কোরআনের আলোকে সুন্দর ব্যবহার

কোরআনের আলোকে সুন্দর ব্যবহার

ফাইল ছবি

প্রতিটি মানুষের আচার-ব্যবহারের মাধ্যমে প্রকৃত মনুষ্যত্ববোধের পরিচয় ফুটে ওঠে। তাই মানবজীবনে সুন্দর ব্যবহারের গুরুত্ব অপরিসীম। সেজন্য সবার সঙ্গে সদ্ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছে কোরআন। এ প্রসঙ্গে কোরআনে আল্লাহ ঘোষণা করেছেন, ‘তোমরা মানুষের সঙ্গে উত্তম ও সুন্দর কথা বল।’ সুরা বাকারা, আয়াত ৮৩।

একে অন্যের সঙ্গে সাক্ষাতের সময়ও সুন্দর আচরণ করতে হবে। অসৌজন্যমূলক কথাবার্তা ও আচরণ করা যাবে না। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ‘কেউ যখন তোমাকে সৌজন্যমূলক সম্ভাষণ জানাবে প্রতি-উত্তরে তুমি তাকে তার চেয়ে সুন্দর ধরনের সম্ভাষণ জানাও, কিংবা অন্তত ততটুকুই জানাও।’ সুরা নিসা, আয়াত ৮৬। 

বিশেষ করে ফ্যামিলি মেম্বারদের সঙ্গে সুন্দর ব্যবহারের গুরুত্ব বোঝাতে কোরআনে আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্ত, নিকটতম প্রতিবেশী, দূরবর্তী প্রতিবেশী, সঙ্গী, পথচারী এবং তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস-দাসীদের প্রতি সদ্ব্যবহার করবে।’ সুরা নিসা, আয়াত ৩৬। 

সুন্দর আচরণের শিক্ষা নবী দিয়ে গেছেন আমাদের। তিনি মানুষের সঙ্গে সুন্দর আচরণ করতেন। এ প্রসঙ্গে কোরআনে অনেক আয়াত এসেছে। আল্লাহ নবীকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আল্লাহর রহমতেই আপনি তাদের জন্য কোমল হৃদয় হয়েছেন, পক্ষান্তরে আপনি যদি রূঢ় ও কঠিন হৃদয় হতেন তাহলে তারা আপনার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত। কাজেই আপনি তাদের ক্ষমা করে দিন এবং তাদের জন্য মাগফিরাত কামনা করুন।’ সুরা আলে ইমরান, আয়াত ১৫৯। 

কোমল আচরণের শিক্ষা আল্লাহ সর্বপ্রথম নবীকে দিয়েছেন। তাঁর থেকে পর্যায়ক্রমে আমাদের পর্যন্ত এ শিক্ষা চলে আসছে। এ প্রসঙ্গে কোরআনে এসেছে, ‘মুমিনদের জন্য আপনি আপনার ডানা অবনমিত করুন।’ অর্থাৎ কোমল আচরণ করুন। সুরা হিজর, আয়াত ৮৮। 

আমাদের নবী সব সময় মানুষের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলতেন। কাউকে বুঝতে হলে সর্বোত্তম পন্থায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতেন। এ প্রসঙ্গে কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তুমি মানুষকে তোমার প্রতিপালকের পথে আহ্বান কর হিকমত (প্রজ্ঞা) ও সদুপদেশ দ্বারা এবং তাদের সঙ্গে আলোচনা কর সদ্ভাবে।’ সুরা নাহল, আয়াত ১২৫। 

সুন্দর আচার-ব্যবহার শিখতে হলে আমাদের রসুল (সা.)-এর জীবনী থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। কারণ তিনি হলেন মুমিনের আদর্শের প্রতীক। কোরআনে আল্লাহ রসুলকে উদ্দেশ করে বলেন, অ‘র নিশ্চয়ই আপনি সুন্দর চরিত্রের অধিকারী।’ সুরা কলাম, আয়াত ৪।  

অন্য আয়াতে আরও এসেছে, ‘হে মানুষ! তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও পরকালকে ভয় করে (মুত্তাকি মুসলমান) এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে (মুমিন মুসলমান) তাদের জন্য রসুলুল্লাহর (সর্বোত্তম চরিত্র) মধ্যে রয়েছে তোমাদের জন্য উত্তম আদর্শ।’ সুরা আহজাব, আয়াত ২১।

লেখক : মুহাদ্দিস, খাদিমুল ইসলাম মাদরাসা কামরাঙ্গীর চর ঢাকা।