নির্বাচনী সংঘর্ষ, নির্বাচনী অফিসে আগুন ভাঙচুর ককটেল বিস্ফোরণ গুলিবিদ্ধসহ আহত ১৫

নির্বাচনী সংঘর্ষ, নির্বাচনী অফিসে আগুন ভাঙচুর ককটেল বিস্ফোরণ গুলিবিদ্ধসহ আহত ১৫

নির্বাচনী সংঘর্ষ, নির্বাচনী অফিসে আগুন ভাঙচুর ককটেল বিস্ফোরণ গুলিবিদ্ধসহ আহত ১৫

পাবনা প্রতিনিধি:পাবনার সুজানগর উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনী সহিংসতা বেড়েই চলেছে। রোববার রাতে দু’টি  ইউনিয়নে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। রাত সাড়ে ১১ টার দিকে হাটখালী ইউনিয়নের স্বগতা বাজারে এবং রাত সাড়ে ৮টার দিকে মানিকহাট ইউনিয়নে বনকোলা বাজারে এসব সহিংসার ঘটনা ঘটে।

রাত সাড়ে ৮টার দিকে মানিহাট ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনায় ৩ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত: ১৫ জন অঅহত হয়েছে। এ সময় বিদ্রোহী প্রার্থীর লোকজন নৌকার নির্বাচনী অফিস ভাংচুর ও আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ করেছেন, অপরদিকে একই অভিযোগ স্বতন্ত্র প্রার্থীরও।

গুলিবিদ্ধ আহতরা হলেন বনকোলা গ্রামের মিলন খানের ছেলে মোতালেব (৩৭), আব্দুল মজিদের ছেলে সাগর (৩৫) ও মৃত আব্দুর রহমান খানের ছেলে ফজলু (৫৫)। আহত মোতালেবের অবস্থা অবনতি হলে তাকে প্রথমে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী শফিউল ইসলাম বলেন, আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্বাস আলী মল্লিকের বাড়ি বনকোলা এলাকায় হওয়ায় তারা আমাদের একটি নির্বাচনী অফিসে ভাংচুর করে নৌকায় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। মুহুর্তের এ খবর ছড়িয়ে পড়লে নৌকার কর্মী সমর্থকরা বিক্ষোভ সহকারে বনকোলা বাজারের দিকে গেলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন আমাদের উপর অতর্কিতভাবে গুলি বর্ষণ শুরু করে। এ সময় মিছিলের লোকজন দিগি¦দিক ছুটাছুটি করে নিরাপদ আশ্রয় নেয়। তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় আমাদের প্রায় ১০ জন কর্মী সমর্থক আহত হয়। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করে বিতর্ক সৃষ্টির চেষ্টা সফল হবে না।

অভিযোগ অস্বীকার করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্বাস আলী মল্লিক বলেন, রাত আনুমানিক সাড়ে ৮ টার দিকে নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা অতর্কিতভাবে বনকোলা বাজারে এসে আমার সমর্থকদের লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ শুরু করে ও আমার নির্বাচনী প্রচারণার অফিস ভাংচুর করে। তারা আমার কর্মীদের কুপিয়ে ও গুলি করে আহত করেছে। নিশ্চিত পরাজয় জেনে নৌকার প্রার্থী আমাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছেন। আমি বিষয়টি লিখিত আকারে নির্বাচন অফিস ও থানায় অভিযোগ করবো বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে  পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সুজানগর উপজেলার হাটখালী ইউনিয়নে নৌকা অফিস ভাংচুর ও ককটেল বিষ্ফোরণ করার অভিযোগ ঘোড়া প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজনের বিরুদ্ধে। রাত সাড়ে ১১ টার দিকে ওই ইউনিয়নের স্বগতা বাজারে এই ঘটনা ঘটে।

নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আব্দুর রউফ মুঠোফোনে বলেন, আমাদের লোকজন অন্য এলাকায় নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় বের হলে ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থীর লোকজন স্বশস্ত্র অবস্থায় এসে ককটেল বিষ্ফোরণের মাধ্যমে ত্রাস সৃষ্টি করে নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা ও ভাংচুর করে চলে যায়। স্থানীয় লোকজন চরম আতংকিত হয়ে পড়ে। এ সময় সন্ত্রাসীরা নৌকার অফিস ভাংচুর করে বীরদর্পে চলে যায়। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। আমার বিজয় সুনিশ্চিত দেখে স্বতন্ত্র প্রার্থী আজাহার আলী শেখ ও তার লোকজন নির্বাচনটিকে বিতর্কিত করতেই এমন কাজ করে চলেছে। আমি সুষ্ঠু নির্বাচন চাই বলেই ঝামেলা এড়িয়ে চলার  চেষ্টা করছি বলেও জানান তিনি। তারপরও স্বতন্ত্র প্রার্থী আজাহার আলী শেখ নির্বাচনী মাঠে নিশ্চিত পরাজয় দেখে বিএনপি-জামাতের লোকজনকে সাথে নিয়ে একের পর এক নাশকতা করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ তাদের এই নাশকতা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী আজাহার আলী শেখ এসব অীভযোগ অস্বীকার করে বলেন,‘এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন আখ্যায়িত করে বলেন, নির্বাচণে ভরাডুবি হবে ভেবে তারা নিজেরায় ফন্দি ফিকির করছে।  নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকদের আক্রমন ও সব সময় সশস্ত্র অবস্থায় বেড়ারোর কারণে আমার কর্মীরা চরম ভীতসন্ত্রস্ত। 

এ ব্যাপারে সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, নৌকা প্রতীকের লোকজন আমাকে বিষয়টি অবহিত করার সাথে সাথেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়েজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম (অপরাধ) জানান,‘এ দু’টি জায়গাসহ  নির্বাচনী সহিংসতারোধে বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।