টানা বৃষ্টিতে ক্রমেই ভয়াবহ হচ্ছে মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতি, গোয়ায় বন্যা

টানা বৃষ্টিতে ক্রমেই ভয়াবহ হচ্ছে মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতি, গোয়ায় বন্যা

বন্যা দুর্গত এলাকা থেকে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে- সংগৃহীত ছবি

ক্রমেই ভয়াবহ আকার নিচ্ছে মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতি। করোনার দাপটের মাঝেই দোসর প্রবল বর্ষণ ও ভূমিধস। যার ফলে শনিবার পর্যন্ত সরকারী হিসাব মতে মৃতের সংখ্যা ছিল ১১২। তবে বেসরকারী হিসেবে মৃত্যু প্রায় ১৪০ জন। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখনও নিখোঁজ অন্তত ৯৯ জন। কমপক্ষে ৫৫জন গুরুতর আহত। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে উদ্ধারকাজ। এখনও পর্যন্ত প্রায় দেড় লক্ষ মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে আনতে পেরেছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। খবর সংবাদ প্রতিদিন

লাগাতার বৃষ্টিতে ভূমিধসের কারণে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত রায়গড় জেলা। সেখানেই মৃতের সংখ্যা বেশি। ইতিমধ্যেই সেই জেলার তালিয়া গ্রামের পরিস্থিতি ঘুরে দেখে গিয়েছেন মহারাষ্ট্র মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। ভূমিধসে বিপর্যস্ত সমগ্র এলাকা। উদ্ধার হয়েছে ৪২টি মৃতদেহ। এখনও নিখোঁজ ৯৯ জন। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এটা বড়সড় বিপর্যয়। স্থানীয়দের পুনর্বাসনের দায়িত্ব নেবে সরকার। প্রত্যেককেই সাহায্য করা হবে। আজ, রবিবার রত্নগিরির চিপলুন এলাকা পরিদর্শন করবেন ঠাকরে।

রায়গড়ের পাশাপাশি করুণ অবস্থা রত্নগিরি, সিন্ধুদুর্গ, সাতারা, কোলাপু, সাংলি, পুণে ও থানের। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল থেকে রত্নগিরি ও রায়গড়ের জন্য ২ কোটি টাকা পরিস্থিতি সামলাতে বরাদ্দ করা হয়েছে। অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত জেলার জন্য ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। রত্নগিরিতে তৈরি হয়েছে ৬টি ত্রাণ শিবির। বিপর্যয় মোকাবিলা, উপকূলরক্ষী বাহিনী, নৌসেনা বাহিনী-সহ মোট ২১টি দল উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে।

রায়গড়ের ভূমিধসে নিহত ও গুরুতর আহতদের জন্য আগেই আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেছে কেন্দ্র সরকার। এবার ঠাকরেও ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যবাসীর পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিলেন। যতটা সম্ভব বেশি মানুষকে নিরাপদে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে আরও বড় বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়। কিন্তু একাধিক জেলায় জলের স্তর যেখানে বাড়ছে, তাতে উদ্ধারকাজ ক্রমেই কঠিন হয়ে পড়ছে বলেই জানা যাচ্ছে।

এদিকে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে ভারতের আরেক রাজ্য গোয়ায়। গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে ধস নেমেছে গোয়ার বিভিন্ন এলাকায়। ভেসে গেছে বহু বাড়ি। কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে ইতিমধ্যেই। মান্ডবী, দুধসাগর, খান্দেপার, চাপোরা, বলবন্তীর মতো বেশ কয়েকটি নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। খবর আনন্দবাজার

আজ উত্তর গোয়ার বিচোলিম তালুকায় গিয়ে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সবন্ত। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, ১৯৮২ সালের পরে এত ভয়ানক পরিস্থিতি কখনও হয়নি রাজ্যের। এমনকি সেই সময়েও এত ক্ষয়ক্ষতি হয়নি যা গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে হয়েছে। বিভিন্ন ডুবে যাওয়া এলাকা থেকে সরানো হয়েছে কমপক্ষে ৪০০ জন মানুষকে।

ভারী বৃষ্টি চলছে কর্নাটকেও। রেল পরিষেবা বিপর্যস্ত সেখানও। এর মধ্যে মধ্যপ্রদেশের ২৪টি জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির ‘অরেঞ্জ অ্যালার্ট’ জারি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানকার আগর-মালওয়া জেলায় ২১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বন্যার আশঙ্কায় সতর্ক প্রশাসন।