পাবনা মানসিক হাসপাতাল:খাদ্য সরবরাহকারী ঠিকাদারের মামলা খারিজ, নতুন পরিচালক নিয়োগ

পাবনা মানসিক হাসপাতাল:খাদ্য সরবরাহকারী ঠিকাদারের মামলা খারিজ, নতুন পরিচালক নিয়োগ

ছবি- নিউজজোন বিডি

পাবনা প্রতিনিধি: পাবনা মানসিক হাসপাতালে খাদ্য সরবরাহকারী সেই ঠিকাদারের মামলা সোমবার আদালত খারিজ করে দিয়েছেন এবং হাসপাতালে নতুন পরিচালক নিয়োগ হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে সর্বমহলে। পাবনা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের বিচারক মামলাটি খারিজ করে দেন। ফলে রোগীদের খাবার সরবরাহের জন্য দরপত্র আহ্বানে আর কোনো জটিলতা থাকল না। হাসপাতালের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. রতন কুমার রায় বিষয়টি এ প্রতিনিধিকে নিশ্চিত করেছেন।

উল্লেখ্য, গতবছর ১৪ জুন পাবনা মানসিক হাসপাতালে রোগীদের খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান রোজ এন্টারপ্রাইজ  টেন্ডারে দ্রব্যের নাম উল্লেখ করা নিয়ে পাবনা জজ কোর্টে মামলা করে। আদালত ২৯ জুন সার্বিক বিবেচনায় পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বিবাদীর বিরুদ্ধে অন্তর্র্বতীকালীন নিষেধাজ্ঞা জারি করলে জটিলতা শুরু হয়।

খাদ্য সংকটে হাসপাতালে রোগী ভর্তি বন্ধ হয়ে যাওয়া, পুরোনো রোগীদের যার যার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়ার নির্দেশ এর ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যমের অনলাইন, অনলাইন পোর্টাল, ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর তড়িঘড়ি করে বসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিভাগ। রোগী ভর্তি শুরুর ৪৮ ঘন্টা পর হাসপাতালের রোগীদের খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের দায়ের করা মামলা খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। একই দিনে দিনব্যাপী আলোচনার পর সোমবার (১২ সেপ্টম্বর) বিকেলে হাসপাতালের পরিচালক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাফকাত ওয়াহিদকে পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) পদে পদায়ন করা হয়। সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপ-সচিব জাকিয়া পারভীন স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে হাসপাতালের বর্তমান পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. রতন কুমার রায় বলেন, হ্যাঁ বিষয়টি আমিও শুনেছি। গতকাল থেকে হাসপাতাল নিয়ে যেসব ঘটনা ঘটছে তার প্রেক্ষিতে হয়তো আমাকে সরিয়ে তাকে পদায়ন করা হয়েছে।

এর আগে খাবার ও আর্থিক সংকটের কারণে ৪৮ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর সোমবার সকাল থেকে হাসপাতালের বহির্বিভাগে ফ্রি বেডে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়।  রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) থেকে দেশের একমাত্র বিশেষায়িত পাবনা মানসিক হাসপাতালে ফ্রি বেডে রোগী ভর্তি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। একই সঙ্গে ফ্রি বেডে চিকিৎসাধীন রোগীদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৫০০ শষ্যার এই হাসপাতালে এখন ৪৮০ জন রোগী ভর্তি আছে। এর মধ্যে ১৫০  পেইড বেডে ভর্তি। বাকি রোগীগুলো ফ্রি বেডের।

ডা. রতন কুমার রায় বলেন, “আমরা অনেকবার বিষয়টি সমাধানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়েছি, চিঠি দিয়েছিলাম, কিন্তু লাভ হয়নি। বাধ্য হয়ে আমরা  রোগী ভর্তি বন্ধ রেখেছিলাম। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপকের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আবারও রোগী ভর্তি কার্যক্রম শুরু করি। একই সঙ্গে যেহেতু ঠিকাদারের করা মামলা খারিজ করা হয়েছে; ফলে এই সংক্রান্ত আর কোনো সংকট থাকছে না।”

সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ডা. শাফকাত ওয়াহিদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,“হয়তো সংকটময় অবস্থা দেখেই আমাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যেহেতু সংকট নিয়ে আমি কিছু জানি না; তাই কিছু বলতে পারছি না। দায়িত্ব নেয়ার পর পরিস্থিতি কেমন সেটা দেখে ব্যবস্থা নিতে পারব।”