনের নাটকটি ক্ষণস্থায়ী। সত্য বের হয়ে আসা শুধু ক্ষণিকের অপেক্ষা।’

কাকে নিয়ে এমন স্ট্যাটাস— মন্তব্যের ঘরে জানতে জান নেটিজেনরা। এক মন্তব্যের জবাবে সালসাবিল লেখেন, ‘নেশাখোর। নেটাগরিকদের কেউ কেউ নোবেলের নাম লেখেন। বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করা হয় সালসাবিলের সঙ্গে। তিনি জানান স্ট্যাটাসটি নোবেলকে নিয়ে। সেইসঙ্গে দাবি করেন ফের নেশায় ডুবছেন নোবেল।’

ঢাকা মেইলকে সালসাবিল বলেন, ‘সে (নোবেল) রিহ্যাবে ছিল অনেকদিন। ফেরার পর ২-৩ মাসের মতো ভালো ছিল। এখন আবার মাদক নেওয়া শুরু করেছে।’

নোবেলের ফের মাদক নেওয়ার বিষয়টি কীভাবে জানলেন— জবাবে সালসাবিল বলেন, ‘রিহ্যাব থেকে ফেরার পরে থেকেই ওর সাথে আমার যোগাযোগ ছিল। নিয়মিত কথা হতো। ২-৩ মাসের মতো ভালো ছিল। মাদক থেকে দূরে ছিল। কিন্তু সেপ্টেম্বর থেকে আবার শুরু করেছে। সে নিজেই আমাকে বলেছে। তার আচরণ কিছুটা ওলটপালট হচ্ছিল। বিষয়টি খেয়াল করে জানতে চাইলে সে বলে, হ্যাঁ নিচ্ছি তাতে তোমার কী।’

এদিকে সম্প্রতি একটি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নোবেল দাবি করেন ভুল মানুষকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। তবে সালসাবিলের কথায়, ‘সে ড্রাগস নিলে আমি যদি বাধা দেই তাহলে তো সে আমাকে ভুল মানুষ ভাববেই। একজন নেশাখোরের বিপক্ষে যারা থাকেন তার মতে তারা সবাই ভুল মানুষ।’

আরও যোগ করেন, ‘এখন মানুষ চাচ্ছে সে আবার গানে ফিরুক। এই সুযোগটা তো আমার জন্য পাচ্ছে। কেননা এর আগে যখন বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করছিল তখন বলেছিলাম ও ভালো মানুষ কিন্তু নেশার কারণে এরকম হয়েছে। সে রিহ্যাব থেকে ফিরে যতদিন ভালো ছিল ততদিন ঠিক ছিল। বলেছিল, আমার স্ত্রীর কাছে ক্ষমা চাই। আমাকে বলেছে, মাফ করে দাও। আমি বলেছি, তুমি যা করেছ আমি যদি করতাম তবে কি আমাকে মাফ করতে। সে বলেছে, না, করতাম না। তখন বলেছি, তাহলে তুমি কীভাবে চাও যে আমি মাফ করি। তার তখন উত্তর ছিল, মাফ করো না কিন্তু আমার সাথে কথা বলো। নাহলে আমি আবার এসবে (মাদকে) জড়িয়ে যাব। তখন বললাম, ঠিক আছে দেখো তুমি এসব ছেড়ে কতদিন থাকতে পারো।’

কিছুদিন যেতেই নোবেলের উচ্ছৃঙ্খল আচরণ শুরু হয় উল্লেখ করে সালসাবিল বলেন, ‘কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করলাম ওর আচরণ আবার পাল্টে গেছে। বকাবকি করছে। আগে গায়ে হাত তুলত। এখন সে সুযোগটা নেই। কিন্তু মুখে বলে, মারবে। আমি তখন বললাম, তোমার যা খুশি করো।’

নোবেলের চক্ষুশূল হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘আসলে রিহ্যাবে পাঠানোর কারণে সে তার পরিবার ও আমাকে চক্ষুশূল মনে করে। বলে, তোরা ষড়যন্ত্র করে আমাকে রিহ্যাবে পাঠিয়েছিস। এখন যেহেতু আবার সে মাদক নিচ্ছে তাই তার লাইফের সবচেয়ে বড় ভিলেন আমি। তার আশঙ্কা আমরা যদি আবার তাকে রিহ্যাবে পাঠাই। এখনও পুরোপুরি নেশায় ঢোকেনি সে। কিন্তু শুরু করেছে। আস্তে আস্তে ডুবছে। তার যুক্তি, টুকটাক নেশা করি তো কি হয়েছে। আমার তো গান করতে টুকটাক করতেই হবে। আমি বলেছি, তুমি একটু একটু করে আবার আগের মতো ঢুকে যাবে। এসব বললেই ওর কাছে আমি খারাপ হয়ে যাই।’

রিহ্যাব থেকে ফেরার পর নোবেলের সঙ্গে কি শুধু কথা-ই হয়েছে নাকি দেখাও হয়েছে সামনাসামনি— জানতে চাইলে বলেন, ‘এ ব্যাপারে বলতে চাই না। তবে নিয়মিত ফোনে কথা হতো।’

এদিকে গত বছর ৪ মে সালসাবিল সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলেন, তিনি নোবেলকে ডিভোর্স দিয়েছেন। বিষয়টি তুললে তিনি বলেন, ‘আমি নোবেলকে ডিভোর্স নোটিশ পাঠিয়েছিলাম কিন্তু সে সাইন করেনি। সাইন না করলে নাকি বিচ্ছেদ হয় না। আমি নোটিশ পাঠানোর পর নোবেলের হয়ে কেউ সেটা গ্রহণ করেনি এমনকি ওদের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানও না। সে কারণে ওটা ফিরে আসে। এরপর আমি কোনো পদক্ষেপ নেইনি। ফলে আইনত আমরা এখনও স্বামী-স্ত্রী। কিন্তু আলাদা থাকছি।’

এই মুহূর্তে নোবেলকে নিজে সালসাবিলের অবস্থান কী, নোবেল যদি ফিরতে চায় গ্রহণ করবেন— জানতে চাইলে বলেন, ‘তাকে সম্পূর্ণ নেশা ছেড়ে আসতে হবে। একটু আধটু শখের বশেও করা যাবে না। রিহ্যাব থেকে ফেরার পর মনে হয়েছিল তা সম্ভব। কিন্তু এখন আবার শুরু করেছে। ফলে আমি এই ব্যাপারটা নিয়ে দ্বিধায় আছি।’

এদিকে বিষয়টি নিয়ে নোবেলের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু একাধিক বা ফোন করলেও রিসিভ করেননি গায়ক। ক্ষুদেবার্তা পাঠালেও দেননি সাড়া।