টাঙ্গাইলে আ’লীগ নেতা বড় মনির বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা

টাঙ্গাইলে আ’লীগ নেতা বড় মনির বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা

প্রতীকী ছবি

টাঙ্গাইলের প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া বড় মনির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন এক কিশোরী (১৭)। গত বুধবার রাতে টাঙ্গাইল সদর থানায় এ মামলা দায়ের করেন তিনি। ধর্ষণের ফলে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন বলে উল্লেখ করা হয় মামলায়।

গতকাল বৃহস্পতিবার মেডিক্যাল চেকআপ শেষে বিকেলে ওই কিশোরী আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন। টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেস্কে জান্নাত রিপা জবানবন্দী রেকর্ড করেন। পরে তাকে তার ফুপুর জিম্মায় প্রদান করা হয়। এ ঘটনায় টাঙ্গাইলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

গোলাম কিবরিয়া বড় মনি টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবং টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের এমপি তানভীর হাসান ছোট মনির বড় ভাই। এ ছাড়া তিনি টাঙ্গাইল জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতিরও মহাসচিব। মামলায় বড় মনির স্ত্রী নিগার আফতাবকেও আসামি করা হয়েছে। ধর্ষণের পর ওই কিশোরীকে মারধরের অভিযোগ আনা হয়েছে নিগার আফতাবের বিরুদ্ধে।

টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পরিদর্শক (তদন্ত) মো: হাবিবুর রহমানকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: খন্দকার সাদিকুর রহমান বলেন, গাইনি বিভাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট নিসফুন নেসাকে প্রধান করে তিন সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড করা হয়েছে। এই বোর্ড ওই কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করেছেন।

মামলায় ওই কিশোরী অভিযোগ করেছেন, বড় মনি তাদের আত্মীয় এবং পূর্ব পরিচিত। হোয়াটস অ্যাপে তাদের কথা হতো। ওই কিশোরীর ভাইয়ের সাথে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ হয়। ওই কথা গোলাম কিবরিয়াকে জানানোর পর তিনি সমস্যা সমাধান করে দেয়ার আশ্বাস দেন।

পরে গত ১৭ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল শহরের আদালত পাড়ায় বড় মনির নিজের বাড়ির পাশে একটি ১০ তলা ভবনের চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটে যেতে বলেন। সেখানে যাওয়ার পর তিনি শারীরিক সম্পর্ক করার প্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে তাকে একটি কক্ষে আটকে রাখেন। প্রায় তিন ঘণ্টা পর কক্ষে প্রবেশ করে তাকে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ করলে প্রাণে মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকি দেন। তারপর প্রতিনিয়ত তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে এবং প্রথমবার ধর্ষণের সময় তোলা ছবি দেখিয়ে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ করত। মামলায় ওই কিশোরী আরো উল্লেখ করেন, ধর্ষণের ফলে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন।

এ কথা গোলাম কিবরিয়াকে জানালে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য তাকে চাপ ও হুমকি দিতে থাকেন। কিন্তু সন্তান নষ্ট করতে রাজি না হওয়ায় গত ২৯ মার্চ রাত ৮টার দিকে গোলাম কিবরিয়া তার শ্বশুরবাড়ি টাঙ্গাইল শহরের আদালতপাড়ায় তুলে নিয়ে যান।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে গোলাম কিবরিয়া বড় মনি জানান, রাজনৈতিকভাবে তাকে হেয় করার জন্য ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তার বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়েছে।

সূত্র: নয়াদিগান্ত