পাবনায় ‘সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গণমাধ্যমের ভূমিকা শীর্ষক’ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠত

পাবনায় ‘সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গণমাধ্যমের ভূমিকা শীর্ষক’ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠত

পাবনায় ‘সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গণমাধ্যমের ভূমিকা শীর্ষক’ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠত

পাবনায় ‘সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গণমাধ্যমের ভূমিকা শীর্ষক’ এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (০৯ জুন ) রাজশাহী আ লিক তথ্য অফিস আয়োজিত পাবনা প্রেসক্লাবের ভিআইপি অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে স্থানীয় সরকার পাবনা’র উপপরিচালক মোঃ মোখলেছুর রহমান এবং প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তৃতা করেন উন্নয়ন ও গণমাধ্যমকর্মী বিশিষ্ট সাংবাদিক ড. নরেশ মধু।  সভায় সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী আ লিক তথ্য অফিসের উপপ্রধান তথ্য অফিসার  মোঃ  তৌহিদুজ্জামান।

সভায় প্রধান অতিথি বলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গণমাধ্যমের ভূমিকা অপরিসীম। গণমাধ্যমকর্মীরা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ উপস্থাপনের মাধ্যমে সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বিরাট অবদান রাখে। সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্যই গণমাধ্যম সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষেত্রবিশেষে জনগণের  শেষ আশ্রয়স্থল হল গণমাধ্যম।

মোখলেছুর রহমান বলেন, গণমাধ্যম একটি সমাজের দর্পণস্বরূপ। দর্পণ যত স্বচ্ছ হয় তত ভাল ছবি দেখা, ঠিক তেমনিভাবে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে কোনো বিষয়ের প্রকৃত অবস্থা ফুটে ওঠে। অনাকাক্সিক্ষত কোনো গুজব তৈরি হয় না, ফলে সমাজে কোনো বিভ্রান্তির সুযোগ থাকে না। সমাজে শান্তি বজায় থাকে।

তিনি বলেন, সুশাসন এখন সারা পৃথিবীতে কাক্সিক্ষত শব্দ। বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে স্বাধীন হলেও চলার পথে নানা বাধা পেরিয়ে আজকের এ অবস্থানে এসেছে। সরকার সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে। সেই দৃঢ়তায় সরকার সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি, এনআইএস, জিআরএস, তথ্য অধিকার এবং এপিএ- এই ৫টি টুলস্ নিয়ে কাজ করছে।

উপপরিচালক বলেন, সুশাসন নিশ্চিতে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলো অত্যন্ত কার্যকরী। এগুলোর মাধ্যমে একদিকে জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়, অপরদিকে ফলাফল নির্ভর কাজ সম্ভব হয়।

সমাজে প্রতিটি স্তরে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের জন্য এসময় গণমাধ্যমকর্মীদের আহ্বান জানান।

মতবিনিময় সভায় প্রধান আলোচক উন্নয়ন ও গণমাধ্যমকর্মী ড. নরেশ মধূ বিশ্লেষণধর্মী শাসন ও সুশাসন সম্পর্কিত বিষয়ের উপর আলোকপাত করতে গিয়ে বলেন, মূলত সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে একটি পছন্দনীয় উপায়ে সরকারী কর্মকান্ড পরিচালনা করে ও সরকারি সম্পদসমূহের ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করে, সেই ব্যাপারগুলো পরিমাপ করে থাকে।  অপরদিকে "সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া এবং কোন্‌ প্রক্রিয়াতে সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়িত হয় বা হয় না তা নির্ধারণের পরিমাপ। তাই সুশাসনের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, ন্যায়পরায়ন সাংবাদিকদের বস্তুনিষ্ঠ, নিরপেক্ষ ভূমিকা ছাড়া সুশাসন কল্পনায় করা যায় না।  

তিনি বলেন,স্বাভাবিকভাবেই সুশাসন নামের একটি ধারণার উদয় হয়, যা অকার্যকর অর্থনীতি বা রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর সাথে টেকসই অর্থনীতি ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলিকে তুলনা করার একটি প্রতিমান বা মডেল হিসেবে কাজ করে।

মধু আরো উল্লেখ করেন সুশাসন ধারণাটির কেন্দ্রে রয়েছে সমাজের নির্দিষ্ট কিছু পছন্দের গোষ্ঠীর পরিবর্তে সাধারণ জনগণের চাহিদা মেটাতে সরকার ও প্রশাসনিক সংস্থাগুলোর দায়িত্বের ব্যাপারটি। যেহেতু উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপে কেন্দ্রীভূত এবং উদারপন্থী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলিকে প্রায়শই "সবচেয়ে সফল" হিসেবে বর্ণনা করা হয়, তাই সুশাসনের আদর্শ বা মানদন্ডগুলোতে প্রায়শই ঐসব রাষ্ট্রের সাথে অন্যান্য রাষ্ট্র লোকে মাপা হয়।

প্রধান অতিথি মোঃ মোখলেছুর রহমান একজন গণমাধ্যমকর্মীর একটি রিপোর্টের কথা উল্লেখ করে বলেন,  একজন গণমাধ্যমকর্মীর ভূমিকায় রাষ্ট্রের অনেক কিছু পরিবর্তন, সংশোধন হতে পারে। তাই সরকারের সহযোগিতা করামূলক রিপোর্ট করার উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন। 

সভাপতির বক্তব্যে মোঃ তৌহিদুজ্জামান বলেন, সরকারের কাজের পরিপূরক হিসেবে গণমাধ্যমকর্মীরা ভূমিকা পালন করে থাকেন। স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের উত্তা লের ব্যুরো প্রধান উৎপল মীর্জা বলেন, ‘শাসন’ এবং ‘সুশাসনের’ ব্যাপারটি রাষ্ট্রের অনেক কার্যকলাপের বিষয় সামনে চলে আসে। তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, সাংবাদিকদের একটি মানদন্ড থাকা জরুরী।

সভার শুরুতে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দের পরিচয় পর্ব শেষে তথ্য ক্যাডারের সাবেক পরিচালক ফারুক মোঃ আব্দুল মুনিম স্বাগত বক্তব্য রাখেন। তথ্য অফিসার মোঃ আতিকুর রহমান শাহ্ সভঅ পরিচালনা করেন। 

সভায় জেলা তথ্য অফিসের সিনিয়র তথ্য অফিসার মোঃ সামিউল আলম, আ লিক তথ্য অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণসহ, জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার গণমাধ্যমকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।