জিম্মিদের মুক্তির আগে কোনো শান্তি চুক্তি নয়: ইসরায়েল

জিম্মিদের মুক্তির আগে কোনো শান্তি চুক্তি নয়: ইসরায়েল

ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হাতে আটক সব জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার পরই গাজা ইস্যুতে শান্তি চুক্তির বিষয় বিবেচনা করবে ইসরায়েল। শুক্রবার (৩১ মে) দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (৩০ মে) এক বিবৃতিতে হামাস জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত আর কোনো আলোচনায় অংশ নিতে রাজি নয় তারা। তবে ইসরায়েল যদি গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ করে, তাহলে সব জিম্মিকে ছেড়ে দেওয়ার পাশাপাশি স্থায়ী শান্তি চুক্তির জন্য প্রস্তুত রয়েছে তারা।

বিবৃতিতে হামাস আরও বলেছে, ‘গাজায় আমাদের জনগণ, পরিবার-পরিজনদের ওপর গণহত্যা চলছে। যারা বেঁচে আছে, তারা প্রতিদিন আগ্রাসন, দুর্ভিক্ষ ও দখলদারিত্বের শিকার হচ্ছে। হামাস ও ফিলিস্তিনের অন্যান্য নেতৃস্থানীয় বিভিন্ন গোষ্ঠী মনে করে, এই পরিস্থিতিতে গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনায় হামাসের অংশগ্রহণ সার্বিক অবস্থার কোনো পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম হবে না।’

হামাস জানায়, ‘আমরা আমাদের মধ্যস্থতাকারীদের জানিয়ে দিয়েছি, যদি দখলদার বাহিনী গাজায় আগ্রাসন বন্ধ করে, তাহলে গাজা ইস্যুতে একটি সম্পূর্ণ শান্তি চুক্তির জন্য আমরা প্রস্তুত। এই চুক্তিতে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া নিয়ে বিস্তৃত সমঝোতাও যোগ হবে।’

হামাসের এই বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের অবস্থান স্পষ্ট করেন আইডিএফের ওই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘সবার আগে জিম্মিদের মুক্তি দিতে হবে। না হয় গাজায় অভিযান থামবে না, কোনো চুক্তিও হবে না।’

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, এক সপ্তাহেরও বেশি সময় আগে থেকে গাজার দক্ষিণ সীমান্ত শহর রাফায় অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। লাখ লাখ বেসামরিক ফিলিস্তিনি শহরটিতে অবস্থান করছেন। গাজার বিভিন্ন এলাকায় গত প্রায় ৮ মাস ধরে ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান অভিযানের ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে রাফায় এসে আশ্রয় নিয়েছেন এসব ফিলিস্তিনিরা।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইজিসে) রাফায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান বন্ধের আদেশ দিয়েছেন। কিন্তু সেই রায় উপেক্ষা করে সেখানে সেনা অভিযান অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

কয়েকদিন আগে রাফায় ইসরায়েলি বাহিনীর বোমায় ৪০ জনেরও বেশি বেসামরিক ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। ওই ঘটনার পর থেকে বিশ্বজুড়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা চলছে। এ ঘটনার পর গাজায় যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল হামাস-ইসরায়েল। হামাস চাইছে আগে শান্তি চুক্তি, পরে জিম্মিদের মুক্তি। অন্যদিকে ইসরায়েল চাইছে আগে জিম্মিদের মুক্তি, পরে শান্তি চুক্তি।