বাগাতিপাড়া সেজেছে কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম রঙে

বাগাতিপাড়া সেজেছে কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম রঙে

ফাইল ছবি।

মন নেচে ওঠে আনন্দে। কৃষ্ণচূড়ার বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিক্স রেজিয়া। এ গাছ চমৎকার পত্রপল্লব এবং আগুনলাল কৃষ্ণচূড়া ফুলের জন্য বিখ্যাত। এটি ফ্যাবেসি পরিবারের অন্তর্গত একটি গাছ, যা ‘গুলমোহর’ নামেও পরিচিত।

নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার রাস্তার মোড়ে মোড়ে কৃষ্ণচূড়ার মনকাড়া গাছ। সবুজ সবুজ চিকন পাতা। ফাঁকে ফাঁকে লাল লাল কৃষ্ণচূড়া ফুল। দেখলেই যেন চোখ জুড়িয়ে যায়।

এর বড় খ্যাতি হলো গ্রীষ্মে যখন এই ফুল ফোটে, এর রূপে মুগ্ধ হয়ে পথচারীরাও থমকে তাকাতে বাধ্য হন। কৃষ্ণচূড়া গাছ উচ্চতায় সর্বোচ্চ ১২ মিটার হয়। তবে এর শাখা পল্লব অনেক দূর পর্যন্ত ছড়ানো থাকে।

কৃষ্ণচূড়ার রঙে রক্তিম ফুলে নাটোরের বাগাতিপাড়া সেজেছে গ্রীষ্মের রৌদ্দুরের উত্তাপ গায়ে মেখে।

রাস্তার দু’পাশে অগণিত কৃষ্ণচূড়ার গাছে ফুলের সমারোহ রঙ ছড়িয়ে হয়েছে নানা বর্ণময়। টুকটুকে লাল, কমলা, হলুদ ফুল এবং উজ্জ্বল সবুজ পাতা দিয়ে নতুন রূপে প্রকৃতির অপরূপ রূপে সেজেছে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল। যা দূর থেকেও পথচারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। 'গন্ধে উদাস হাওয়ার মতো উড়ে তোমার উত্তরী কর্ণে তোমার কৃষ্ণচূড়ার মঞ্জুরি' কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের মতো অনেকেই বাংলা কবিতা-গানে উপমা হিসেবে এনেছেন কৃষ্ণচূড়াকে।

শোভা বর্ধনকারী এ বৃক্ষটি গ্রামীণ জনপদের পাশাপাশি শহরের পথে-প্রান্তরের শোভা বর্ধন করে যাচ্ছে।

গ্রীষ্মে যখন এ ফুল ফোটে, তখন এর রূপে মুগ্ধ হয়ে পথচারীরা থমকে দাঁড়ায়। গ্রীষ্মের প্রচণ্ড খরতাপে বিশুদ্ধ অক্সিজেনের পাশাপাশি এসব গাছ দিচ্ছে ক্লান্ত দেহে ছায়া আর মনে প্রশান্তির পরশ। বাগাতিপাড়া উপজেলার প্রায় প্রতিটি সড়কে কৃষ্ণচূড়া ফুল ফুটেছে। অনেক বাড়িতেও কৃষ্ণচূড়া ফুল ফুটেছে। গ্রীষ্মের এ আগুনঝরা দিনে যেন লাল বেনারসি পরা নববধূর সাজে কারো অপেক্ষায় আছে কৃষ্ণচূড়া।

উপজেলার পাকা এলাকার ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, 'কৃষ্ণচূড়া গাছের ছায়ায় গরমের দিনে অনেক স্বস্তি মেলে। আর তাই এ গাছের ছায়ায় ক্লান্ত পথচারীরা নিজেকে একটু জুড়িয়ে নেয়।'

উপজেলার বিহারকুল এলাকার বেইলি ব্রিজ সংলগ্ন কৃষ্ণচূড়ার গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নেওয়া মহিদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, 'আমি অনেক দুরে থেকে সাইকেল নিয়ে আসতে আসতে ক্লান্ত হয়ে গেছি। তাই এই গাছের গোড়ায় বসে একটু বিশ্রাম নিচ্ছি। মনে হচ্ছে গ্রীষ্মের খরতাপে শান্তির পরশ  বুলিয়ে দিচ্ছে এই কৃষ্ণচূড়া গাছগুলো।'

এ বিষয়ে উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান বলেন, 'আগের দিনে রাস্তার দুই ধারে অনেক কৃষ্ণচূড়া গাছ ছিল। তবে বৃক্ষ নিধনের শিকার হয়ে দিন দিন কমে যাচ্ছে রঙিন এই গাছ। এক সময় এ গাছ হারিয়ে যাওয়ার শঙ্কাও রয়েছে।' প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি মানুষ ও প্রকৃতির স্বার্থেই বেশি করে কৃষ্ণচূড়া গাছ লাগানোর আহ্বান জানান তিনি প্রকৃতিপ্রেমীদের।