পাবনায় বাদীপক্ষের বিরুদ্ধে জেলে থাকা আসামিদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ

পাবনায় বাদীপক্ষের বিরুদ্ধে জেলে থাকা আসামিদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ

পাবনায় বাদীপক্ষের বিরুদ্ধে জেলে থাকা আসামিদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ

গ্রাম্য বিবাদে পাবনার সুজানগরে হত্যাকান্ডকে কেন্দ্র করে যখন আসামিরা জেলহাজতে; তখন বাদি পক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে পুরুষশুন্য আসামিদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ  উঠেছে। উপজেলার তাঁতীবন্দ ইউনিয়নের জিয়ালগাড়ি ভবানীপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ আজাদ ও মোস্তাকের নেতৃত্বে বাদী পক্ষের লোকজন প্রকাশ্যে বসতঘর ভেঙ্গে নেয়া, জমি থেকে ফসল কেটে নেয়া, গবাদী পশু নেয়া ও পুকুরের মাছ পর্যন্ত লুটপাট করছে।

শনিবার(২৬ নভেম্বর) সরেজমিনে সাংবাদিকরা দেখতে পান, এ যেন প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর যেন কোন এক ধ্বংসযজ্ঞ। প্রতিপক্ষের হামলায় আসামিদের একাধিক পরিবারের বসতভিটার চিত্র এমন। সাজানো সংসারের এমন দশায় আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে ওই পরিবারগুলোর মানুষেরা। কয়েকটি বসতবাড়ি খালি পড়ে আছে।বাড়ির লোকজন,গৃহস্থালি সামগ্রী কিছুই নেই। যেসব বাড়িতে লোকজন আছেন তাদের  চোখে-মুখেও আতঙ্কের ছাপ। তারা জানান,ঘরবাড়ি,সংসার সব শেষ হয়ে গেছে। এখন আমাদের কিছুই নেই। স্থানীয়রা জানান, পূর্ব বিরোধের জেরে জাহাঙ্গীর ও তার এক ভাই  মারা যাওয়ার পর আসামিদের বাড়িঘরে ভাঙচুর-লুটপাট চলছেই। মামলার আসামীরা সকলেই জেলহাজতে থাকার সুযোগে গরু লুটের পাশাপাশি আসামিদের বাড়ির সকল জিনিসপত্র  লুটপাট করেছে বাদী পক্ষের লোকজন। মামলার আসামী আশরাফ আলীর স্ত্রী  শারমিন আক্তার জানান,আমার স্বামী জেল হাজতে আছে। এই সুযোগে বাদীপক্ষের লোকজন আমাদের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করে ঘরের সবকিছু নিয়ে গেছে। আসামি বাবর আলীর স্ত্রী  শিউলি খাতুন জানান, বাদীপক্ষের লোকজন প্রকাশ্যে আমাদের দুইটি পুকুরের সব মাছ মেরে নিয়ে গেছে। মামলার অপর আসামি মো.রফিকের স্ত্রী মোছা .রাশিদা খাতুন বলেন, আমাদের বাড়িতে এসে বাদীপক্ষের লোকজন ঘরের জিনিসপত্র ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। তবে  এ ঘটনায় নিজেদের সম্পৃকতা নেই বলে দাবী করেন বাদী পক্ষের লোকজন। এদিকে  হত্যাকান্ডকে কেন্দ্র করে আসামীরা জেলহাজতে থাকার পরও তাদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় নিন্দা জানানোর পাশাপাশি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

এ বিষয়ে শনিবার সুজানগর থানার ওসি আব্দুল  হান্নান জানান,‘ বাড়িঘর লুটপাট ও ভাঙচুরের  ঘটনায় থানায় দুইটি মামলা হয়েছে। এছাড়া লুট হওয়া  গরুগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।’ এ ব্যাপারে আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় নিন্দা জানানোর পাশাপাশি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো এবং ভাঙচুর ও লুটপাটের একাধিক মামলা হলেও পুলিশের দৃশ্যমান তেমন কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। তাই এলাকাবাসী পুলিশের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। 

উল্লেখ্য, পূর্ব বিরোধের জের ধরে উপজেলার তাঁতীবন্দ ইউনিয়নের  জিয়ালগাড়ী ভবানীপুর গ্রামে সম্প্রতি দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় টেঁটাবিদ্ধ হয়ে জাহাঙ্গীর আলম এবং পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো একজন সহ ২ জন মারা যায় ।

এ হত্যার ঘটনায় জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে জুবায়ের ২৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে মামলার প্রধান আসামিসহ সকল আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ আদালতে সোপর্দ করে। এ সুযোগে পুরুষশুন্য বাড়িতে প্রায় চলছে ভাঙচুরসহ লুটপাটের ঘটনা। তাই এলাকাবাসী উর্দ্ধতন পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।