কানাডা-ভারত দ্বন্দ্বের প্রভাব যুক্তরাজ্যেও স্পষ্ট

কানাডা-ভারত দ্বন্দ্বের প্রভাব যুক্তরাজ্যেও স্পষ্ট

প্রতীকী ছবি।

শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জারের (৪৫) হত্যাকান্ডে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারত-কানাডা কূটনৈতিক সম্পর্ক। দুই দেশের দ্বন্দ্বের মাশুল গুনছেন সাধারণ শিখ জনগন। শুধুমাত্র পাঞ্জাবে বা নিজ দেশে নয় ,প্রবাসী শিখরাও এখন তটস্থ। ঘরে বাইরে সর্বত্রই পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ। প্রতিনিয়ত জীবনের ভয়ও করছে অনেকে। নিরাপত্তাহীনতায় দিন পার করছে কেউ কেউ। 

সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিখ হত্যাকাণ্ডে হতাশায় পড়েছেন কানাডা নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখা শিখ ছাত্ররা। ভিসা জটিলতায় পড়েছেন মহাবিপদে। কানাডায় যেতে ইচ্ছুক এমনই একজন ছাত্র গুরসিমরান সিং (১৯)। তিনি বলেন, “আমরা এখন ভয় পাচ্ছি কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা দিবে কিনা বা ভারত সরকার নতুন কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে কিনা।” 

সন্দীপ সিং (৩১) নামে একজন বলেন, “তরুণদের জন্য মোদি সরকার ‘ভয়ের পরিবেশ’ তৈরী করেছে। এখন আমরা যদি কোনো আন্দোলন করি তবে পিতামাতারা তাদের সন্তানদের পাঠাবে না। কারণ তারা ভয় পায় তাদেরসন্তানদের নিজ্জরের মতোই পরিণতি হবে।” 

নিজ্জর হত্যা বিতর্কের মাঝেই কানাডার খালিস্তানিদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। প্রবাসে বসবাসকারী অনেক ভারতীয়ই ‘ওভারসিস সিটিজেনশিপ অফ ইন্ডিয়া’ কার্ডধারী। অর্থাৎ, তারা ভারতের প্রবাসী নাগরিক। কানাডাতেও এমন বহু প্রবাসী ভারতীয় নাগরিক আছেন। তবে খালিস্তানপন্থী সভা এবং কার্যকলাপে যোগ দেওয়ায় এমন ১২ জনের ওসিআই কার্ডের বৈধতা বাতিল করছে ভারত। 

এদিকে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়ে দেয়, যাদের ইতোমধ্যে ভিসা আছে, তাদের ছাড়া নতুন করে কানাডার নাগরিকদের জন্য ভারতে আসার ভিসা পরিষেবা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। 

খালিস্তানি নেতা হত্যায় কানাডা-ভারত দ্বন্দ্বের প্রভাব যুক্তরাজ্যেও স্পষ্ট। ব্রিটিশ শিখরা দীর্ঘদিন ধরে এ বিষয়ে নানা চাপ অনুভব করছে। কেননা ভারত সরকার প্রকাশ্যে দাবি করেছে, যুক্তরাজ্য কর্তৃপক্ষ শিখ সম্প্রদায়ের মধ্যে চরমপন্থা নির্মূল করতে করবে। গুরপ্রীত জোহল নামে একজন আইনজীবী নিজের তিক্ত অতিতের কথা স্মরণ করেন।

তিনি বলেছেন, ছয় বছর আগে গুরপ্রীতের ভাই জগতার একজন সুপরিচিত খলিস্থানপন্থী অধিকার কর্মীকে বিয়ে করতে ভারতে গিয়েছিলেন। পাঞ্জাবের রামি মান্ডি শহর থেকে তার ভাইকে একটি অপরিচিত গাড়িতে জোর করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এরপর থেকেই তিনি ভারতের কারাগারে আছেন। তাকে নির্যাতন করা হয়েছে এবং স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বাধ্য করে সই করানো হয়েছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো তার নাগরিকদের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন, যেখানে যুক্তরাজ্য সরকার তা করতে ব্যর্থ হয়েছে। ব্রিটিশ শিখ সংগঠনগুলো এতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

সূত্রঃ বিবিসি।