স্বামীর দেওয়া আগুনে ২ সন্তানের পর স্ত্রীর মৃত্যু

স্বামীর দেওয়া আগুনে ২ সন্তানের পর স্ত্রীর মৃত্যু

সংগৃহীত

লক্ষ্মীপুরে বসতঘরে কামাল হোসেন নামে এক অটোরিকশা চালকের দেওয়া আগুনে দগ্ধের ৪ দিন পর তার স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার মুন্নি (৩৪) মারা গেছেন।

শনিবার (২ ডিসেম্বর) রাতে চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তহিদুল ইসলাম ও বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃতের বাবা মোস্তফা সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের মোহাম্মদনগর এলাকার বাসিন্দা। গ্রেপ্তার কামাল একই বাড়ির আমিন উল্ল্যাহর ছেলে ও পেশায় অটোরিকশা চালক।

এদিকে ঘটনার দিন ২৮ নভেম্বর ঘটনাস্থল সদর উপজেলার বশিকপুর গ্রামে তার মেয়ে আয়েশা আক্তার (৭) ও ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছেলে আব্দুর রহমান (৩) মারা যায়। ঘটনার পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ অভিযুক্ত বাবা কামালকে আটক করে। একইদিন ১৬৪ ধারায় কামাল ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। ৩০ নভেম্বর মুন্নির বাবা গোলাম মোস্তফা বাদী হয়ে কামালের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলাতে কামাল লক্ষ্মীপুর জেলা কারাগারে আছেন। মামলাটিতে অজ্ঞাত আরও ২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

জানা যায়, মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) ভোররাতের দিকে সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বশিকপুর গ্রামের পুরান চতইল্লার বাড়িতে কামাল ঘরের ভেতর পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন। তখন তার ছেলে আব্দুর রহমান, মেয়ে আয়েশা ও স্ত্রী মুন্নি ঘরে ঘুমিয়েছিলেন। ঘুমন্ত স্ত্রী-ছেলেমেয়েকে ঘরে রেখেই তিনি বের হয়ে বাইরে থেকে দরজা লাগিয়ে দেন। এতে আগুনে দগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে তার মেয়ে, ঢাকা মেডিকেলে ছেলে ও ঘটনার ৪ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্ত্রী মারা যান।

বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান বলেন, কামাল মাদকসেবী ছিল। স্ত্রীর সঙ্গে তার পারিবারিক কলহ চলছিল। এর জের ধরেই ঘরে আগুন লাগিয়ে স্ত্রী-সন্তানদের আটকে রাখে। ওই আগুনেই দগ্ধ হয়ে তার ছেলে-মেয়ে ঘটনার দিন মারা গেছে। ঘটনার ৪ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার স্ত্রী মুন্নিও মারা গেছে। মুন্নির মরদেহ ঢাকা মেডিকেলে ময়নাতদন্তের করা হবে। সেখান থেকে মরদেহ তার বাবার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানেই তার দাফন হবে।

পোদ্দার বাজার পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, কামালকে ঘটনার পরপরই আটক করা হয়। পরে হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তিনি এখন জেলা কারাগারেই আছেন।