৩৩ বছর পর ১০ শেরপার কে-২ জয়

৩৩ বছর পর ১০ শেরপার কে-২ জয়

ছবি : সংগৃহীত

৩৩ বছরের অধরা স্বপ্ন অবশেষে পূর্ণ হলো। শীতের সময় বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শৃঙ্গ গডউইন অস্টিন বা কে-২ জয় করা হলো। এই শৃঙ্গ জয়ের স্বপ্ন নিয়ে সেই ১৯৮৭-৮৮ সাল থেকে অভিযান শুরু করেছিলেন দেশ-বিদেশের অভিযাত্রীরা। কিন্তু একাধিকবার অভিযান করেও বারবার ব্যর্থ হয়ে ফিরতে হয়েছিল অভিযাত্রীদের। অবশেষে শনিবার বিকেল ৪টা ৫৮ মিনিটে এলো সুখবর। প্রথমে নেপালের নির্মল পূরজা এবং তারপরে একে একে বাকি নয় শেরপা সফলভাবে কে-২ শৃঙ্গ জয় করলেন। উল্লেখ্য, এই প্রথম শীতকালে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কে-২ জয় করল পর্বতারোহীরা। পর্বতটি পাকিস্তানে অবস্থিত।

অভিযানের নিরিখে বিশ্বের কঠিনতম পর্বতশৃঙ্গ হিসেবে পরিচিত কে-২। তার ওপর শীতকালে এই শৃঙ্গে অভিযান করা আরো কঠিন। এই অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরেই অভিযাত্রীরা শীতের সময় এই শৃঙ্গ জয়ের লক্ষ্যে অভিযান করেছেন। কিন্তু, বারবার ব্যর্থ হয়েছেন। এবার মোট ৪৮ জন অভিযাত্রী শীতকালীন কে-২ অভিযানে অংশ নিয়েছেন। যার মধ্যে মৃত্যু ও আঘাতের কারণে তিনজন ইতিমধ্যে বাদ পড়েছেন। এরই মধ্যে সবচেয়ে খারাপ খবর আসে গত শনিবার সকালে। কে-২ অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন স্পেনের অভিযাত্রী সের্গি মিঙ্গোতে। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন আগেই। শনিবার ক্যাম্প-১ থেকে অ্যাডভান্স বেস ক্যাম্পে নামার সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। এক হাজার দিনের মধ্যে অক্সিজেন সিলিন্ডার ছাড়া বিশ্বের সবকটি আট হাজার মিটারের শৃঙ্গ জয়ের লক্ষ্যে নেমেছিলেন তিনি। কিন্তু, মাঝপথেই খারাপ খবর এল কে-২ থেকে। নেপালের এক অভিযাত্রী দলের অন্যতম সদস্য (লিডার হিসেবে বেসক্যাম্পে ছিলেন) ছাং দাওয়া শেরপা জানিয়েছেন, সের্গির মৃত্যু খুবই খারাপ ঘটনা। তার মতো পর্বতারোহীর চলে যাওয়া এক অপূরণীয় ক্ষতি।

ভৌগোলিকভাবে পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে অবস্থিত কে-২। ফলে এখানে বিশ্বের অন্যান্য দেশের পর্বতারোহীরা যাওয়ার অনুমতি পেলেও, ভারতীয়দের ওই শৃঙ্গ জয়ের সুযোগ নেই। পাকিস্তানের পর্বতাভিযান সংস্থা ব্লু স্কাই ট্রেকস অ্যান্ড ট্যুরসের সিইও গুলাম মোহম্মদ জানান, সের্গির মৃত্যু খুবই দুঃখজনক। শনিবার ডাক্তারদের একটি দল বেসক্যাম্প থেকে রওনা দিয়েছিল তাকে নিরাপদে নামিয়ে আনার জন্য। কিন্তু, শেষ রক্ষা হয়নি। এই ঘটনা বাকি পর্বতারোহীদের উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছিল। এরই মধ্যে নেপালের দলটি সফলভাবে অভিযান শেষ করেছে। ফলে দীর্ঘদিনের অধরা স্বপ্ন পূরণ হলো।

অ্যালপাইন ক্লাব অব পাকিস্তানের সম্পাদক কারার হায়দারি বলেন, ২০০২-২০০৩ সালে ডেনিস উরুবকো এবং মার্সিন কাজকান শীতের সময় কে-২ শৃঙ্গের ৭৭৫০ মিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে সফল হয়েছিল। যা এত দিন সর্বাধিক ছিল। এবার সেই রেকর্ড ভেঙে গেল। নেপালের দলটি সফলভাবে অভিযান শেষ করতে পারায় সকলেই খুশি।

সূত্র : বর্তমান