ইলিশ রপ্তানি করতে চায় ব্যবসায়ীরা, সরকার রাজি নয়

ইলিশ রপ্তানি করতে চায় ব্যবসায়ীরা, সরকার রাজি নয়

ফাইল ছবি

ইলিশ রপ্তানিতে করতে চান ব্যবসায়ীরা। তবে দেশের বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার শঙ্কায় এখনই এই সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে না সরকার।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুধু ইলিশ মাছ রপ্তানি করতে না পারার কারণে তাদের অনেক রপ্তানি আদেশ বাতিল হয়ে যাচ্ছে।

তবে সরকার চাইছে, দেশের সব মানুষের জন্য ইলিশ মাছ সহজলভ্য করার পর রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিতে।

বিবিসি বাংলা বলছে, দেশে মা ইলিশ ও জাটকা ধরায় কড়াকড়ির কারণে গত কয়েক বছর ধরে ইলিশের উৎপাদন অনেক বেড়েছে। মৌসুমে এমনকি বড় ইলিশের দাম প্রত্যাশার চেয়েও কম দামে কেনা সম্ভব হচ্ছে।

বিশ্বের যেসব দেশে বাঙালিরা বসবাস করেন, সেই সব দেশেই মূলত ইলিশের চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আমেরিকা, ইউরোপের দেশগুলো, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকায় এই চাহিদা সবচেয়ে বেশি। কিন্তু রপ্তানির কারণে দেশের বাজারে ইলিশের জোগান কম থাকা এবং দাম বেড়ে যাচ্ছে এমন অভিযোগে ২০১২ সালের ১ আগস্ট থেকে ইলিশ রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর এখন পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়নি।

তবে এখন ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং দাম কমে যাওয়ার কারণে সীমিত আকারে ইলিশ রপ্তানির সুযোগ চান ব্যবসায়ীরা ইলিশের বাংলাদেশ থেকে বিদেশে মাছ রপ্তানিকারকরা।

বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘আমাদের কাছে যেসব মাছ রপ্তানির আদেশ আসে, সেখানে কেউ তো শুধু এক ধরনের মাছ কেনে না। বোয়াল, শিং, শোল, কৈ, পাবদা, চিংড়ির সঙ্গে বলা হয় এক টন বা হাফ টন ইলিশ দাও। এসব মিলিয়ে একটা মিক্সড কনটেইনার হয়।’

‘কিন্তু দেখা যায়, শুধু ইলিশ মাছ দিতে না পারার কারণে আমাদের পুরো অর্ডারটাই বাতিল হয়ে যায়। ক্রেতারা তখন মিয়ানমার বা অন্য দেশ থেকে অর্ডার করে নেয়’ যোগ করেন তিনি।

ব্যবসায়ীদের দাবি, বাংলাদেশ ইলিশ মাছ রপ্তানির সুযোগ না পাওয়ায় স্বাদে কম হলেও ইলিশের সেই বাজারটি দখল করে নিয়েছে মিয়ানমার। সেই সঙ্গে তাদের অন্যান্য মাছ রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এই কারণেই ব্যবসায়ীরা সীমিত আকারে ইলিশ রপ্তানি করতে দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছেন। তবে তাদের এই দাবির সঙ্গে এখনো পুরোপুরি একমত নন সরকারি কর্মকর্তারা।

তারা মনে করছেন, বাংলাদেশ থেকে এখনো ইলিশ রপ্তানির সময় আসেনি। কারণ সেটি করা হলে এখনো ইলিশের মতো মজাদার মাছটি তৃণমূল মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাবে।

বাংলাদেশের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ বলেন, ‘যদিও রপ্তানির বিষয়টি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ব্যাপার, তবে ঠিক এই মুহূর্তে রপ্তানির বিষয়ে আমরা ভাবছি না। দেশের মানুষের কাছে আরও সহজলভ্য করার পরে হয়তো এটা ভাবা হবে।’

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ব্যবসায়ীদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে ইলিশ রপ্তানির সুযোগ দেওয়া যায় কিনা, মৎস্য মন্ত্রণালয়ের কাছে সেটা জানতে চেয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু তার ফলে ইলিশের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সেই চিন্তা থেকে সরে এসেছে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা