বিয়ের আসরে অদ্ভুত কাণ্ড, ২০ বছর পর হারিয়ে যাওয়া মেয়েকে পাওয়া মায়ের

বিয়ের আসরে অদ্ভুত কাণ্ড, ২০ বছর পর হারিয়ে যাওয়া মেয়েকে পাওয়া মায়ের

বিয়ের আসরে অদ্ভুত কাণ্ড, ২০ বছর পর হারিয়ে যাওয়া মেয়েকে পাওয়া মায়ের-

কেটে গিয়েছে টানা ২০ বছর। মেয়ে আর ফিরবে না ধরে নিয়েই শোক ভুলেছিলেন চীনের এক মহিলা। একমাত্র ছেলেকে নিয়ে দিন কাটছিল তাঁর। কিন্তু গোল বাঁধল ছেলের বিয়ের দিন। যিনি বউমা হতে চলেছেন, সেই পাত্রী নাকি হারানো মেয়ে!

জিয়াংশু প্রদেশের সুঝাউ এলাকার বাসিন্দা ওই মহিলা। ছেলের বিয়েতে আড়ম্বরের কোনও অভাব রাখেননি। চলে এসেছিলেন অতিথিরাও। হইহুল্লোড়ে জমে উঠেছে গোটা পরিবেশ। এরমধ্যেই কনের সাজে সবার সামনে এলেন পাত্রী। ভাবী বউমার মুখ দেখে তো ভিরমি খাওয়ার মতো অবস্থা মহিলার! মুখের আদল যে তাঁর খুব চেনা! এ মেয়ে তো হারিয়ে যাওয়া তাঁরই মেয়ে! কয়েকবার চোখ ডলে আবারও দেখতে লাগলেন। না, তিনি কোনও ভুল দেখছেন না। 

মেয়ের মুখে ওই দাগটা তো জন্মের পর থেকেই ছিল। সঙ্গে সঙ্গে কনের বাবা-মা’কে তলব করেন ওই মহিলা। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। প্রথমে তাঁরা মুখ খুলতে চাননি। পরে চাপাচাপি করতেই বেরিয়ে আসে সত্য ঘটনা। কনের বাবা-মা স্বীকার করে নেন, বেশ কিছু বছর আগে রাস্তার ধারে কুড়িয়ে পেয়েছিলেন একরত্তি মেয়েটিকে। তারপর নিজেদের সন্তান হিসেবেই তাঁকে প্রতিপালন করেছেন।

ঘটনাটি কানে কানে ছড়িয়ে পড়ে অতিথি-অভ্যাগতদের মধ্যে। বিয়েবাড়িতে তখন হুলস্থুল কাণ্ড। গোটা বিষয়টি জানানো হয় কনেকেও। সব শুনে নিজেকে আর সামলে রাখতে পারেননি তিনি। জন্মদাত্রীকে পেয়ে কান্নাকাটি জুড়ে দেন কনে। তাঁর কথায়, ‘বিয়ে যে কোনও মেয়ের কাছেই সবচেয়ে আনন্দের মুহূর্ত। কিন্তু, এতবছর পর নিজের মাকে খুঁজে পেয়ে আমার আরও বেশি আনন্দ হচ্ছে।’

তা হলে বিয়ের কী হবে? ভাই-বোনে বিয়ে তো সম্ভব নয়। বুঝতে পেরে অতিথিরাও ধীরে ধীরে কেটে পড়তে শুরু করেছেন। তখনই আবার নতুন চমক। পরিত্রাতার ভূমিকায় হাজির হলেন ছেলেটির মা। প্রায় দু’দশক আগের আরও এক রহস্য ফাঁস করলেন তিনি। কী সেই রহস্য? মহিলা জানান, এই ছেলেটিকে তিনি জন্ম দেননি। হারানো মেয়ের শোক ভুলতে তাঁকে দত্তক নিয়েছিলেন। কিন্তু, ঘুণাক্ষরেও তা কাউকে আঁচ করতে দেননি। সেই থেকে তিলে তিলে আপন ছেলের মতো করেই তাঁকে বড় করে তুলেছেন। 

অতএব, ভাই-বোনের আর কোনও প্রশ্নই নেই। ফের বেজে ওঠে বিয়ের সানাই। অতিথিরাও নতুন করে মেতে ওঠেন আনন্দে। দিনভর নানা বাধা-বিঘ্ন টপকে শেষ পর্যন্ত চারহাত এক হয়। হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন নব দম্পতি। -বর্তমান