মুখের দুর্গন্ধেও সচেতন হন

মুখের দুর্গন্ধেও সচেতন হন

প্রতীকী ছবি

নিঃশব্দ ঘাতকের মত ক্রমেই বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা। এই নিরব ঘাতক রোগে আক্রান্ত থেকে হচ্ছে মৃত্যুও। আর এর পেছনে সম্পূর্ণ ভাবে দায়ী আমাদের জীবনযাত্রা। দিনের পর দিন বেড়ে চলা মানসিক চাপ, অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড খাওয়া, শরীরচর্চা একদমই না করা এসবই কিন্তু বাড়িয়ে দিচ্ছে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি। 

যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের কিন্তু কোভিড-১৯ আক্রান্ত হবার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। তবে গত দু বছর কোভিডের কারণেই ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে অনেকটাই। একটানা বাড়ি বসে কাজ ও মানসিক চাপই এর প্রধান কারণ।

চিকিৎসকদের মতে, রক্তে যদি শর্করার পরিমাণ বেশি হয় তাহলে মুখের আশপাশে বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। ডায়াবেটিস এমন একটি অসুখ যা শরীরের অন্যান্য সব অঙ্গকে প্রভাবিত করে। আর সেখান থেকে বাদ যায় না মুখও। ডায়াবেটিস থাকলেই আমরা কিডনি, স্নায়ু, হার্ট ইত্যাদি পরীক্ষা করানোর কথা বলি কিন্তু মুখের এই লক্ষণগুলি অনেকেই উপেক্ষা করে যাই। যাদের ডায়াবিটিসের সমস্যা রয়েছে তাদের কিন্তু দ্রুত মুখেও সংক্রমণ ছড়ায়। যে কারণে মুখ এবং দাতের পরীক্ষা করানোও আবশ্যক।

শ্বাসকষ্টের জন্য মুখগহ্বরের যে পরীক্ষা করা হয় তাকে হ্যালিটোসিস বলে। যদি আপনি দেখেন যে রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি, শ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছে এবং সেই সঙ্গে দাঁত বা মাড়িতে কোনও সমক্রমণ হচ্ছে তাহলে কিন্তু দন্ত চিকিৎসকের কাছে যান। 

ডায়াবেটিক কেটোঅ্যাসিডোসিসের ফলে একটি তীব্র কিটোন তৈরি হয় মুখের মধ্যে। যে কারণে তখন নিঃশ্বাস থেকে কিংবা মুখ থেকে বাজে গন্ধ বেরোয়। যাদের ব্লাডসুগার অনেক বেশি তাদের কিন্তু নিয়মিত এই পরীক্ষা করানো প্রয়োজন। কিটোন আছে কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য ডায়াবেটিস রোগীর প্রস্রাবও পরীক্ষা করা হয়। যদি হ্যালিটোসিস পরীক্ষায় দেখা যায় যে, রোগীর মধ্যে কিটোনের পরিমাণ বেশি তাহলে কিন্তু তা রীতিমতো উদ্বেগের।

ডায়াবেটিস হলে সঙ্গে সঙ্গেই যে রোগ লক্ষণ প্রকাশ পাবে এমন নয়। বরং যখন ধরা পড়ে তখন অনেকটা দেরি হয়ে যায়। ডায়াবেটিস বাড়লে কিডনি, চোখ, স্নায়ুর উপর চাপ পড়তে শুরু করে। যা আপাতদৃষ্টিতে বোঝা যায় না। অনেক সময় ক্ষত হলেও তা সারতে সময় লাগে। এমনকি এরকমও পরিস্থিতি এসেছে যে পা কেটে বাদ দিতে হয়েছে। তাই সময়মতো রোগ নির্ণয় ভীষণ জরুরি। সেই সঙ্গে বছরে একবার ব্লাডসুগার পরীক্ষা করানো আবশ্যক। এছাড়াও লাইফস্টাইল, খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনলে আগেভাগেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় ডায়াবেটিস।