ওজন কমাতে টক দইয়ের উপকারিতা

ওজন কমাতে টক দইয়ের উপকারিতা

ছবিঃ সংগৃহিত।

আমাদের সবার প্রিয় টক দই। দারুণ জনপ্রিয় এ টক দই আমরা কমবেশি সবাই খাই। বিশেষ করে নারীরা ওজন কমাতে টক দই খেয়ে থাকেন। আমরা ওজন কমাতে টক দই খেলেও আসলেই কি টক দই খেলে ওজন কমে; কিংবা টক দই কি দেহের চর্বি ভাঙতে সাহায্য করে? 

এ সম্পর্কে জানালেন ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ তামান্না চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘দইয়ের স্বাদ মিষ্টি করতে চিনি যোগ করা হয়। টক দইয়ে এই বাড়তি চিনি না থাকায় তা মিষ্টি দইয়ের তুলনায় স্বাস্থ্যকর। আর যে কোনো দই তৈরি হয় দুধ থেকে। অর্থাৎ দুধে যে পরিমাণে স্নেহপদার্থ রয়েছে, তা দিয়ে দই তৈরি করলেও একই পরিমাণ স্নেহপদার্থ থাকবে।’

এ পুষ্টিবিদ বলেন, ‘মিষ্টি দইয়ের চেয়ে টক দইকে এগিয়ে রাখার সুযোগ নেই। তাছাড়া এটাও মনে রাখতে হবে, টক দইয়ের এমন কোনো বৈশিষ্ট্যও নেই, সরাসরি যার প্রভাবে দেহের চর্বি কমতে পারে বা ওজন কমতে পারে।’

তবু কেন ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়—এমন প্রশ্নে তামান্না চৌধুরী বলেন, ‘একবেলার নাশতার বিকল্প হিসেবে যদি কেউ টক দই খান, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই তার ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ কমে আসবে। যেমন ভাজাপোড়া খাবার কিংবা ফাস্টফুডের পরিবর্তে যদি কেউ টক দই খাওয়ার অভ্যাস করেন, তাহলে ক্যালরি গ্রহণের মোট পরিমাণ কমে আসে। এভাবে ওজন কমাতে সহায়ক হতে পারে টক দই।’

একইভাবে অন্য কোনো বেলায় খাওয়ার সময়েও যে কোনো একটি উপাদানের স্বাস্থ্যকর বিকল্প হতে পারে টক দই। কেউ হয়তো চিড়া আর কলার সঙ্গে দই খেতে চান। এ ক্ষেত্রে যদি তিনি মিষ্টি দইয়ের পরিবর্তে টক দই বেছে নিতে পারেন, তাহলে অবশ্যই বাড়তি চিনির ক্যালরিটুকু এড়াতে পারবেন। আবার সালাদ ড্রেসিংয়ের ক্ষেত্রে মেয়োনেজের স্বাস্থ্যকর বিকল্প হতে পারে টক দই।

তামান্না চৌধুরী বলেন, ‘ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো— প্রতিদিন ক্যালরি গ্রহণকে একটি পরিমিত সীমার মধ্যে রাখা। পর্যাপ্ত হাঁটাহাঁটি বা অন্যান্য ব্যায়ামও জরুরি। সব দিক ঠিক থাকলে তবেই ওজন কমবে।’

আরও কিছু নিয়ম আছে যেগুলো মেনে টক দই খেলে দ্রুত ওজন কমবে:

১. টমেটো কুচি, পেঁয়াজ কুচি, জিরা গুঁড়ো, কাঁচা মরিচ কুচি, চাট মসলা এবং বেশি করে টক দই একসঙ্গে মিশিয়ে বানিয়ে নিন রায়তা। ওজন কমাতে সাহায্য করবে এই খাবার।

২. ফল ওজন কমানোর পাশাপাশি সামগ্রিক স্বাস্থ্যও ভালো রাখে। আপনার প্রিয় ফল কেটে দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে দিন। আপেল, কিউই, কলা, পেয়ারা, ডালিম, তরমুজের সঙ্গে দই মিশিয়ে খেতে পারেন। ওজন কমানোর জন্য এই খাবার আদর্শ। কারণ, এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ।

৩. গ্রানোলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। দইয়ের সঙ্গে গ্রানোলার মিশ্রণ লো-ক্যালরিযুক্ত স্বাস্থ্যকর খাবার। সুগার-ফ্রি, লো-ফ্যাট বা কম চিনিযুক্ত গ্রানোলা খাওয়াই সবচেয়ে ভালো।

৪.  দইয়ের সঙ্গে খেজুর, আখরোট এবং অন্যান্য ড্রাই ফ্রুটস খেতে পারেন। ড্রাই ফ্রুটস, বাদামে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, প্রোটিন এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা শরীরের অতিরিক্ত ফ্যাট ও ক্যালরি পোড়াতে কার্যকর।

৫. ওজন কমাতে ওটসের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। আর যদি টক দইয়ের সঙ্গে ওটস মিশিয়ে খাওয়া হয়, তাহলে তো আরও উপকার পাবেন।