নির্বাচন কমিশণের নতুন আইনে ভোটার উৎসাহিত করার রূপরেখা নেই, ভোটার কি কেন্দ্রে যেতে বাধ্য?

নির্বাচন কমিশণের নতুন আইনে ভোটার উৎসাহিত করার রূপরেখা নেই, ভোটার কি কেন্দ্রে যেতে বাধ্য?

নির্বাচন কমিশন

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন অথচ এই স্বাধীন দেশে ১২টি (১৯৭৩-২০২৪) জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্টিত হলেও বিতর্ক আজো পিছু ছাড়েনি। ১২ টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে জনগণের বিচারের মানদণ্ডে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ নির্বাচন, নিরপেক্ষ নির্বাচন ও ভোটার বিহীন নির্বাচন এ তিন ভাগে ভাগ করা যায়। তাহলেই নতুন প্রজন্ম অর্থাৎ নতুন ভোটাররা বুঝতে পারবেন তাদের পূর্বসূরীরা বিগত সময়ে নিজেরা কতটা নিরপেক্ষ ছিলেন? আমার ব্যক্তিগত বিশ্লেষণে নীচে অতীতের সকল নির্বাচনের চিত্রটি তোলে ধরা হলো।

সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ নির্বাচন: ১৯৯১, ১৯৯৬ (৭ম), ২০০১ ও ২০০৮

নিরপেক্ষ নির্বাচন: ১৯৭৩, ১৯৭৯

ভোটার বিহীন নির্বাচন: ১৯৮৬, ১৯৮৮, ১৯৯৬ (৬ষ্ঠ), ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪

প্রদত্ত চিত্র বিশ্লেষণ করলেই বুঝা যায় স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও আমরা জাতি হিসাবে রাজনীতির মানুষদের কাছ থেকে সঠিক নেতা নির্বাচনের স্থায়ী কোন সমাধান আবিষ্কার করতে পারিনি। এ কথা সত্য যে নির্বাচন কমিশণও সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন থাকা সত্বেও রাজনীতিবিদদের তল্পিবাহক বলে যুগে যুগে প্রমানিত হয়েছে। এদিকে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বর্তমান নির্বাচন কমিশণের নিকট আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশী। কিন্তু বিভিন্ন  মিডিয়ার প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করলে আশাহত ব্যতীত নতুন কিছু পাবো বলে মনে হচ্ছে না। কারন নিক এর নতুন আইন বিশ্লেষন করলে মনে হয় "তথাকথিত শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানটি মূলতঃ একটা নির্বাচন গবেষণা ইন্সস্টিটিউট?" নিক কালে কালে এসে পূর্বসূরীদের ভুলগুলো ফেলে দিয়ে নতুন কিছু সংযোজন করেছেন বা করছেন অর্থাৎ নির্বাচন কমিশণ নিজেরাও নিশ্চিত নন নতুন আইন নিরপেক্ষ নির্বাচনে কতটা কার্যকর হবে। সার্বিক বিষয়াদি বিশ্লেষণ করে এক নজরে দেখে নেয়া যাক আগামী নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশণের প্রস্তাবিত নতুন আইনগুলো কতটা ফলপ্রসু হতে পারে;

১. জোটের প্রার্থী হলেও প্রার্থী যে দলের ঠিক ঐ দলের প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করতে হবে।

২. ইভিএম পদ্ধতি বিলোপ অর্থাৎ ব্যালটে ভোট হবে

৩. এক বা একাধিক কেন্দ্রে অনিয়ম হলে পুরো সংসদীয় আসনের ভোট বাতিল হবে

৪. হলফনামায় প্রার্থী মিথ্যা তথ্য দিলে প্রার্থিতা বাতিল হবে বা এমপি নির্বাচিত হওয়ার পরও এমপি পদ বাতিল হবে।

৫. বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা রোধে একক প্রার্থী হলে অর্থাৎ কোন আসনে একজনের বেশী প্রার্থী না থাকলে শুধু মাত্র ঐ আসনের ব্যালটে না ভোটের বিধান থাকবে।

ফলে নির্বাচনের পূর্বে কাউকে নির্বাচিত ঘোষণা করার সুযোগ নেই।

প্রস্তাবিত বিধানগুলো মন্ত্রী পরিষদে অনুমোদিত হলেই অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধানে অন্তর্ভূক্ত হবে এবং নতুন আইনে আসন্ন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশণের জটিল সমীকরণ আমার মতো মূর্খ বা অর্বাচীনের পক্ষে বুঝা হয়তো অসম্ভব। আশায় বুক বেঁধে আছি অভিজ্ঞ ও রাজনীতি সংশ্লিষ্ট বন্ধুরা এ বিষয়ে আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাবেন। অর্বাচীনের মতামত না হয় পরেই দিচ্ছি।

 

মীর্জা বাহাদুর

কলামিষ্ট ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক