হামাসের হাতে ১৯৯ ইসরাইলি বন্দী

হামাসের হাতে ১৯৯ ইসরাইলি বন্দী

হামাসের হাতে ১৯৯ ইসরাইলি বন্দী

ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের হাতে ১৯৯ ইসরাইলি বন্দী রয়েছে বলে স্বীকার করেছেন ইসরাইল সেনাবাহিনীর শীর্ষ মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি।সোমবার (১৬ অক্টোবর) কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, গত সপ্তাহে হামাস ইসরাইলে হামলা চালানোর পর থেকে এই পর্যন্ত গোষ্ঠীটির হাতে ১৫৫ জন ইসরাইলি বন্দী হয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা বন্দীদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছি। তাদেরকে আশ্বস্ত করেছি যে আমরা এমন কোনো আক্রমণ করব না, যা আমাদের জনগণকে বিপন্ন করবে।’

হাগারি বলেন, ‘গাজায় বন্দীরা কোথায় আছে, আমরা তা জানার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা ইতোমধ্যে তাদের অবস্থান সম্পর্কে কিছু তথ্যও পেয়েছি।’

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরাইলের বিমান হামলায় গাজায় কমপক্ষে দুই হাজার ৩২৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন নয় হাজার ৭১৪ জন। নিহতের মধ্যে সাত শতাধিক শিশু ও পাঁচ শতাধিক নারী রয়েছে বলেও জানানো হয়।

এখন পর্যন্ত যত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে ৬৬ শতাংশই নারী ও শিশু বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

এ দিকে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেশটির পদাতিক বাহিনী গাজায় স্থানীয়ভাবে অভিযান চালিয়েছে। যদিও তারা দাবি করেছে, হামাসের অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে। তবে নির্বিচার এসব হামলায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। অব্যাহত বিমান হামলার মধ্যেই গাজায় স্থল অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরাইল। এর অংশ হিসেবে গাজা সীমান্তের কাছে তিন লাখ সেনা ও অন্যান্য যুদ্ধাস্ত্র জড়ো করেছে তারা।

সম্ভাব্য স্থল অভিযানের আগে, গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে ১১ লাখ মানুষকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরাইল। তাদের এমন নির্দেশনার পর কয়েক হাজার মানুষ সরে গেলেও, বেশির ভাগ ফিলিস্তিনি তাদের নিজ বাড়িতেই অবস্থান করছেন।

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের এক কর্মকর্তা বলেছেন, আমরা গাজার উত্তরাঞ্চলের এবং গাজা শহরের জনগণকে নিজেদের বাড়িতে থাকতে বলেছি। ইসরাইল বলেছে, শনিবারও তাদের পদাতিক বাহিনী এবং ট্যাংকগুলো, গাজা উপত্যকার অভ্যন্তরে অভিযান চালিয়েছে।

এর আগে ইসরাইল ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলের ১০ লাখের বেশি বাসিন্দাকে ওই অঞ্চল ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। তবে হামাস জানিয়েছে, ইসরাইলের এমন হুমকিতে ভীত নন ফিলিস্তিনিরা। তারা ইসরাইলের আহ্বানে সাড়া দেয়নি।

এ দিকে শুক্রবার লেবাননে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর হামলায় ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক ফটোসাংবাদিক নিহত এবং আলজাজিরা, রয়টার্স, এপিসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ইসরাইলের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করেছে বলে ঘোষণা করে। এর প্রতিরোধে পাল্টা হামলা শুরু করেছে ইসরাইল।

এক বিবৃতিতে হামাসের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফ বলেন, গত শনিবার (৭ অক্টোবর) সকালে ইসরাইলে পাঁচ হাজার রকেট বর্ষণের মাধ্যমে ‘অপারেশন আল-আকসা স্ট্রম’ শুরু হয়েছে। এ সময় ইসরাইল গাজা থেকে অনুপ্রবেশের কথা স্বীকার করে।

সূত্র : আলজাজিরা