গাজীপুরে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভে গুলি, নিহত ১

গাজীপুরে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভে গুলি, নিহত ১

সংগৃহীত

গাজীপুরে বেতন–ভাতার বাড়ানোর দাবিতে জরুল কোনাবাড়ি এলাকায় বিক্ষোভের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মোসা. আঞ্জুয়ারা খাতুন (২৪) নামে এক নারী পোশাকশ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় জামাল উদ্দিন (৩৮) নামে আরও এক শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০ জন।

নিহত আঞ্জুয়ারা খাতুন ইসলাম গার্মেন্টস লিমিটেডের সেলাই মেশিন অপারেটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার চর নাটিপাড়া এলাকার জামাল হোসেনের স্ত্রী।

আজ বুধবার ১২টা ও সাড়ে ১২টার দিকে দুজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই নারী গার্মেন্টস কর্মীকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকা থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুজন ঢাকা মেডিকেলে এসেছিল। এদের মধ্যে ইসলাম গার্মেন্টসের আনজুয়ারা বেগম নামে এক নারীকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গুলিবিদ্ধ জামাল উদ্দিনের জরুরি বিভাগের চিকিৎসা চলছে।’

গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. মাহবুব আলম বলেন, ‘পুলিশ ও শ্রমিকদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনার সময় এক নারী শ্রমিক গুরতর আহত হন। তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

গুলিবিদ্ধ জামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমি ইসলাম ইসলাম গার্মেন্টসে চাকরি করি। সকালে অফিসে যাওয়ার সময় পুলিশের গুলিতে আমি গুলিবিদ্ধ হই। পরে প্রথমে উদ্ধার করে আমাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়েছে। বর্তমানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসা নিচ্ছি।’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় মজুরি বাড়ানোর দাবিতে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করে আসছেন। এরপর গতকাল মঙ্গলবার পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ করে সরকার। কিন্তু এতে সন্তুষ্ট না হয়ে বুধবার সকাল থেকে কোনাবাড়ি, জরুন ও বাইমাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা আবারও বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে শ্রমিকরা বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে কাঠ ও টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেয়।

এছাড়া বিভিন্ন যানবাহন ভাঙচুরের চেষ্টা করে তারা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ।  শ্রমিকরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে । এসময় শ্রমিক-পুলিশের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়াও হয়। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। তাদের কয়েকজনকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

কোনাবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম আশরাফ উদ্দিন জানান, শ্রমিকরা আঞ্চলিক সড়কগুলোতে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করেছিলেন। এছাড়া ভাঙচুরের চেষ্টা করেন তারা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়েছে।