পাবনায় তিনদিন ধরে বাস চলাচল বন্ধ , চরম দুর্ভোগ

পাবনায় তিনদিন ধরে বাস চলাচল বন্ধ , চরম দুর্ভোগ

পাবনায় তিনদিন ধরে বাস চলাচল বন্ধ , চরম দুর্ভোগ

রাজশাহী বিভাগে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট চলছে। এতে তিনদিন ধরে পাবনায় বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রী থেকে শুরু করে নিম্ন আয়ের মানুষ। গত তিনদিন আন্তঃজেলা বা দূরপাল্লার কোনো বাস পাবনা থেকে ছেড়ে যায়নি বা জেলায় প্রবেশ করেনি। সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ সংশোধন, মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধ ও জ্বালানি তেল এবং যন্ত্রাংশের অস্বাভাবিক মূল্য কমানোসহ ১০ দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে এ ‘কথিতধর্মঘট’ শুরু হয়। 

এদিকে ধর্মঘট নিয়ে কথা বলতে চাননি পরিবহন শ্রমিকরা।পরিবহন ধর্মঘটে অলস সময় পার করছেন পাবনার বাস শমিকরা। দিন এনে দিন খাওয়া এসব শ্রমিকদের পরিবার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবুও তারা ধর্মঘট নিয়ে কোনো কথা বলতে নারাজ।

 রেজাউল ইসলাম নামে এক বাসচালক বলেন, ধর্মঘট নিয়ে আমরা কিছু বলতে পারব না। কারণ আমরা কর্মচারী। মালিকের গাড়ি চালিয়ে সংসার চলে। আপনাদের কী বলতে কী বলব, তখন মালিক পক্ষ মন খারাপ করবে। কারণ সবকিছুর আগে আমাদের সংসার চালানোর কথা ভাবতে হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাবনা-বগুড়া রুটের বাসের এক হেলপার বলেন, সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক পরিষদ এই ধর্মঘট ডেকেছে। অথচ দাবি আদায়ের চেয়ে আমাদের মতো দিনমজুরদের সংসার চালানোর কথা ভাবতে হয় আগে।

পাবনা-রংপুর রুটের বাসচালক হানিফ (ছদ্মনাম) বলেন, কার গণসমাবেশ? কখন সমাবেশ? এসব নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। ওসব নিয়ে আমাদের কথা বলাও বেমানান। আমরা শুধু মালিকের অর্ডার ফলো করি। তবে আশা করি, খুব কম সময়ের মধ্যে ধর্মঘট ওঠে যাবে। কারণ এভাবে ধর্মঘট চলতে থাকলে সংসার চালানো মুশকিল হয়ে যাবে। এই দুঃসময়ে মালিক সমিতি আমাদের পাশে না দাঁড়ালে পথে বসতে হবে।

পাবনা জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মমিনুল ইসলাম মমিন বলেন, দাবি আদায়ে সরকারের সঙ্গে বার বার আলোচনা হলেও কোনো সমাধান না আসায় বাধ্য হয়ে ধর্মঘটের ডাক দিতে হয়েছে। এতে মালিক-শ্রমিক দুই পক্ষেরই স্বার্থ জড়িত। তাই দুই পক্ষই এই ধর্মঘটে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, শ্রমিকদের আপদ-বিপদের সময়ে মালিক সমিতি তাদের পাশে থাকে। চলমান ধর্মঘটেও কোনো শ্রমিক যদি অভাবে পড়ে বা সহায়তার প্রয়োজন হয়, তাহলে আমরা তার পাশে দাঁড়াব। এ নিয়ে ধর্মঘট ডাকার আগেই সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক পরিষদে আলোচনা হয়েছে। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখেছি।

প্রসঙ্গত, পাবনা থেকে আন্তঃজেলা ও দেশের বিভিন্ন রুটে গড়ে প্রতিদিন প্রায় পাঁচ শতাধিক বাস চলাচল করে। গত ২৬ নভেম্বর মহাসড়কে নসিমন ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ, ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইন সংশোধন ও পুলিশি হয়রানি বন্ধসহ ১১ দফা দাবি পূরণে সরকারকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত আল্টিমেটাম দেয় রাজশাহী বিভাগের আট জেলার ১৭টি সংগঠন। তাদেও বেধে দেয়া সময়ে দাবি পূরণ না হওয়ায় বৃহস্পতিবার (০১ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা থেকে ধর্মঘটে যায় সংগঠনগুলো।