ইউক্রেনকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা বাড়াতে সাহায্য করবে নেটোভুক্ত দেশগুলো

ইউক্রেনকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা বাড়াতে সাহায্য করবে নেটোভুক্ত দেশগুলো

ইউক্রেনকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা বাড়াতে সাহায্য করবে নেটোভুক্ত দেশগুলো

রাশিয়ার ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইউক্রেনের নেটো-নেতৃত্বাধীন মিত্ররা ঘোষণা করেছেন যে কিয়েভকে তারা উন্নত প্রযুক্তির আকাশ প্রতিরক্ষা অস্ত্র সরবরাহ করবে।

যারা অস্ত্র দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স, এবং নেদারল্যান্ডস। এই দেশগুলো ক্ষেপণাস্ত্র এবং রাডার পাঠাবে।ব্রাসেলসে নেটোর হেডকোয়ার্টারে ইউক্রেনের ৫০টি মিত্র দেশের বৈঠক থেকে এই প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। কিয়েভ এই সম্মেলনকে প্রশংসা করে বলেছে এটি "ঐতিহাসিক"।

ইউক্রেন বলছে, রাশিয়া একশটির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে এবং অনেক ড্রোন ব্যবহার করেছে সোমবার এবং মঙ্গলবার। তাদের হামলার লক্ষ্য ছিল জ্বালানি অবকাঠামো এবং অন্যান্য বেসামরিক স্থান।

প্রথম দিনের হামলায় অন্তত ১৯জন নিহত হয়েছে। এই হামলার ফলে ইউক্রেনের বেশ কিছু শহরে ব্যাপকভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং পানির সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে।রাজধানী কিয়েভের কর্তৃপক্ষকে বিদ্যুৎ এর রেশনিং করতে হচ্ছে।রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন এই ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণ ছিল কার্চ সেতুর হামলার বদলা।

এই সেতুটি রাশিয়া এবং ক্রাইমিয়াকে যুক্ত করেছে, যেই ক্রাইমিয়াকে মস্কো ২০১৪ সালের নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করে।রাশিয়া বলছে শনিবারের বিস্ফারণ ছিল ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থার দ্বারা পরিচালিত। কিয়েভ এই দাবী নাকচ করেছে।

যুক্তরাজ্য ইউক্রেনকে প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র দেবে এবং একই সঙ্গে কয়েকশ ড্রোন দেবে যাতে করে ইউক্রেন তথ্য সংগ্রহ করতে পারে এবং কারিগরী সক্ষমতা বাড়াতে পারে। তারা আরো ১৮ টি হাউইটজার আর্টিলারি অস্ত্র সরবরাহ করবে, ইতোমধ্যে এধরণের ৬৪টি অস্ত্র পাঠানো হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের ডিফেন্স সেক্রেটারি বেন ওয়ালেস বলেন "ইউক্রেনে বেসামরিক লোকের উপর রাশিয়ার সাম্প্রতিক নির্বিচারে হামলা, যারা তাদের জাতিকে রক্ষা করতে চায়, তাদের আরো সাহায্য করার নিশ্চয়তা দিয়েছে"।"এই অস্ত্রগুলো ইউক্রেনকে প্রতিরক্ষার জন্য সাহায্য করবে এবং তাদের সামগ্রিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাকে শক্তিশালী করবে"।

বুধবার ব্রাসেলসে বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সেক্রেটারি লয়েড অস্টিন বলেন " ইউক্রেনের জন্য যেটা দরকার , সেটাই আমরা করতে যাচ্ছি"।ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো বলেছেন, প্যারিস বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহ করবে ইউক্রেনকে।

ফ্রান্স টু টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাতকারে তিনি এটা নির্দিষ্ট করে বলেননি কোন ব্যবস্থা পাঠানো হবে, কিন্তু তিনি বলেছেন তাদের প্রধান কাজ হবে ড্রোন থেকে জনগণকে রক্ষা করা।নেদারল্যান্ডস বলেছে তারা ১৫ মিলিয়ন ইউরো মূল্যের আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র পাঠাবে।

ডাচ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী কাজসা ওলোনগ্রিন বলেছেন " রাশিয়ার হামলা ইউক্রেনের মানুষের প্রতি শুধু নিরলস সমর্থনই বাড়াবে"।কানাডা ৪৭ মিলিয়ন কানাডিয়ান ডলারের বেশি অর্থের সমপরিমাণ সামরিক সহায়তা দেবে, যাতে স্যাটেলাইট যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং ড্রোন ক্যামেরা থাকবে।

যুক্তরাজ্য খুব অল্প সময়ের মধ্যে তাদের অস্ত্রের সরবরাহের ঘোষণা দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।এরমধ্যেই বুধবার ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ঘোষণা করে " স্টেট অব দ্যা আর্ট আইআরআইএস-টি এসএলএম জার্মানি থেকে ইউক্রেনে সরবরাহ করা হয়েছে"। তারা বলেন আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা "সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে" দেশকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে।

ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো টার্গেট করে সোমবার থেকে শুরু হওয়া রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রেক্ষাপটে বিশ্বের সবচেয়ে শিল্পোন্নত দেশগুলার জোট জি-সেভেনের নেতাদের সাথে এক বৈঠকে বেশ কিছু দাবি তুলে ধরেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।ভার্চুয়াল ঐ বৈঠকে তিনি পশ্চিমা অত্যাধুনিক অস্ত্র চেয়েছেন যা দিয়ে তিনি রুশ বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঠেকাতে পারবেন।

সূত্র : বিবিসি