আরাফার রোজা সম্পর্কে হাদিসে যা আছে

আরাফার রোজা সম্পর্কে হাদিসে যা আছে

ছবি: সংগৃহীত

জিলহজ মাসের ৯ তারিখ ইয়াওমে আরাফা বা আরাফাতের দিন। আরাফার ময়দানে সমবেত হওয়া হজের প্রধান কাজ। এ দিনটিতে রোজা রাখা মোস্তাহাব। এ বছর (১৪৪৫ হিজরি, ২০২৪ খৃষ্টাব্দ) সৌদি আরবে অবস্থানকারীদের জন্য আরাফার দিন হলো আগামী ১৫ জুন, শনিবার। বাংলাদেশে ১৬ জুন, রোববার। যারা আরাফার দিনের রোজা রাখতে চান, তারা শনিবার শেষ রাতে সেহেরি খেয়ে রোববার রোজা পালন করবেন।

চাঁদ দেখার ভিন্নতা অনুসারে যে দেশে যেদিন জিলহজ মাসের ৯ তারিখ অর্থাৎ ঈদুল আজহার পূর্ববর্তী দিনটিই ‘আরাফার দিন’ গণ্য হবে। ওই দিন রোজা রাখার বিশেষ ফজিলত বর্ণিত হয়েছে হাদিসে। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন- صِيَامُ يَوْمِ عَرفَةَ اَحْتَسِبُ عَلَى اللهِ اَنْ يُّكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِىْ قَبْلَهُ وَالسَّنَةَ الَّتِىْ بَعْدَه ‘আরাফার দিন কেউ রোজা রাখলে আমি আশাবাদী যে আল্লাহ তার পূর্ববর্তী বছর ও পরবর্তী বছরের গুনাহ মাফ করে দেবেন।’ (সহিহ মুসলিম: ২৬১৭)

আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) বলেন- مَا مِنْ يَوْمٍ أَكْثَرَ مِنْ أَنْ يُعْتِقَ اللَّهُ فِيهِ عَبْدًا مِنَ النَّارِ مِنْ يَوْمِ عَرَفَةَ وَإِنَّهُ لَيَدْنُو ثُمَّ يُبَاهِي بِهِمُ الْمَلَائِكَةَ فَيَقُولُ: مَا أَرَادَ هَؤُلَاءِ ‘আরাফার দিনের মতো আর কোনো দিন এত অধিক পরিমাণে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয় না। আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার নিকটবর্তী হন এবং বান্দাদের নিয়ে ফেরেশতাদের কাছে গর্ব করেন। আল্লাহ বলেন, কী চায় তারা? (অর্থাৎ তারা যা চায়, তাই তাদের দেওয়া হবে) (সহিহ মুসলিম: ১৩৪৮)

আরাফার রোজা মূলত একটি। শুধু ৯ই জিলহজের রোজাই আরাফার রোজা। তবে জিলহজের প্রথম দশকের প্রতিটি দিনই ফজিলতপূর্ণ, তাই কেউ চাইলে আগে ৭ বা ৮ জিলহজও রোজা রাখতে পারেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন-  يَعْدِلُ صِيَامُ كُلِّ يَوْمٍ مِنْهَا بِصِيَامِ سَنَةٍ وَقِيَامُ كُلِّ لَيْلَةٍ مِنْهَا بِقِيَامِ لَيْلَةِ الْقَدْرِ ‘(জিলহজের প্রথম নয় দিনের) প্রতিদিনের রোজা এক বছরের রোজার এবং এর প্রত্যেক রাতের নামাজ কদরের রাতের নামাজের সমতুল্য। (সুনানে তিরমিজি: ৭৫৮)

উম্মুল মুমিনীন হাফসা (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে, নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম) প্রতি বছরই জিলহজের প্রথম নয় দিন রোজা রাখতেন। তিনি বলেন-  أَرْبَعٌ لَمْ يَكُنْ يَدَعُهُنَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صِيَامَ عَاشُورَاءَ وَالْعَشْرَ وَثَلَاثَةَ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ وَرَكْعَتَيْنِ قَبْلَ الْغَدَاةِ ‘নবীজি (স.) কখনো চারটি আমল পরিত্যাগ করেননি। সেগুলো হলো, আশুরার রোজা, জিলহজের প্রথম দশকের রোজা, প্রতি মাসে তিন দিন রোজা, ও ফজরের পূর্বের দুই রাকাত নামাজ।’ (সুনানে নাসাঈ: ২৪১৬)

হজযাত্রীদের জন্য হজ পালনের সুবিধার্থে আরাফার রোজা না রাখা উত্তম। স্বয়ং রাসুলুল্লাহ (স.)-এরও আরাফায় অবস্থানকালীন রোজা না রাখা সম্পর্কে বিশুদ্ধ হাদিস রয়েছে। (বুখারি: ১৯৮৮)