অজস্র না পাওয়ার বেদনা তাঁর ভেতর পুড়িয়েছে!

অজস্র না পাওয়ার বেদনা তাঁর ভেতর পুড়িয়েছে!

ইফতেখায়রুল ইসলাম

ভদ্রলোক নিজের জীবন নিজে নিয়ে নিলেন! অজস্র না পাওয়ার বেদনা তাঁর ভেতর পুড়িয়েছে! এই করোনাকালে ঠিকমত সামাজিক আয়োজনে অংশ নিতে না পারা, আত্মীয়-স্বজনকে দেখতে না পারা, কাউকে পাশে না পাওয়া এই বিষয়গুলো মারাত্মক মানসিক চাপ সৃষ্টি করছে। এর মাঝে অসুস্থ কেউ যদি নিজের পাশে কাউকেই না পান, সেটি তার অবসাদকে তীব্রতর করে দেয়। এ সময়ে মানসিক স্বাস্থ্য প্রকৃত অর্থেই ঝুঁকিতে রয়েছে। ভদ্রলোককে আমার যথেষ্ট সচেতন মনে হয়েছে! কেন কি হলো সেটি নিয়ে বলার প্রয়াস নিতে চাচ্ছি না!

ঘটনা পরবর্তী সময়ে অনেককেই লিখতে দেখলাম, এই পৃথিবীতে আসলে কেউ কারো না! আমার কাছের বন্ধুজনও এমনটি লিখে যাচ্ছেন! আপনি বিশ্বাস করেই বলছেন তো? নিজ সন্তান না হয়েও অন্যের মায়ের জন্য জীবন দিয়ে কাজ করছে এমন মানুষকে আমি চিনি! এমন পরিবারও কম নয় যেখানে অসুস্থ বাবাকে দাঁড়ি কামিয়ে দেয়া, গোসল করিয়ে দেয়া লোকের অভাব নেই। এমনকি অসুস্থ বিশেষ আচরণের বড় বোনকে ছোটভাই গোসল করিয়ে খাইয়ে দিচ্ছে, নিয়ম করে সময় দিচ্ছে এরকম চিত্রও আছে। অসুস্থ মাকে তিনবেলা সময় ভাগ করে সন্তানেরা দিনের পর দিন সেবা করছে এমন পরিবারও আছে। খুব বেশি কষ্ট করা লাগবে না হাসপাতালে যান, দেখবেন কোনো অভিযোগ ছাড়া দিনের পর দিন সন্তান নিজ বাবা-মায়ের সেবা করে যাচ্ছে।

‘দিনশেষে সবাই একা’ এটি যদি আপনার হৃদয়ের একাকীত্ব হয়ে থাকে সেটি ভিন্ন জিনিস। কিন্তু এত অগণিত মানুষের একে অপরের উপর নির্ভরশীলতা হয়ে বেঁচে থাকাকে একটি বিশেষ ঘটনার উপর ভিত্তি করে যদি বলে বসেন স্ত্রী, সন্তান, ভাইবোন কেউই আসলে আপন নয়। তাহলে আমাকেই বলতেই হবে, প্রকৃত ভালবাসার সন্ধান আপনি অথবা আপনারা হয়তো পাননি! 

সবকিছুর পরে আমরা এই সম্পর্কগুলো নিয়েই বাঁচি! এখানে ভালো-মন্দ উভয়েরই প্রভাব বিদ্যমান। তাই একটিকে বড় করতে যেয়ে আমরা যেন অন্যটির অস্তিত্বকে আঘাত না করে ফেলি। তাতে যারা সম্পর্কগুলোর মূল্যায়ন করেন, একে অপরকে ভালবাসেন তাদেরকে ছোট করা হয়ে যায়!

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

লেখক :  ইফতেখায়রুল ইসলাম

এডিসি, ক্যান্টনমেন্ট ও খিলক্ষেত, ডিএমপি।