বাগেরহাটের হযরত খান জাহান আলী মাজারের পুরুষ কুমিরের মৃত্যু

বাগেরহাটের হযরত খান জাহান আলী মাজারের পুরুষ কুমিরের মৃত্যু

ফাইল ছবি

বাগেরহাটের ঐতিহাসিক হযরত খান জাহান (র.) এর মাজারের দিঘিতে পুরুষ কুমিরটি মারা গেছে। বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে দিঘির দক্ষিণ-পশ্চিম কোনো কুমিরটির মরদেহ ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, উপজেলা প্রশাসন, মাজার কর্তৃপক্ষ, খাদেমসহ দর্শনার্থীরা ছুটে আসেন দিঘীর ঘাটে। সন্ধ্যায় দিঘির উত্তর পাড়ে কুমিরটিকে তোলা হয়েছে।

কুমিরটির মৃত্যুর কারণ জানতে ময়নাতদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা ভেটেনারি কর্মকর্তা মনোহর চন্দ্র মন্ডল।

মাজারের প্রধান খাদেম শের আলী ফকির বলেন, ‘কুমির আটকে রেখে মানুষের কাছ থেকে পয়সা নেওয়া হতো। প্রায় ৭-৮ মাস ধরে মুস্তাফা ফকিরের পুকুরে আটকানো ছিল কুমিরটি। এতদিন ধরে কুমির এক জায়গায় থাকে না। আমরা এ বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগও করেছি। এই কুমির মেরে ফেলা হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।’

কুমিরটির মৃত্যুর বিষয়ে জানার জন্য মোস্তফা ফকিরের বাড়িতে গেলে তাকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। এ সময় তার স্ত্রী শাকিলা বেগম বলেন, ‘দুপুরে দীঘিতে আমার ননদ কুমিরটির মরদেহ ভাসছে দেখে আমাকে জানায়। কীভাবে কুমিরটি মারা গেছে সেই বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। কুমিরটি এতদিন আমার স্বামী মোস্তফা ফকিরের দায়িত্বে ছিল তিনি গত কয়েকদিন আগে কুষ্টিয়া গেছেন।’ 

বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আজিজুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে এসেছেন। এখানে মাদ্রাজ থেকে আনা দুটি কুমির ছিল একটি বড় একটি ছোট। বড় কুমিরটি মারা গেছে। এখানে খাদেমদের অভিযোগ আছে। কুমিরের ময়না তদন্ত করা হবে। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া।

খ্রিষ্টীয় ১৪ শতকের প্রথম দিকে নিজের শাসনামলে হযরত খানজাহান এই দিঘিতে ‘কালাপাহাড়’ ও ‘ধলাপাহাড়’ নামে দুটি কুমির ছাড়েন বলে কথিত আছে। সেই থেকে কুমির এই মাজারের ঐতিহ্য। এখানকার কুমির দেখতে দেশ-বিদেশের হাজারো দর্শণার্থী নিয়মিত বাগেরহাটে আসেন। 

২০১৫ সালে ৫ ফেব্রুয়ারি ঐতিহ্যবাহী হয়রত খান জাহান (র.) এর মাজারের দিঘির শতবর্ষী কুমিরের শেষ বংশধর ‘ধলা পাহাড়’ মারা যায়। এরপর থেকে ভারত থেকে আনা দুটি কুমির ছিল এখানে।