নারীদের বাদ দিয়ে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়-শিল্পমন্ত্রী

নারীদের বাদ দিয়ে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়-শিল্পমন্ত্রী

ছবি:সংগৃহিত

নারী উন্নয়নে সরকারের যুগোপযোগী নীতি ও কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে দেশে ব্যবসা খাতে শিক্ষিত নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ফাউন্ডেশন পরিচালিত ‘ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাতে নারী উদ্যোক্তা : বাংলাদেশ প্রেক্ষিত ২০১৭’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফলে এ তথ্য উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারের ব্যবসাবান্ধব নীতির কারণে ২০০৯ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া নারীরা শিল্পায়ন ও ব্যবসায় অধিকহারে সম্পৃক্ত হচ্ছেন। একই সময়ে একজন নারী উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার পথে সামাজিক ও পারিবারিক সমর্থনও আগের চেয়ে অনেক জোরদার হয়েছে। ব্যবসায়িক ঋণ গ্রহণে নারী উদ্যোক্তারা বিশেষ সহায়তা পাচ্ছেন এবং তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারে তারা অনেক এগিয়ে গেছেন। এসএমই ফাউন্ডেশন আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে  শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন প্রধান অতিথি ছিলেন।

এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন কে এম হাবিব উল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন বিআইডিএসর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সফিকুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে জয়িতা ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরোজা খান, এসএমএই ফাউন্ডেশনের পরিচালক ও নারী উদ্যোক্তা ইসমত জেরিন খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রাজিয়া সুলতানা, বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই ডিভিশনের কর্মকর্তা লীলা রশিদ, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের কর্মকর্তা মাসুমা বেগম, পাট পণ্য রফতানিকারক কোহিনুর ইয়াসমিন, সাংবাদিক সালাম জোবায়ের, ইন্টেরিয়র ডিজাইনার গুলশান নাসরিন চৌধুরী, রূপান্তরিত নারী (তৃতীয় লিঙ্গ) আফরোজা বেগম মৌরি মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন।

গবেষণার ফলাফলে জানানো হয়, ২০০৯ সালে গ্র্যাজুয়েট পর্যায়ে শিক্ষিত ২০ শতাংশ নারী ব্যবসায় সম্পৃক্ত ছিলেন। ২০১৭ সালে তা বেড়ে ২৬ শতাংশে পৌছেছে। এছাড়া ২০০৯ সালে ৪২ শতাংশ নারীকে পারিবারিকভাবে ব্যবসায় সম্পৃক্ত হতে নিরুৎসাহিত করা হতো। ২০১৭ সালে তা ৪ শতাংশে নেমে এসেছে। ২০০৯ সালে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে ২৮ শতাংশ নারীকে সামাজিক প্রতিবন্ধকতার মোকাবিলা করতে হয়েছে। ২০১৭ সালে এটি ১৪ শতাংশে নেমে এসেছে। ২০০৯ সালে ১০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা ট্যাক্স দিতেন, যা ২০১৭ সালে ৫৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। পাশাপাশি ২০০৯ সালে ১০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা ব্যবসার জন্য কম্পিউটার ব্যবহার করতেন, যা ২০১৭ সালের বেড়ে ৩৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এ সবই দেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক বলে গবেষণার ফলাফলে পাওয়া গেছে।

অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী এবং তাদের বাদ দিয়ে টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ বিবেচনায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী কার্যকর গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছেন। নারী ক্ষমতায়নের লক্ষ্য অর্জনে সরকার অগ্রাধিকারভিত্তিতে নারী উদ্যোক্তাদের সমস্যার সমাধান করছে। নারীদের নিয়ে এসএমই ফাউন্ডেশনের বড় ধরনের গবেষণা চালালে শিল্প মন্ত্রণালয় এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।