মাঘের কনকনে ঠান্ডায় কাপছে লালমনিরহাট

মাঘের কনকনে ঠান্ডায় কাপছে লালমনিরহাট

সংগৃহীত

মাঘ মাস আসার পর থেকেই উত্তরের জেলা লালমনিরহাটে জেঁকে বসেছে শীত। ঘন কুয়াশা থাকায় সূর্যের দেখা মেলেনি গত ১১ দিনেও। এতে দিনের বেলায় যানবাহনের হেডলাইন জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে সড়ক-মহাসড়কে। প্রয়োজন ছাড়া ঘর ছাড়ছেন না অনেকেই। 

এই শীতে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর, খেটে-খাওয়া, নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষেরা। আর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীত নিবারনে এসব অসহায় মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করলেও চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট নয়। ঘরে ঘরে দেখা দিয়েছে ঠান্ডাজনিত রোগ। 

বুধবার সকাল ৬ টায় লালমনিরহাটে তাপমাত্রা পরিমাপ করা হয় ১১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এবছর জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। তাপমাত্রার বিষয়টি রংপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান নিশ্চিত করেছেন।

হাড় কাঁপানো এই শীতে জেলার গ্রাম-গঞ্জে ঘুরে দেখা গেছে কনকনে ঠান্ডায় ও কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে সর্বত্র। সড়ক-মহাসড়কের যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। বিশেষ করে নদীর চরাঞ্চল এবং তীরবর্তী লোকালয়ের মানুষ ধুকছে ঠান্ডার প্রকোপে। কনকনে ঠান্ডা আর ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে পুরো জেলা। ঠান্ডার কারনে শিশুসহ বয়োজ্যেষ্ঠদের দেখা দিয়ে শীতজনিত নানা রোগ। এতে হাসপাতালের ইনডোর-আউটডোরে ভির দেখা গেছে সেবাগ্রহীতাদের। এছাড়া গত ১১ দিন ধরে সূর্যের দেখা না মেলায় তীব্র শীতে ভোগান্তি বেড়েছে জনজীবনে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকে ঘন কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে রাস্তা-ঘাট, লোকালয়। সেই সঙ্গে হিমেল বাতাসে জবুথবু অবস্থা বিরাজ করছে মানুষের।

লালমনিরহাট আদিতমারী উপজেলার বুড়িরহাট এলাকার বাসিন্দা কুদরত আলী বলেন, কনকনা ঠান্ডাত জীবোনটা একেবারে শ্যাষ হয়া গেইল বাহে! এ্যাদোন ঠান্ডাত কি আর হামার মতো বুড়াগুলার জীবন চলে। একই বাজারে কথা হয় আরেক বৃদ্ধ আজিজার রহমানের সাথে। 

তিনি বলেন, জারোত হাত-ঠ্যাংগোত ছ্যাংগা ধরছে। আইতোত এক কড়োত ঘুরা যায় না ঠান্ডার চোটে। 

জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের তিস্তা চরাঞ্চলের বাসিন্দা আজাদুর রহমান (৫২) বলেন, ঠান্ডাত কষ্টের আর শ্যাষ নাই। ঠান্ডাত আবাদ সুবাদ সউগ শ্যাষ হয়া যাবার নাগছে! ঠান্ডাত জীবন বাঁচে না, আর কি কাম করমো। 

রংপুর আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায় লালমনিরহাটে আজ সকাল ৬টায় ১১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা এই মৌসুমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ বলেন, জেলার অসহায় ও নিম্নআয়ের মানুষদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে পাচ উপজেলায় ২৬ হাজার কম্বল বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যা বিতরণ প্রায় শেষের দিকে। আরো ৫০ হাজার কম্বলের চাহিদা পাঠানো হয়েছে বলেও জানান ডিসি।