ইউক্রেনের কয়েকটি শহরে আরো রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা

ইউক্রেনের কয়েকটি শহরে আরো রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা

ইউক্রেনের কয়েকটি শহরে আরো রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা

ইউক্রেনে গত ২৪ ঘন্টায় রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় কমপক্ষে তিন জন বেসামরিক লোক নিহত এবং ১৪ জনেরও বেশি আহত হয়েছে।ইউক্রেনের মোট দশটি এলাকায় সবশেষ এই আক্রমণগুলো চালানো হয়। মস্কোয় ক্রেমলিনের ওপর দুটি ড্রোন বিধ্বস্ত হবার পর থেকে সপ্তাহখানেক সময়ের মধ্যে এটি ছিল চতুর্থ দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা।

রাজধানী কিয়েভে এসব হামলায় বেশ কিছু অ্যাপার্টমেন্ট ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এতে পাঁচজন আহত হয়েছে বলে শহরটির মেয়র জানিয়েছেন। অন্যদিকে দক্ষিণের বন্দরনগরী ওডেসায় আক্রান্ত হয়েছে একটি গুদাম, সেখানে একজন নিরাপত্তা রক্ষীর মৃত্যু হয়েছে।এ ছাড়া খারকিভ, খেরসন ও মিকোলায়েভ থেকেও বিস্ফোরণের খবর দিয়েছেন কর্মকর্তারা।

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী বলছে, মধ্যরাতের পর থেকে চার ঘন্টা ধরে এসব আক্রমণ চালানো হয়। সারা ইউক্রেন জুড়ে ১৬টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়।ইউক্রেনের বাহিনী বলছে, বিভিন্ন শহর ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ৬১টি বিমান হামলা এবং ৫২টি রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। কর্মকর্তারা আরো জানান, প্রায় ৩৫টি ইরানে-তৈরি শাহেদ ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে।

এমন এক সময় এ আক্রমণগুলো ঘটেছে যখন ইউক্রেন আগামী দিনগুলোতে কোন এক সময় রাশিয়ার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযান শুরু করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।অন্যদিকে মস্কোতে মঙ্গলবার অনুষ্ঠেয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন রুশ বিজয়ের বার্ষিকী উদযাপনের জন্য প্রস্তুতি চলছে।

জাপোরিশার বাসিন্দাদের মধ্যে আতংক

ইউক্রেনের একজন কর্মকর্তা বলছেন, জাপোরিশার পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিকটবর্তী শহরের বাসিন্দাদের বাড়ির ছেড়ে যাবার জন্য রাশিয়া নির্দেশ দেবার পর সেখানে “ব্যাপক আতংক” তৈরি হয়েছে।

কিয়েভের বাহিনীর সম্ভাব্য পাল্টা অভিযানের জল্পনার মধ্যেই এ নির্দেশ দেয়া হয়। এর পর রাস্তায় ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে গাড়ির দীর্ঘ লাইন দেখা যায়।জাপোরিশা অঞ্চলের ১৮টি বসতির লোকজনকে অন্যত্র চলে যাবার নির্দেশ দেয়া হয়।এর মধ্যে এনারহোডার নামে একটি বসতি রয়েছে - যা জাপোরিশার পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাছেই।

জাতিসংঘের পারমাণবিক নজরদারি সংস্থা আইএইএ’র পরিচালক রাফায়েল গ্রসি বিবিসিকে বলেছেন, এই নির্দেশ থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটির আশপাশে রুশ ও ইউক্রেনীয় বাহিনীর মধ্যে প্রচণ্ড লড়াই হতে পারে।সংস্থাটি বলেছে, “এখানে একটি গুরুতর পারমাণবিক দুর্ঘটনা” ঘটে যেতে পারে।

প্রিগোশিনের হুমকির পর ওয়াগনার গ্রুপকে আরো গোলাবারুদ দিচ্ছে মস্কো

রাশিয়ার ভাড়াটে যোদ্ধা বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিন বলেছেন – তিনি কয়েকদিন আগে তার বাহিনীকে আরো গোলাবারুদ দেবার জন্য যে দাবি জানিয়েছিলেন – মস্কো তা মেনে নিয়েছে।শুক্রবার তিনি বলেছিলেন, আরো গোলাবারুদ না দেয়া হলে তিনি বাখমুট থেকে তার বাহিনীকে প্রত্যাহার করে নেবেন।তবে রোববার মি. প্রিগোশিন বলেন, ওই শহরে লড়াই চালানোর জন্য যে সরবরাহ দরকার তা মস্কো দিতে রাজি হয়েছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার মি. প্রিগোশিন এক ভিডিও বার্তা দেন – যাতে তার চারপাশে ওয়াগনার বাহিনীর বহু যোদ্ধার লাশ দেখা যায় – এবং তাতে তিনি গালাগালি-পূর্ণ ভাষায় তার রুশ সহযোগীদের আক্রমণ করেন।রুশ সেনাবাহিনী এবং ওয়াগনার গ্রুপের যোদ্ধারা মিলে কয়েক মাস ধরে পূর্ব ইউক্রেনের বাখমুট শহরটি দখল করার চেষ্টা করছে।পশ্চিমা কর্মকর্তারা ধারণা করছেন এই যুদ্ধে হাজার হাজার রুশ সৈন্য ও ওয়াগনারের যোদ্ধা নিহত হয়েছে।

সূত্র : বিবিসি