টাঙ্গাইলে ৩৪৯ পরিবার পেল জমিসহ পাকা বাড়ি

টাঙ্গাইলে ৩৪৯ পরিবার পেল জমিসহ পাকা বাড়ি

ছবি- নিউজজোন বিডি

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়নের রামদেবপুর গ্রামের করিমন বেগম (৫৫)। বিশ বছর আগে তার স্বামী মারা যান। জমি ও বাড়ি ঘর না থাকায় অন্যের বাড়িতে আশ্রয় থাকতেন। অন্যের বাড়ির গৃহাস্থলির কাজ করে তার সংসার চলতো। যা আয় হতো তার দিয়ে তিনি দুই মেয়ে নিয়ে খুব কষ্টে জীবন যাপন করতেন। মুজিববর্ষ উপলক্ষে জমিসহ পাকা ঘর পেয়ে তিনি খুবই খুশি।

করিমুন বেগম বলেন, ২০ বছর আগে আমার স্বামী মারা গেছে। দুই মেয়ে নিয়ে অন্যের বাড়িতে বসবাস করতাম। অন্যের বাড়ির কাজ করে আমার সংসার চলতো। মৃত্যুর আগে আমার তাও একটা ঠিকানা হলো। বিনা পয়সায় জমিসহ ঘর পেয়ে আমি খুবই খুশি। ঘর পেতে কাউকে কোন টাকা পয়সা দিতে হয়নি। শুধু করিমুন বেগম নয়, তার মতো ভূমিহীন ও গৃহহীন ৩৪৯ পরিবারের মাঝে জমিসহ পাকা ঘর হস্তান্তর করা হবে।

এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৭৫ টি। ইতিপূর্বে দুই হাজার ৯৯৩ টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়াও অবৈধ দখলে থাকা ৪০০ কোটি টাকার সরকারি খাস জমি উদ্ধার করা হয়েছে। প্রায় ১৫০ বিঘা জমির মধ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃতীয় পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপের ঘর গুলো আনুষ্ঠানিকভাবে ঘর হস্তান্তরের কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। বুধবার সকালে সদর উপজেলার পাইকমুড়িল আশ্রয়ণ প্রকল্পে প্রেসব্রিফিং এ জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি  এ তথ্য জানান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সোহানা নাসরিন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রানুয়ারা খাতুন, সহকারি কমিশনার (ভূমি) অতনু বড়ুয়া, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ, বাঘিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম মতিয়ার রহমান মন্টু প্রমুখ।

অপরজন ফাহিমা বেগম বলেন, আমার স্বামী সাত বছর আগে ব্রেন স্ট্রোকে অসুস্থ হয়ে পড়ে। বাড়ির জমি বিক্রি করে নিঃশ্ব হয়েছি। ভাসুরের বাড়িতে আশ্রয় থেকে একটি মাদ্রাসায় রান্নার কাজ করে সংসার চালাতাম। সরকারি ঘর পাওয়ায় আমার অনেক উপকার হয়েছে।

উজ্জল মিয়া  বলেন, অটো চালিয়ে কোন রকম সংসার চালাই। বাপের তেমন কোন সম্পদ না থাকায় সাত বছর আগে আমাকে পৃথক করে দেয়। তারপর অন্যের বাড়িতে ভাড়া থাকতাম। ঘর পেয়ে আমার পরিবারের স্থায়ী ঠিকানা হলো।

জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছে সারা বাংলাদেশে একজন মানুষও ভূমি ও গৃহহীন থাকবে না। তারই অংশ হিসেবে সারা বাংলাদেশে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহহীনদের গৃহ নির্মাণ করে দেয়া হচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় টাঙ্গাইল জেলায় আরও ৩৪৯ ঘর প্রস্তুত করেছি। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘর হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। গৃহহীনদের একেকটি ঘর তাদের একেকটি অঙ্গীকার।

তিনি আরও বলেন, ইতিপূর্বে যে সকল গৃহহীনদের মাঝে ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। সেই সব আশ্রয়নে বিশুদ্ধ পানি, বিদ্যুৎ, বৃক্ষরোপন করা হয়েছে। এছাড়াও তাদের স্বাবলম্ভী করতে সেলাই প্রশিক্ষনের মাধ্যমে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। এ দিকে বন্যায় ভাঙনের শিকার হয়ে যে সকল মানুষ গৃহহীন ও ভূমিহীন হয়েছে তাদেরও তালিকা প্রস্তুত করে জমিসহ গৃহ নির্মাণ করা হবে।