আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত নারী এমপি হচ্ছেন যারা

আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত নারী এমপি হচ্ছেন যারা

ফাইল ছবি

আগামী সপ্তাহে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, সংরক্ষিত নারী আসনের ভোটের বিষয়টি কমিশন সভার মাধ্যমে চূড়ান্ত হবে। ইতোমধ্যে সংসদ সদস্য যারা ভোটার তাদের তালিকা কমিশনে এসেছে। সেটার খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে। খসড়া তালিকা নিয়ে কারও কোনো আপত্তি না থাকলে সেটি চূড়ান্ত করা হবে।

এদিকে একাদশ জাতীয় সংসদে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাপ্ত আসনের অনুপাতে দলগুলো তাদের সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য মনোয়ন চুড়ান্ত করার কাজ করছে। জানা গেছে, আওয়ামী লীগ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে আসন পেয়েছে সেই আসন সমানুপাতিক হারে ৩৭ টি সংরক্ষিত আসনে তারা মনোনয়ন দিতে পারবে। আর স্বতন্ত্ররা যে আসনগুলোতে বিজয়ী হয়েছেন সেখান থেকে ১১ টি আসনে মনোনয়ন দিতে পারবেন স্বতন্ত্ররা। জাতীয় পার্টি মনোনয়ন দিতে পারবে দুই আসনে।

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের যে ৩৭ জন নারী সংসদ সদস্য মনোনয়ন পাবেন বা নারী সংসদ সদস্য হিসেবে সংসদে যাবেন, তারা কোন যোগ্যতার ভিত্তিতে যাবেন—এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারক মহল একটি বৈশিষ্ট্য চূড়ান্ত করেছে, যে সমস্ত বৈশিষ্ট্য থাকলে একজন নারী সংসদ সদস্যকে মনোনয়নের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। এই অগ্রাধিকারের পাঁচটি বড় বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে বলে দলটির একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

এক. আগে কখনও সংসদ সদস্য হননি তারা সংরক্ষিত কোটায় প্রথম অগ্রাধিকার পাবেন।

দুই.দলের বিভিন্ন ক্রান্তিকালে যারা ভূমিকা পালন করেছেন তারা আছেন বিবেচনায়। জানা গেছে, পঁচাত্তরের পরবর্তী সময়ে যারা ভূমিকা রেখেছেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত সংসদ সদস্য হননি, ২০০১ সালের নির্বাচনের পর যারা নির্যাতিত নিপীড়িত হয়েছেন, কিন্তু এখনও পর্যন্ত নারী সংরক্ষিত কোটায় সংসদ সদস্য হননি, ২০০৭ সালে এক-এগারো সময় যারা বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন ধরনের সংসদ সদস্য বা জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হতে পারেননি—এমন নারীদেরকে অগ্রাধিকার দিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।

তিন. দলের জন্য নিজ স্বার্থ ত্যাগ করে বড় ধরনের অবদান রেখেছে যারা তারাও আছেন বিশেস বিবেচনায়। এছাড়া যে সমস্ত নারীরা সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিল্প, সংস্কৃতি, সাহিত্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এবং সৃজনশীলতার জন্য আলোচিত, সামাজিক ভাবে প্রশংসিত তারা এবারের নারী সংসদ সদস্য হিসাবে আগ্রাধিকার পাবেন।

চার. জেলার ত্যাগী নারী কর্মীদের মূল্যায়ন করতে যাচ্ছে দলটি। জানা গেছে, যে সমস্ত স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা বিভিন্ন সময়ে ত্যাগ স্বীকার করেছেন এবং দলের আদর্শ প্রতি অনুগত ছিলেন, তারা নারী সংসদ সদস্য হিসেবে অগ্রাধিকার পাবেন।

পাঁচ. দল বা সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অবদান রেখেছেন সে সমস্ত নারীরাও পাবেন অগ্রাধিকার। এই তালিকায় রয়েছেন সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সাবেক বিচারক কিংবা অন্য কোন ক্ষেত্রে সমাজে অবদান রেখেছেন তিনি হতেন পারে চিকিৎসক, হতেন পারে স্থপতি, হতে পারেন সরকারি চাকুরে বা অবসর প্রাপ্ত বিচারক তারাও নারী সংসদ সদস্য হিসেবে অগ্রাধিকার পাবেন। এছাড়াও বিগত সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে যে সমস্ত নারী সংসদ সদস্যদের আসন ছেড়ে দিতে হয়েছে বা নানা রকম কৌশলগত কারণে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন কিন্তু দলের জন্য তাদের অবদান রয়েছে তারাও নারী সংসদ সদস্য হিসেবে বিবেচিত হবেন।

এর আগে, গত ৭ জানুয়ারি দেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২২৩টি এবং জাতীয় পার্টি ১১টি আসনে জয় পেয়েছে। এ ছাড়া জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি এবং কল্যাণ পার্টি একটি করে আসন পেয়েছে। ৬২টি আসনে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

এ ছাড়া একজন প্রার্থীর মৃত্যুতে স্থগিত হওয়া নওগাঁ-২ আসনের ভোট আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।