ইবি শিক্ষার্থীর ধর্ম অবমাননা : প্রশাসনিক তদন্ত কমিটি, বিভাগীয় সভাপতির পদত্যাগ

ইবি শিক্ষার্থীর ধর্ম অবমাননা : প্রশাসনিক তদন্ত কমিটি, বিভাগীয় সভাপতির পদত্যাগ

ফাইল ফটো

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ উঠা ইসালামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে তদন্ত কমটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ওই শিক্ষার্থীর নাম সাইফুল্লাহ  আল হাদী। তিনি আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম আব্দুল লতিফ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,  সাইফুল্লাহ   আল হাদী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে ব্যঙ্গ করে সম্প্রতি ফ্রান্সের সরকারী গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিতর্কিত পোস্টের পক্ষে অবস্থান নিয়ে একটি অশোভনীয় মন্তব্য করেছেন বলে বিভাগীয় একাডেমিক কমিটি লিখিত ভাবে জানিয়েছেন। বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উপাত্ত উৎঘাটনপূর্বক প্রতিবেদনের জন্য উপাচার্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।

কমিটিতে কলা অনুষদের ডিনকে আহবায়ক ও আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সভাপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টাকে সদস্য করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে গত শনিবার ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত হয়ে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছিল বিভাগীয় একাডেমিক কমিটি।

জানা গেছে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত শিক্ষার্থী তাঁর ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে ফ্রান্সে মহানবীকে ব্যাঙ্গ করায় বাংলাদেশি মুসলমানদের ফরাসি পণ্য বর্জনের দাবির বিরোধীতা করেন ও পণ্য বর্জন না করার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। এসময় মক্কা ও জমজম কূপকে 'তথাকথিত পবিত্র মক্কা ও 'তথাকথিত পবিত্র জমজম কূপ' বলে উল্লেখ করেন। স্ট্যাটাস দেওয়ার পরপরই তা ভাইরাল হয় ও প্রতিবাদের ঝড় উঠে৷ পরে সমালোচনা চলতে থাকলে সন্ধ্যায় তিনি তাঁর টাইমলাইন থেকে স্ট্যাটাসটি সরিয়ে নেন।

তাঁর বিরুদ্ধে এর আগেও মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বিভিন্ন পোস্ট ও বিরূপ মন্তব্য করার অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে। সহপাঠীরা জানান, হাদী মাঝে মধ্যেই ইসলামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করতেন। যা নিয়ে তাঁর সাথে তর্ক হতো। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ধর্ম অবমাননার অভিযোগে আলিমে (উচ্চ মাধ্যমিক) অধ্যয়নকালে মাদ্রাসা থেকেও বহিস্কার হয়েছিলেন হাদী।

এ দিকে মঙ্গলবার বিভাগীয় সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোস্তাক মোহাম্মদ আব্দুল মোক্তাদির মুনাওয়ার আলী পদত্যাগ করেছেন৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম আব্দুল লতিফ পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পদত্যাগপত্রে ড. মোস্তাক ব্যাক্তিগত ও পারিবারিক কারণ উল্লেখ করেছেন। বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির সুপারিশের দুদিন পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তদন্ত কমিটির গঠনের পরপরই বিভাগের সভাপতি পদ থেকে তাঁর পদত্যাগ নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে।