সরকারের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে দুদক : মির্জা ফখরুল

সরকারের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে দুদক : মির্জা ফখরুল

সরকারের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে দুদক : মির্জা ফখরুল

বর্তমানে আওয়ামী সরকারের ছত্রছায়ায় এবং পৃষ্ঠপোষকতায় তাদের অনুগত ব্যবসায়ী, আমলা এবং নেতাকর্মীরা দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলছে এমন অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাদের বিরুদ্ধে দুদক কোনো পদক্ষেপ নেয় না। জনগণকে বিভ্রান্ত ও আন্দোলন দমন করতে নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে আবারো চক্রান্ত শুরু করেছে সরকার। আর এই চক্রান্ত্রের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে দুদক।শনিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান ব্যর্থ, দুর্নীতিবাজ, ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রতিহিংসার রাজনীতির কারণে সমাজ, রাষ্ট্র, রাজনীতি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এই প্রতিহিংসা পরায়ণ রাজনীতির শিকার শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বিএনপি'র চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তথা জিয়া পরিবার এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।

সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা জেনেছেন, গত ১৩ এপ্রিল বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেছেন আদালত। এই কার্যক্রম ফরমায়েশি এবং প্রতিহিংসামূলক। ১/১১ জরুরি অবস্থার অনৈতিক সরকার দেশকে বিরাজনীতিকরণের লক্ষে মাইনাস টু ফর্মূলাসহ রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে তাদের মিশন সফল করতে চেয়েছিল। ওই সময় বিএনপি'র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ পুত্র তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয় এবং রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত না থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র তারেক রহমানের স্ত্রী এবং জিয়া পরিবারের সদস্য বিধায় ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধেও একই মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়।

মহাসচিব বলেন, আজ এমন একসময় তারেক রহমান এবং ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হলো, যখন বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে বর্তমানে ব্যর্থ, অযোগ্য, দুর্নীতিবাজ সরকারের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী তীব্র গণ-আন্দোলন চলছে। ব্যাপক জনসম্পৃক্ত এই আন্দোলনে সরকার ভীত হয়ে দমন করার জন্য গুলি করে আন্দোলনকারীদের হত্যা করছে। বাধা, প্রতিবন্ধকতা, গ্রেফতার মিথ্যা মামলা দিয়ে নিষ্ঠুর দমন নিপীড়ন চালাচ্ছে। এরপরও জনস্রোত ঠেকাতে পারছে না। তাই, বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে নেতা-কর্মী ও জনসাধারণের মনোবল বিনষ্ট করতে সরকারের ইঙ্গিতে এই মামলা অব্যাহত আছে।

তিনি বলেন, আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, যে সকল সম্পত্তির মালিক তারেক রহমান নন, কোনো দলিল বা চুক্তিতে যেখানে তারেক রহমানের নাম, স্বাক্ষর বা সংশ্লিষ্টতা নাই, তাকে সেসব সম্পত্তির গায়েবি মালিক বানিয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এমনকি তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদা রহমানের কর পরিশোধকৃত সম্পদ নিয়েও কাল্পনিক অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, সরকারের নির্মম প্রতিহিংসায় দেশ আজ পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে। সরকার দেশপ্রেমিক, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক কাউকেই রেহাই দিচ্ছে না। চাঁদাবাজি, মিথ্যা মামলা, গ্রেফতার করে সকলের জীবন অতিষ্ঠ করে ফেলেছে। বর্তমানে আওয়ামী সরকারের ছত্রছায়ায় এবং পৃষ্ঠপোষকতায় তাদের অনুগত ব্যবসায়ী, আমলা ও নেতা-কর্মীরা দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলছে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ দুদক নেয় না। জনগণকে বিভ্রান্ত ও আন্দোলন দমন করতে নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে আবারো চক্রান্ত শুরু করেছে ফ্যাসিস্ট সরকার। আর এই চক্রান্ত্রের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে দুদক।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা ইতোপূর্বেও বলেছি, ১/১১ থেকেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও দেশনায়ক তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে সরানোর একটা ষড়যন্ত্র কাজ করছে, যা বর্তমানেও অব্যাহত রয়েছে। আর তারই অংশ হিসেবে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঠিক আগে আগে অর্থাৎ ২০১৮ সালে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সাজা দেয়া হয়েছিল। এখনো ঠিক একই কায়দায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আগে বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে একতরফাভাবে সাজা দেয়ার সকল প্রকারের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে এই সরকার। তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে তা অবান্তর, ভিত্তিহীন, অমূলক। চার্জ গঠন করে মামলার একতরফা যে রায় দেয়া হবে তা হবে প্রতিহিংসামূলক ফরমায়েশি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি- সরকারের হীন এই কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছে।