যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেন-রাশিয়ার মুখোমুখি লড়াই

যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেন-রাশিয়ার মুখোমুখি লড়াই

সংগৃহীত

ইউক্রেন দু’সপ্তাহ আগে রাশিয়ার ওপর পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছে। এক হাজার কিলোমিটার বিস্তৃত সম্মুখ রণাঙ্গনের বিভিন্ন অংশে আক্রমণ চালিয়ে ইউক্রেন অল্প আগালেও তারা অগ্রগতি ধরে রাখতে পারছে।

ইউক্রেন বাহিনী শত্রু পক্ষের দুর্বলতা খোঁজার লক্ষ্য নিয়ে আক্রমণ শুরু করেছে। বাহিনীর বেশিরভাগ সৈন্যকে সংরক্ষিত অবস্থায় রাখা হয়েছে, যাতে রুশ প্রতিরক্ষা ভাঙার বড় একটা সুযোগ পেলেই তারা মূল আক্রমণটা চালাতে পারে এবং দেশের দক্ষিণে হাতছাড়া হয়ে যাওয়া ভূখণ্ড আবার দখল করতে পারে।

লড়াই বেশ তীব্র ও কঠিন হয়ে উঠেছে। দু’পক্ষেই প্রচুর সৈন্য হতাহত হচ্ছে এবং দু’পক্ষই দাবি করছে যে তারা এগিয়ে আছে। দক্ষিণ দোনেৎস্ক অভিমুখে ইউক্রেনের অগ্রযাত্রা কিছুটা থমকে গেছে, তবে তারা এগিয়ে যাওয়া অব্যাহত রেখেছে।

রণাঙ্গনে যুদ্ধরত ৬৮ নম্বর জেগার ব্রিগেডের সাথে দুই পক্ষের মুখোমুখি লড়াই দেখতে সম্প্রতি যোগ দেয় বিবিসি। সেখানে সম্প্রতি পুনর্দখল করা ব্লাহোদাত্নে গ্রাম থেকে আরো পূর্ব দিকে তাদের নিয়ন্ত্রণ বিস্তার করার জন্য লড়ছে ইউক্রেন সেনারা।

তাদের আক্রমণের লক্ষ্য কাছেই একটি পাহাড়ের মাথায় রুশ সৈন্যদের সুরক্ষা দেয়ার জন্য তৈরি পরপর কিছু পরিখা।

যুদ্ধক্ষেত্রে যা দেখল বিবিসি
বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একটি ড্রোন ইউনিটের লোকেরা বেশ ক’টি ক্যামেরা তুলে নিল ট্রাকে, সাথে নিল গোটানো কেবল। পিকআপ ট্রাকে ভর্তি করল টিন ভর্তি গোলাবারুদ, বাক্স বাক্স ধোঁয়া গ্রেনেড আর সাঁজোয়া যান-ভেদী গুলি।

ওই সেনারা ছাড়া ব্লাহোদাত্নে গ্রামে জীবনের কোনো চিহ্ণ চোখে পড়ে না। রাস্তার পাশে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি ভারী অস্ত্রে সজ্জিত দু’টি সাঁজোয়া যানের ধ্বংসাবশেষ। একটি যানের অবশিষ্ট রয়েছে শুধু তার পুড়ে যাওয়া খোলসটা। মাঠের শেষ মাথায় এমন মাইন প্রতিরোধী আরো কয়েকটি যান অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে।

‘ওগুলোর ধারে কাছে যাবেন না, রুশরা এখনো ওগুলোর ওপর আঘাত হানছে’, বলে আমাদের সতর্ক করে দেয়া হলো।

৫ জুন ইউক্রেন পাল্টা অভিযান শুরু করার পর থেকে রাশিয়াও কয়েক ডজন ট্যাঙ্ক হারিয়েছে বলে স্বীকার করেছেন ভ্লাদিমির পুতিন।

ইউক্রেন সেনারা হামলা চালাচ্ছে তিনটি পয়েন্টে- বাখমুটে, যেখানে তারা শহরের উত্তর এবং দক্ষিণ মুখে আগাচ্ছে। দু’টি অংশেই রাশিয়া বেশ দৃঢ়ভাবে তার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। জাপোরিঝিয়ার দক্ষিণে এবং দক্ষিণ দোনেৎস্কে, যেখানে বেশ কয়েকটি গ্রাম ইউক্রেন পুনর্দখল করেছে।

ওই গ্রামগুলোরই একটি ব্লাহোদাত্নে। হঠাৎ এক ঝাঁক গোলা ছুটে আসে। একটা বিধ্বস্ত বাড়ির মাটির নিচের ঘরে গিয়ে আশ্রয় নিল সৈন্যরা।

সেখানে ধুলিধূসরিত একটা সরু প্যাসেজপথে তেলের বাতি জ্বলছে। হলুদ হালকা আলো সরাসরি গিয়ে পড়েছে একটা পাথর আর তার পাশেই একটা লোহার উনুনের ওপর। উনুনের ওপর তিনটি শক্তপোক্ত রান্নার পট। দড়িতে ঝুলছে কয়েকটা তোয়ালে।

ভাঙাচোরা একটা কাঠের দরজা খুলে গেল। মাথায় কাপড় দিয়ে ঘরে ঢুকলেন নিনা ফেডোরিভনা।

গত এক বছর ধরে সেখানে বাস করছেন তিনি। রুশ সৈন্যরা সেখানে এসেছিল মাত্র একবার।

তবে নিনা একবারের জন্যও গ্রাম ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবেননি।

কামানের গোলাবর্ষণ থামতে আমরা তার বাসার শেষ মাথায় একটা গলি দিয়ে বেরিয়ে গেলাম। নিনা ফেডোরিভনার বাড়ির ঠিক শেষে সব্জির খেতে একটা পরিখায় পড়ে আছে তিনজন রুশ সৈন্যর লাশ। একটি ট্রাকের গায়ে ঝোলানো ‘জেড’ অক্ষর, যেটি রাশিয়া তার সামরিক অভিযানের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করত।

বুলেট আর গোলার আঘাতে ক্ষতবিক্ষত আর গর্ত হয়ে যাওয়া একটি ট্রাক পড়ে আছে কাছেই। এখানে লড়াই হচ্ছে একদম সামনাসামনি।

গ্রামজুড়ে গোলাপ ফুল ফুটে আছে। কিন্তু সর্বত্র বাতাসে শুধু লাশের গন্ধ। ফুলের সুগন্ধ ছাপিয়ে ওই ঘ্রাণ সর্বক্ষণ নাকে এসে লাগে।

কিন্তু দেরি করার সময় কোথায়? সৈন্যদের সামনে লক্ষ্য শুধু একটাই আর সময়টা এখন শুধুই মনঃসংযোগের। তারা স্পষ্টতই তৈরি হচ্ছে বড় একটা লক্ষ্যকে সামনে রেখে।

তারা ব্লাহোদাত্নে গ্রামকে পেছনে ফেলে পূর্ব মুখে রওয়ানা দিল। চারপাশের জমিতে প্রচুর মাইন পোঁতা। যেখানে মাইন নেই, সেখানে রাস্তা পরিষ্কার সঙ্কেত দিয়ে লাঠির মাথায় লাল আর সাদা ফিতা উড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

আরেকটা পরিত্যক্ত যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি সাঁজোয়া যানের কাছাকাছি পৌঁছতেই একটা বিস্ফোরণ হলো। ভাগ্য ভালো যে বিস্ফোরণে ছিটকে পড়া যানটির টুকরোর আঘাত থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছি। সম্ভবত রুশ একটি ড্রোন থেকে আঘাত হানা হয়েছে।

আমি মার্চ মাসে ওই এলাকায় এসেছিলাম। তখন দেখেছিলাম কয়েক মাসের মধ্যে রণক্ষেত্র কয়েক মিটারও আগায়নি। লড়াই হচ্ছে স্বল্প এলাকার মধ্যে।

ইউক্রেনের সৈন্যরা মূলত পরিখায় মাথা গুঁজে থাকছিল, যতক্ষণ না গোলাবর্ষণ থামে। ওই সময় একজন কমান্ডার আমাকে বলেছিলেন, তারা পাল্টা হামলা চালানোর জন্য তাদের গোলাগুলো খরচ না করে জমিয়ে রাখছেন।

কিন্তু এবার যে দু’দিন আমি ওই সেনা ব্রিগেডের সাথে ছিলাম, দেখেছি তাদের কামান আর বন্দুক এক মুহূর্তের জন্যও থামেনি।

গাছের আড়ালে লুকানো বেশ কিছু পরিখার নেটওয়ার্ক- সেখানে দ্রুত বেগে গিয়ে আমাদের গাড়িগুলো থামল। ৪৯ বছর বয়সী সিনিয়র সার্জেন্ট আন্দ্রিই অনিস্ট্রাট তার সৈন্যদের পরের মিশনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। দক্ষিণে তিন কিলোমিটার দূরে নিচু পাহাড়ের পাদদেশে রুশ পরিখার ওপর পরের দিন আঘাত হানার পরিকল্পনা নিয়ে তারা সেখানে গেছে।

ওই ৬৮ নম্বর বিগ্রেড ব্লাহোদাত্নে আর মাকারিভকা গ্রামের পূর্ব দিকের এলাকা থেকে সামনের পুরো মাইনভূমিজুড়ে রুশ সামরিক লাইনের ওপর সরাসরি আক্রমণ চালাবে। তাদের উদ্দেশ্য রণাঙ্গন আরো বিস্তৃত করা।

সার্জেন্ট অনিস্ট্রাট ড্রোন বাহিনীর সদস্যদের যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্ক্ষ অবহিত করলেন, তাদের টার্গেট সম্পর্কে বুঝিয়ে দিলেন। যুদ্ধে তাদের টিম সেখানে প্রতিদিন পাঁচটা করে ড্রোন হারাচ্ছে।

রোদে পোড়া গায়ের চামড়া সার্জেন্ট অনিস্ট্রাটের। ঝকঝকে সাদা দাঁতের হাসিতে ঝলসে উঠল মুখ। গোমড়া মুখে থাকা দলের সদস্যদের তিনি চূড়ান্ত নির্দেশ দিলেন, ‘আরে হাসো, অমন মুখ ভার করে কেন? আমরা তো যুদ্ধে জিতছি।’

২৪ ঘণ্টা পর ওই একই লোকেদের দেখা গেল, গরমে হাসফাঁস করা সুড়ঙ্গের ভেতর। আক্রমণ তখন চলছে।

তাদের নজরদারি ক্যামেরার লেন্সের মধ্যে দিয়ে দেখলাম মাইন পোঁতা জমি ধরে দু’টি সাঁজোয়া যান ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে। রুশ অবস্থানগুলোর ওপর ওড়ানো হলো একটার পর একটা ড্রোন। সেগুলো প্রচুর ধোঁয়া উদ্রেককারী গ্রেনেড ফেলে রুশ অধিকৃত পরিখাগুলো বরাবর একটা ধোঁয়ার চাদর তৈরি করল, যাতে তাদের যানগুলো নজরের বাইরে থেকে এগিয়ে যেতে পারে এবং শত্রু পক্ষের কামান বিধ্বংসী অস্ত্রের নিশানাকে বিভ্রান্ত করতে পারে।

আমি দেখছিলাম, ইউক্রেনের বাহিনীর গোলাবর্ষণ বারবার গাছের সারিতে গিয়ে আঘাত করছিল।

তরুণ সৈনিক ইউরি, খোড়া পরিখা থেকে বারবার ছুটে বের হচ্ছিলেন ড্রোনের ব্যাটারি বদলে সেগুলো আবার আকাশে ফেরত পাঠাতে। আবার দৌড়ে ফেরত যাচ্ছিলেন সুড়ঙ্গের ভেতর। রেডিওতে শোনা যাচ্ছিল, টার্গেট নিশানা করে আঘাতের উচ্চকিত নির্দেশ।

মশা আর ঘোড়ার গায়ের ডাঁশা মশার কামড়ে জর্জরিত হচ্ছিল তারা, কিন্তু গরমের কারণে গায়ের শার্ট খুলে ফেলেছিলেন পশ্চিম ইউক্রেনের আরেক সৈন্য ফ্রিসবি।

শত্রুপক্ষও সমানতালে লড়াই করছিল। আমি যে পরিখার মুখে দাঁড়িয়েছিলাম, সেখানে একটা গোলা এসে পড়ল। এত কাছে যে পরিখাটা ধুলোয় ভরে উঠল। কিছুটা ছায়ায়, গায়ে কোনো সুরক্ষা বর্ম না পরেই দাঁড়িয়েছিলেন ঝেকা।

আবার একটা রাশিয়ান গোলা এসে পড়ল কাছে। আমি মাটিতে শুয়ে পড়লাম। মুখ তুলে দেখলাম ঝেকা ভয় পাননি, সটান দাঁড়িয়ে আছেন। মাঝের দু’টি আঙুল তুলে রুশদের উদ্দেশে ইংরেজিতে গালি দিচ্ছেন। গ্যাড রকেট থেকে ছোঁড়া ঝাঁকে ঝাঁকে গোলা বৃষ্টির মতো এসে পড়ছে ইউক্রেন বাহিনীর অবস্থানের ওপর।

ইউক্রেনের জন্য পাল্টা আক্রমণ চালানো বেশ কঠিন। কারণ ইউক্রেনের জন্য আকাশ পথে লড়াই করার সক্ষমতার অভাব রয়েছে। পাশ্চাত্যের দেশগুলো ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধ বিমান দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, কিন্তু এ বছর শেষের আগে সেগুলো ইউক্রেনে পৌঁছচ্ছে না।

পরিখার ভেতর আরেকজন সৈনিক, যার নাম ইয়ারোস্লাভ। তিনি ব্যাখ্যা করলেন, ‘রুশ হেলিকপ্টার, রুশ জেটবিমান প্রতিদিন প্রতিটি এলাকায় গোলাবর্ষণ করছে।’

কথার মাঝখানেই কাছে আরেকটা রুশ গোলা এসে পড়ল। তিনি বললেন, ‘শেল্টারে ঢুকে যাও এখন, গুড লাক।’

৩ জুন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যখন ঘোষণা করেছিলেন, ইউক্রেন পাল্টা হামলা চালানোর জন্য তৈরি, তখন তিনি আকাশ পথে লড়াইয়ে রাশিয়ার অধিকতর সক্ষমতার কথা বলেছিলেন এবং সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে ওই আক্রমণে ইউক্রেনের সৈন্যদের প্রাণ যাবে। ৬৮তম সেনা বিগ্রেডে ঠিক সেটাই হলো।

সার্জেন্ট অনিস্ট্রাট বললেন, তার জন্য এটা একটা বিরাট বোঝা।

তিনি বলেন, ‘দিনটা কতখানি কঠিন তা পুরোপুরি নির্ভর করে একটা বিষয়ের ওপর, আমাদের কত মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। গত সপ্তাহটা ছিল খুবই কঠিন। আমাদের প্রচুর সৈন্যের মৃত্যু হয়েছে।’

মাথায় তিনি একটা ব্যালিস্টিক হেলমেট পরে থাকেন, নিজের মাথার চেয়ে এক সাইজ ছোট। আমি ওই কথা বলতেই তিনি কাঁদতে শুরু করলেন। কাঁদতে কাঁদতে বললেন, ‘এটা ছিল আমার ছেলের।’

যেখানে দাঁড়িয়ে আমরা কথা বলছিলাম, পাল্টা আক্রমণ শুরু হওয়ার দু’দিন আগে তার থেকে অল্প দূরে ড্রোন হামলায় মারা গেছে তার ছেলে ২১ বছর বয়সী অস্টাপ অনিস্ট্রাট। এক বছর তিনি সেনা বাহিনীতে কাজ করেছিল। তার বাবা এখনো মাঝেমাঝেই শোকে ভেঙে পড়েন।

সার্জেন্ট অনিস্ট্রাট বলেন, ‘একটা কামিকাজি ড্রোন ওদের দিকে উড়ে গিয়ে সরাসরি ওকে আঘাত করে। ওকে চেনা যাচ্ছিল না। একটা বন্ধ কফিনে ওকে আমরা কবর দিয়েছি।’

আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘কিভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন।’

তিনি বললেন, ‘আমি একটা অঙ্গীকার করেছিলাম। আমরা এখানে জেতার জন্য লড়ছি, আমরা চুপ করে বসে থাকতে বা পালাতে পারি না। আমার মনে হয় প্রত্যেকের উচিত তাদের কাজটা পেশাদার মনোভাব নিয়ে করা। এখানে বীরত্বের কিছু নেই। আমাকে আমার কাজটা শেষ করতে হবে।’

জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি প্রতিশোধ নিতে চান?

বেশ দৃঢ়তার সাথে তিনি উত্তর দিলেন, ‘প্রতিশোধ নেয়া একটা পাপ। আমার কাজ হলো এর সমাপ্তি টানা। আমি বিজয় মিছিলে অংশ নিতে চাই। আমি চাই আমাদের জয়, আমি চাই আরো কম প্রাণহানী।’

যুদ্ধ ক্ষেত্র পেছনে ফেলে আমরা চলে এলাম। যুদ্ধ তখনো চলছে। পরে খবর পেলাম, ওরা রুশদের কাছ থেকে আবার ওই এলাকার নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়েছে।

সার্জেন্ট অনিস্ট্রাটের গাড়ি আমাদের পাহারা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। আমরা ফিরে যাচ্ছিলাম কমান্ড শিবিরে। গাড়ি চলছিল আঁকাবাঁকা পথ ধরে। হঠাৎ এক জায়গায় এসে গাড়ি আচমকা থেমে গেল। তিনি ও তার দলবল দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে গেলেন। আমি ভাবছিলাম আমাদেরও কভার নিতে হবে কি-না।

দেখলাম ওরা চেরি ফলের গাছ দেখে গাড়ি থেকে নেমে গেছে।

গাছগুলোর ঘন পাতায় ছাওয়া ডালপালার আড়াল থেকে মুঠো মুঠো টুকটুকে লাল চেরি পেড়েছে ওরা। হাত ভর্তি চেরি ফল নিয়ে শিশুর মত উচ্ছ্বাসে আর হাসিতে মেতে উঠেছেন ওরা। পেছনের পাহাড় থেকে তখন ভেসে আসছে রুশ অবস্থানের ওপর ইউক্রেনিয়দের গোলাবর্ষণ আর মর্টারের আওয়াজ।
সূত্র : বিবিসি