রেকর্ড উল্টে ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে সুইসরা

রেকর্ড উল্টে ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে সুইসরা

সংগৃহীত

দীর্ঘ ৩১ বছর পর ইতালি ফাঁড়া কাটলো সুইসদের। দুর্দান্ত সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে হেরে ২০০৪ সালের পর এই প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালের আগেই ইউরোর মঞ্চ থেকে বিদায় নিতে হলো বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের। সেইসঙ্গে নিজেদের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো বড় টুর্নামেন্টে নির্ধারিত ৯০ মিনিট খেলেই কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করল সুইজারল্যান্ড।

জার্মানির রাজধানী বার্লিনে আজ ইউরোর নকআউট পর্বের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইতালি ও ডার্কহর্স সুইজারল্যান্ড। বল মাঠে গড়াতেই নতুন ইতিহাস লেখার প্রত্যয় চোখে পড়ছিল সুইস ফুটবলারদের খেলায়। ম্যাচের প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন এমবোলো, ভারগাস, ফ্রেউলাররা। আক্রমণের পাশাপাশি মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রক্ষণটাও বেশ ভালোই সামাল দিচ্ছিল সুইস একাদশ। তাদের ৩-৪-২-১ ফরমেশনের সামনে ভোঁতাই মনে হচ্ছিল তিন ফরোয়ার্ড নিয়ে সাজানো ইতালির আক্রমণভাগ।

ম্যাচে গোল করার প্রথম বড় সুযোগটাও তৈরি করে সুইজারল্যান্ডই। ২৪তম মিনিটে এবিশারের বাড়ানো বল পেয়ে যান সুইসদের তরুণ স্ট্রাইকার এমবোলো। কিন্তু তার শটটা দারুণ রিফ্ল্যাক্সে আটকে দেন ইতালিয়ান রক্ষণ দুর্গের অতন্ত্র প্রহরী ডোন্নারুমা। নয়তো তখনই এগিয়ে যায় সুইসরা। অবশ্য ইতালির ক্লাসিক রক্ষণভাগটা ভাঙতে খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি এমবোলো-ভার্গাসদের।

ম্যাচের ৩৭তম মিনিটে বাম দিক থেকে আক্রমণে গিয়ে ইতালিয়ান ডি বক্সের মাঝ বরাবর ক্রস করেন ভারগাস। দৌড়ে বলটা দারুণভাবে কন্ট্রোল করেন ফ্রেউলার, আর সঙ্গে সঙ্গে শট। এবার আর বাধা হতে পারেননি ডোন্নারুমা। প্রথম গোলের দেখা পেয়ে যান মুরাত ইয়াকিনের শিষ্যরা।

প্রথমার্ধ শেষের আগ মুহূর্তে আরেকবার ইতালিয়ান রক্ষণে কাঁপন ধরান সুইস মিডফিল্ডার ফাবিয়ান রেইডার। কিন্তু এবারও দারুণ এক ডাইভ দিয়ে ইতালিকে রক্ষা করেন ডোন্নারুমা। শেষ পর্যন্ত এক গোল এগিয়ে থেকেই প্রথমার্ধ শেষ করে সুইজারল্যান্ড।

দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতেই আবার আঘাত সুইসদের। বল মাঠে গড়ানোর মাত্র ২৭ মিনিটের মাথায় ইতালিয়ান ডি বক্সের বাইরে থেকে জোরালো এক কোনাকুনি শট নেন ভারগাস। নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও বলটা রুখতে পারেননি ডোন্নারুমা।

দুই গোলে পিছিয়ে পড়ার পর যেন হুঁশ ফেরে ইউরোর ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের। কিছুটা গুছিয়ে উঠে আক্রমণাত্মক খেলা শুরু করেন সামাকা, কিয়েসারা। কিন্তু ভাগ্যবিধাতাও যেন ততক্ষণে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে আজ্জুরিদের দিক থেকে। নয়তো দুই দুইটা নিশ্চিত গোল আটকে যায় গোলবারে লেগে! ম্যাচের ৫১ তম মিনিটে আত্মঘাতী এক গোলই খেতে বসেছিল সুইসরা। কিন্তু ফ্যাবিইয়াব স্কারের হেডারটা আটকে যায় বারে লেগে। ৭৪ তম মিনিটে আবারও আজ্জুরিদের হতাশ করে সুইস গোলবার। এবার খুব কাছ থেকে নেওয়া সামাকার শট হিট করে গোলবার। এরপর আর তেমন কোনও সুযোগই তৈরি করতে পারেনি দুদলের কেউ।

সুইসদের দুর্দান্ত এ জয়ে দুই দশক পর কোয়ার্টার ফাইনালের আগেই ইউরো যাত্রা সাঙ্গ হলো আজ্জুরিদের। তিন দশক পার করে সিঁকে ছিড়লো সুইসদেরও। এর আগে সবশেষ ১৯৯৩ সালে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ইতালির বিপক্ষে জয়ের মুখ দর্শন হয়েছিল তাদের।