ফাইজার-অ্যাস্ট্রাজেনেকার অ্যান্টিবডি ৬ সপ্তাহেই কমতে পারে

ফাইজার-অ্যাস্ট্রাজেনেকার অ্যান্টিবডি ৬ সপ্তাহেই কমতে পারে

ফাইজার-অ্যাস্ট্রাজেনেকার অ্যান্টিবডি ৬ সপ্তাহেই কমতে পারে-

ফাইজার ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার দুটি ডোজ নেওয়ার পর দেহে তৈরি হওয়া সামগ্রিক অ্যান্টিবডির মাত্রা ছয় সপ্তাহের মধ্যেই কমা শুরু হতে পারে। আর ১০ সপ্তাহের মধ্যে তা ৫০ শতাংশ কমে যেতে পারে।

স্বাস্থ্যবিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেটে প্রকাশিত এক গবেষণায় এমন তথ্য মিলেছে। গবেষণাটি করেছেন ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের (ইউএলসি) বিজ্ঞানীরা। তারা বলেন, যদি অ্যান্টিবডির মাত্রা এভাবে কমতে থাকে, তবে টিকার সুরক্ষা প্রভাবও হ্রাস পাওয়া শুরু করবে। বিশেষ করে নতুন ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে এই আশঙ্কা বেশি দেখা দেবে। খবর এনডিটিভির

তবে এই সুরক্ষা কতটা দ্রুত কমতে পারে, তা নিয়ে কোনো ভবিষ্যদ্বাণী করা যাচ্ছে না বলে দাবি করেন গবেষকেরা। ইউএলসির ভাইরাস ওয়াচ গবেষণা বলছে, ভারতে কোভিশিল্ড নামে পরিচিত অ্যাস্ট্রাজেনেকার দুটি ডোজের চেয়ে ফাইজারের দুই ডোজে অ্যান্টিবডির মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।

বিজ্ঞানীরা বলেন, সার্স-কভ-২ সংক্রমণের আগের চেয়ে টিকা নেওয়ার পর মানুষের অ্যান্টিবডির মাত্রা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। ইউএলসি ইনস্টিটিউট অব হেলথ ইনফোরম্যাটিকসের মধুমিতা শ্রুতি বলেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকা কিংবা ফাইজারের দুটি ডোজ নেওয়ার পর প্রাথমিকভাবে মানুষের অ্যান্টিবডির মাত্রা অনেক বেশি থাকে। করোনায় মারাত্মক অসুস্থতার ক্ষেত্রে মানুষ একারণেই খুব সুরক্ষিত থাকতে পারে এবং সেদিক থেকে পুরোপুরি টিকা নেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, কিন্তু আমরা দেখতে পেয়েছি, অ্যান্টিবডির এই মাত্রা ছয় সপ্তাহের মধ্যে উল্লেখযোগ্যহারে কমেছে। ১৮ ও এর ওপরের বয়সের ৬০০ এর বেশি মানুষের ওপর গবেষণার ভিত্তিতে এ ফল পাওয়া গেছে এবং সব শ্রেনির সব মানুষের ক্ষেত্রেই তা একই বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

তবে এভাবে অ্যান্টিবডি কমে যাওয়ার বাস্তবিক প্রভাব কী, তা এখনো পরিষ্কার হওয়া সম্ভব হয়নি। গবেষণার লেখকেরা বলছেন, অ্যান্টিবডির কিছুটা হ্রাস প্রত্যাশিতই। কিন্তু বর্তমান গবেষণায় দেখা গেছে, মারাত্মক রোগের বিরুদ্ধেও টিকা কার্যকর রয়ে গেছে।

ইউএলসি ইনস্টিটিউট অব হেলথ ইনফোরম্যাটিকসের অধ্যাপক রব অলরিজ বলেন, যখন আমরা বুস্টার ডোজ দেওয়ার কথা বিবেচনা করবো, তখন প্রথম দিকের টিকা নেওয়াদেরই বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। বিশেষ করে যারা অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা নিয়েছিলেন, তাদের অ্যান্টিবডির মাত্রা সর্বনিম্ন রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

গবেষকেরা জানান, বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বলছে যে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা বয়স্ক লোকজন—যাদের বয়স ৭০ বছরের বেশি—বৃদ্ধাশ্রমের বাসিন্দাদের বুস্টার ডোজ দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে। পাশাপাশি যারা অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা নিয়েছেন, ফাইজারের গ্রহীতাদের চেয়ে তাদের অ্যান্টিবডি সর্বনিম্ন বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে। কাজেই বুস্টার ডোজ দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারের তালিকায় তাদের নামও রাখা যায়।

অধ্যাপক রব অলরিজ বলেন, যখন বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হবে, তখন কাদের অ্যান্টিবডি কমে গেছে, তাদের কথাই সবার আগে বিবেচনা করতে হবে।