দ্বায়িত্বশীল আচরণ: নিজের জন্যে, অন্যের জন্যে

দ্বায়িত্বশীল আচরণ: নিজের জন্যে, অন্যের জন্যে

ফাইল ছবি

ভাষান্তর: শীপা হাফিজা

অনুগ্রহ করে দ্বায়িত্বশীল আচরন করুণ এবং নিজের পাশাপাশি অন্যের যত্ন নিন বা জীবনের সুরক্ষা নিশ্চত করুন।

মনে করুন আপনার ঘুম ভাংলো মারাত্মক কাশি, জ্বর ও আর প্রচন্ড গায়ে ব্যাথা নিয়ে। আপনি সাথে সাথে ডাক্তার দেখালেন ও দূর্ভাগ্যবশত: আপনার কোভিড (COVID19) সনাক্ত হলো/ ধরা পড়লো। বিগত দুই সপ্তাহ ধরে আপনি কোভিড সংক্রামিত হয়েও তা না জানার কারনে 'কোভিড শিষ্টাচার বা নিয়মসমুহ' কে অবজ্ঞা করেছেন। আপনি ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের নিয়ে পিৎজা খেতে গেছেন, আপনার বাসায় মেহমান এসেছে, বা ঈদের বাজার করতে গেছেন। ভেবেছেন, "আমারতো অসুস্থ লাগছেনা। জীবন আমার, ভোগ করার অধিকারও আমার, এতে অন্যেরা বলার কে। কি আর হবে।"

অসুস্থতা জানার পর ক'টা দিন আপনি ঘরে শুয়ে থাকলেন, বেশ অস্বস্তি লাগছিল। তথাপি বয়সে তরুন, স্বাস্থ্যবান ও শক্তি সম্পন্ন বিধায় সুস্থ হয়ে উঠলেন, ভাগ্যবান আপনি। কিন্তু আপনার বেস্ট ফ্রেন্ড বা সবচেয়ে ঘনিষ্ট বন্ধু আপনাকে দেখতে এসে কোভিড আক্রান্ত হলো। কিন্তু তার রোগ যে ছোয়াছে তা না বুঝেই সে তার ৮২ বছর বয়সের প্রিয় দাদূকে দেখতে গেলো, যিনি শ্বাসকষ্টের (COPD) রোগী এবং হৃদযন্ত্রকে সচল রাখতে তাকে প্রতিদিন অক্সিজেন গ্রহন করতে হয়। এখন তিনি মৃত।

আপনার সহকর্মী যার এজমা আছে, তাকেও কোভিডে ধরেছে৷ ঐ যে একসাথে পিৎজা পার্টিতে ছিল। ও এখন ICU তে, ঐ ভদ্রলোক উনার পরিবারের ক'জনকেও সংক্রামিত করেছেন, কিন্তু আরো কয়েক সপ্তাহ না গেলে (যখন রোগের জটিলতাও বেড়ে যেতে পারে) তারা বুঝতেও পারবে না যে রোগটি তাদেরকে ধরেছে।

পিৎজার সেই রেস্টুরেন্টের ক্যাশিয়ার সাহেবের স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে নার্ভের জটিল রোগে আক্রান্ত। ঔষধের কারনে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অত্যন্ত দূর্বল। ক্যাশিয়ার সাহেব আপনার নিকট হতে পাওয়া ভাইরাসটি দ্বারা অজান্তেই স্ত্রীকে সংক্রমিত করলেন। সে কিনা আপনারমত ভাগ্যবান নয় বিধায় শ্বাসকষ্টের কারনে হাসপাতালে ভর্তি ;তাকে হয়তো চিকিৎসার কারনে অচেতন করে কৃত্রিম শ্বাস প্রশ্বাসে রাখা হবে, সে তার প্রিয়জনের কাছ থেকে বিদায় নেবার সুযোগটাও পাবেনা, আত্মীয় পরিজনহীন মেশিন-পরিবেষ্টিত মৃত্যুই হয়ত হবে তার শেষ ঠিকানা।

এই সবই হয়েছে এই কিছু দিনের ধৈর্য্যের অভাবের কারনে। আপনি বিরক্ত হয়েছেন

"মাস্ক" পরতে, ঘরে বন্দী বা অন্তরীন থাকতে, কিংবা বাইরের প্রিয় আড্ডাগুলো এড়িয়ে চলতে বা বাদ দিতে। আপনার ঘুরে বেড়োনোর প্রিয় অভ্যাস/রুটিন না বদলানোর কারনে।

অবশ্যই আপনার অধিকার আছে স্বাভাবিক জীবন যাপনের, নিজের খুশীমত চলার। কারোর এখতিয়ার নাই আপনি কিভাবে চলবেন তা বদলে দেবার।

কিন্তু :

#সামাজিক দূরত্ব/ব্যাক্তি দূরত্ব রক্ষা= এটা আপনার নিজের জন্যে শুধু বলা হচ্ছেনা!

#মাস্ক পরা = এটা আপনার নিজের জন্যে শুধু বলা হচ্ছেনা!

#ঘরে থাকা = এটা আপনার নিজের জন্যে শুধু বলা হচ্ছেনা!

#টেস্ট করানো = এটা আপনার নিজের জন্যে শুধু বলা হচ্ছেনা!

অন্যের জীবনকে ঝুকিতে ফেলার কোন অধিকার নেই আপনার!!

সংগৃহীত