তিস্তার স্রোতে ভেঙে গেছে গ্রামরক্ষা বাঁধ

তিস্তার স্রোতে ভেঙে গেছে গ্রামরক্ষা বাঁধ

সংগৃহীত

ভারতের সিকিম থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তা নদীর পানি বাড়ায় রংপুরের গঙ্গাচড়ায় একটি স্বেচ্ছাশ্রমের তৈরি করা গ্রামরক্ষা বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে বেশ কয়েকটি ঘরবাড়ি ও গাছপালা ভেসে যাওয়ার পাশাপাশি কয়েক শ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। আতঙ্কে দিন পাড় করছেন বাধঁটিতে বসবাস করা বাসিন্দারা।

বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে গঙ্গাচড়া লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের ইছলি চর এলাকায় এ চিত্র দেখা যায়।

স্থানীয়রা জানান, ২০১৭ সালে ফসল রক্ষার জন্য স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধটি নির্মাণ করা হয়। বৃহস্পতিবার দিবাগত ভোররাত ৪টার দিকে বাঁধটি ভেঙে যায়। এতে সঙ্গে সঙ্গে কয়েকটি ঘরবাড়ি, গবাদিপশু, গাছপালা, পুকুরের মাছ ভেসে যাওয়ার পাশাপাশি ফসলের খেত নষ্ট হয়। তবে বাঁধ রক্ষায় কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। আবার পানি বৃদ্ধি পেলে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কারণে কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

পাউবো সূত্র বলছেন, উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর চুংথাং বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বুধবার সকাল থেকে বাংলাদেশ প্রান্তে নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর আগে মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে গজলডোবা পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি ২৮৫ সেন্টিমিটার এবং দোমুহুনী পয়েন্টে বুধবার সকাল থেকে ৮২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। তিস্তার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে অন্য নদীর পানিও। এতে রংপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলো প্লাবিত হয়ে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। এ জন্য তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটায় তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫১ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ৬৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)। একই সময়ে কাউনিয়া পয়েন্টে পানি সমতলে বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ৫ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ২৮ মিটার ৭৫ সেন্টিমিটার) নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

এ ব্যাপারে লক্ষ্মীটারি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদি বলেন, আমরা জানি না কী কারণে শংকরদাহ থেকে বিনবিনিয়া পর্যন্ত একটা বাঁধ করা হয়নি। অথচ বাঁধের জন্য কয়েকবার আবেদন করা হয়েছে। ডিও লেটার নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দিয়েছে। গত বন্যায় রংপুরের জেলা প্রশাসক এসে নিজে দেখে গেছেন। কিন্তু বাঁধ নির্মাণের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ দেখছি না।

গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তামান্না নাহিদ বলেন, স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত গ্রামরক্ষা বাঁধটি ভেঙে তেমন ক্ষতি হয়নি। দুই-তিনটি ঘর পানিতে ভেঙে গেছে। এ ছাড়া বন্যার পানিতে প্রায় ১০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা জনগণকে সতর্ক করেছি।