রুনা লায়লার জন্মদিনে শিল্পীদের ভালোবাসা

রুনা লায়লার জন্মদিনে শিল্পীদের ভালোবাসা

ছবিঃ সংগৃহীত।

উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা।তিনি শুধু উপমহাদেশেই নন, বাংলা গানকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ছড়িয়ে দিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। বাংলা গান তার কণ্ঠে পরিবেশিত হয়ে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে।

 

সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা পাঁচ দশকেরও বেশি সময় করে কণ্ঠের সৌরভ ছড়িয়ে মুগ্ধ করে রেখেছেন বিশ্বের বেশ কয়েকটি ভাষার গানপ্রেমীদের। তিনি দীর্ঘ সংগীত জীবনে ১৮টি ভাষায় ১০ হাজারেরও বেশি গান করেছেন। ‘দমাদম মাস্ত কালান্দার’ খ্যাত এ গুণী সংগীত তারকা গান তারকা কুড়িয়েছেন কোটি কোটি মানুষের ভালোবাসা।

আজ (১৭ নভেম্বর) এ শিল্পীর জন্মদিন। জীবনের বিশেষ দিনটির প্রথম প্রহরে পরিবারের সদস্য, প্রিয়জনদের শুভেচ্ছায় ভাসছেন রুনা লায়লা। সেই সঙ্গে রুনা লায়লার পরের প্রজন্মের খ্যাতিমান শিল্পীরাও তাকে শুভেচ্ছায় ভাসাচ্ছেন।

সবার প্রিয় শিল্পী রুনা লায়লার জন্মদিনে সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভেচ্ছা, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাচ্ছেন শিল্পীরা। এদের মধ্যে রয়েছেন- স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রর শিল্পী তিমির নন্দী। তিনি জন্মদিনে রুনা লায়লাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেছেন, আজ ১৭ই নভেম্বর, উপমহাদেশের কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী শ্রদ্ধেয় রুণা লায়লা আপার শুভ জন্মদিনে আন্তরিক প্রীতি, শুভেচ্ছা এবং শ্রদ্ধা।

খ্যাতিমান সংগীতশিল্পী, সুরকার ও সংগীত পরিচালক নকিব খান রুনা লায়লার জন্মদিনে লিখেছেন, শুভ জন্মদিন রুনা আপা। আমাদের গভীর শ্রদ্ধা নিন জীবন্ত কিংবদন্তি।

খ্যাতিমান শিল্পী রবি চৌধুরী রুনা লায়লাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে লিখেছেন, আমাদের একজনই রুনা লায়লা আছেন। যাকে নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারি। আজকে আপনার জন্মদিন এই দিনটি বার বার ফিরে আসুক। আল্লাহ আপনাকে সুস্থ রাখুক দীর্ঘায়ু কামনা করছি। ভালো থাকবেন সব সময় শুভকামনা।

শ্রোতা নন্দিতশিল্পী ডলি সায়ন্তী রুনা লায়লার জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেছেন, শুভ জন্মদিন এবং শ্রদ্ধা- রুনা আপা।

শিল্পী দিনাত জাহান মুন্নি রুনা লায়লার জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেছেন- শুভ জন্মদিন শ্রদ্ধেয় রুনা লায়লা। সুরে, সৌন্দর্যে, সত্যে, সম্ভাষণে, ভালোবাসায়, স্নেহে, সম্মানে, গৌরবে আপনি আমাদের পরিচয়। শুভ জন্মদিন। আল্লাহ আপনাকে সুস্থ এবং সুন্দর রাখুন– আমিন।

ক্লোজআপ তারকা সালমা রুনা লায়লার জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেছেন, শুভ জন্মদিন ম্যাডাম। আপনি আমাদের বাংলাদেশ। আপনি আমাদের আমাদের অহংকার। ছোটবেলা থেকে আপনার গান অনেক মঞ্চে গেয়েছি, এখন ও গাচ্ছি প্রতিদিন। আপনাকে আমি অনেক ভালোবাসি। আমি অনেক কিছু প্রকাশ করতে পারি না, আজকে বলে দিলাম, আমি আপনাকে ভীষণ ভালোবাসি। আপনার সুরে গান করার অপেক্ষায় আছি। নিজেকে একটু একটু করে রেডি করছি ম্যাডাম। আপনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। সবসময় অনেক ভালো থাকুন।

এ প্রজন্মের শ্রোতাপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী সানিয়া সুলতানা লিজা তিনি রুনা লায়লার জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেছেন, শুভ জন্মদিন উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী, বাংলাদেশের গৌরব ম্যাডাম রুনা লায়লা। আমার ছোট্ট সংগীতজীবনে আপনার একটু সান্নিধ্য পাওয়া পরম আনন্দের। আপনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

ক্লোজআপ তারকা খ্যাত কণ্ঠশিল্পী সাব্বির জামান প্রখ্যাত গায়িকা রুনা লায়লাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেছেন, শুভ জন্মদিন আমাদের সংগীতের রানি। আপনি  এ জাতির গর্ব। আপনি সমস্ত বিশ্বে বাংলাদেশের কণ্ঠস্বর রুনা আপা। মহান সৃষ্টি কর্তা আপনার মঙ্গল করুন।

 

সেরাকণ্ঠ খ্যাত কণ্ঠশিল্পী ঝিলিক লিখেছেন, শুভ জন্মদিন আমাদের সংগীতের জীবন্ত কিংবদন্তি। আপনি আমাদের গানের রানি। স্রষ্টা আপনার মঙ্গল করুন। আমরা আপনাকে ভালোবাসি।

শিল্পী কিশোর দাশ জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেছেন, শুভ জন্মদিন ‘দ্যা রুনা লায়লা ম্যাম’। আপনার দেওয়া উৎসাহ ও আশীর্বাদ আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। জন্মদিনে আনেক আনন্দ ফিরে আসুক।

তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন রুনা লায়লা। বাবা সৈয়দ মোহাম্মদ এমদাদ আলী ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা এবং মা আনিতা সেন ওরফে আমেনা লায়লা ছিলেন সংগীত শিল্পী। তার মামা সুবীর সেন ভারতের বিখ্যাত সংগীত শিল্পী।

 

রুনা লায়লার যখন আড়াই বছর বয়স তার বাবা রাজশাহী থেকে বদলি হয়ে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের মুলতানে যান। সে সূত্রে তার শৈশব কাটে পাকিস্তানের লাহোরে।

 

১৯৭৪ সালের শুরুতে প্রয়াত সত্য সাহার সুরে ‘জীবন সাথী’ সিনেমায় গান গাওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে প্রথম প্লেব্যাক করেন তিনি। গানের কথা ছিল ‘ও জীবন সাথী তুমি আমার’।

 

এ গানে তার সঙ্গে কণ্ঠ দেন খন্দকার ফারুক আহমেদ। তবে পাকিস্তানের ‘যুগ্নু’ সিনেমায় ছোটবেলায় রুনা লায়লা প্রথম প্লেব্যাক করেন। এরপর পাকিস্তান ও বাংলাদেশের অসংখ্য সিনেমায় তিনি প্লেব্যাক করেছেন।

সংগীতে আকাশছোঁয়া সাফল্য অর্জন করা শিল্পী রুনা লায়লা নাচেও বেশ পারদর্শী। চার বছর বুলবুল একাডেমি করাচিতে ভরতনাট্যম, কত্থক, কত্থকলি শিখেছিলেন এ তারকা। ইচ্ছে ছিলো নৃত্যশিল্পী হবেন। নন্দিত এই শিল্পী অভিনয় করেছেন ‘শিল্পী’ নামক চলচ্চিত্রেও।

ক্যারিয়ারজুড়ে পেয়েছেন নানান পুরস্কার। এসবের মধ্যে রয়েছে দেশ থেকে চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার। এছাড়া ভারত থেকে পেয়েছেন সায়গল পুরস্কার। পাকিস্তান থেকে অর্জন করেছেন নিগার, ক্রিটিক্স, গ্র্যাজুয়েটস পুরস্কারসহ জাতীয় সংগীত পরিষদ স্বর্ণপদক।