মডেল তাসনিয়ার আত্মহত্যার কারণ

মডেল তাসনিয়ার আত্মহত্যার কারণ

ফাইল ছবি।

গত শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) ভোরে ধানমন্ডির বাসা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় মডেল তাসনিয়া তানজিম ওরফে তাসনিয়া রহমানের মরদেহ। ওই সময় পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয় তিনি আত্মহত্যা করেছেন। 

তবে হঠাৎ করে উঠতি বয়সি তরুণী এই মডেল কেন আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন, তা নিয়ে শোবিজ অঙ্গনে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।

সম্প্রতি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউল্যাবের এক ছাত্রের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান তিনি। কিন্তু সংবাদমাধ্যমে তাসনিয়ার নানা অপরাধ প্রকাশ্যে আসতেই সেই ছাত্র তাকে ছেড়ে গেলে লাইভে এসে আত্মহত্যার ঘোষণা দেন। 

সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, তরুণী মডেল তাসনিয়া পেশাদার ব্ল্যাকমেইলিংয়ের সঙ্গে জড়িত। মূলত ধনাঢ্য পুরুষদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ব্ল্যাকমেইল করে হাতিয়ে নিতেন লাখ লাখ টাকা। আরেক তদন্তকারী সংস্থা পিবিআইয়ের তদন্তেও উঠে আসে একই চিত্র। 

জানা যায়, ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন তাসনিয়া। নানান সময় ব্যাবসায়ীদের বিরুদ্ধে দেওয়া তার মামলাগুলো একের পর এক প্রতারণা ও মিথ্যা মামলা প্রমাণ হওয়া শুরু করে পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে। তদন্তে উঠে আসে ২০২০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি গুলশান থানায় এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক আমজাদ হোসেনের নামে ধর্ষণের মামলা করেন তাসনিয়া। 

পরে পিবিআইয়ের তদন্তে এই মামলাটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়। চার মাস পর একই বছরের ৭ সেপ্টেম্বর ইফতেখারুল আলম নামে আরেক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে পর্নো ছবি ছড়ানোর অভিযোগে সাইবার মামলা করেছিলেন তাসনিয়া। কিন্তু সিআইডির তদন্তে বেরিয়ে আসে ইফতেখারের সঙ্গেও প্রেমের সম্পর্ক ছিল তাসনিয়ার। করেছেন বিদেশ ভ্রমণও। বিভিন্ন সময় তার থেকে অন্তত ২০ লাখ টাকা নানান সময় হাতিয়ে নিয়ে ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেন।

এ ছাড়া শোবিজ অঙ্গনের আরেক মডেল ইশরাত পায়েলের স্বামীর সঙ্গেও সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন তাসনিয়া। এ বিষয়ে ইশরাত পায়েলের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার একটি কলরেকর্ডও ফাঁস করেন তিনি। সেই সঙ্গে পায়েল দেশে ফিরলে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেন তিনি। একের পর এক বিতর্কে জড়ানোর পর বেশ কিছু দিন ধরেই তাসনিয়া রহমান তার ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম আইডি ডিঅ্যাক্টিভ করে আড়ালে চলে যান। 

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেটশন (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার জানান, বিভিন্ন সময় মডেল তাসনিয়ার দেওয়া ধর্ষণ ও ব্ল্যাকমেইল মামলাগুলো আমরা তদন্ত করেছি। দেখা গেছে, তিনি যাদের আসামি করেছেন, তারা সবাই সমাজের বিত্তশালী এবং উচ্চবিত্ত লোক। তাদের সঙ্গে তার ভালো সখ্যতা ছিল। তাদের বিরুদ্ধে সে ভুল তথ্য দিয়ে মামলাগুলো করেছেন। ভুল তথ্য দিয়ে যাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, তারা চাইলে বাদীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করতে পারেন। তার দেওয়া মামলাগুলোর কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।