রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: দুই পক্ষই শক্ত অবস্থানে

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: দুই পক্ষই  শক্ত অবস্থানে

সংগৃহিত ছবি।

ইউক্রেনের ভূখণ্ডে হামলা জোরদার করেছে রাশিয়া। রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের তীব্রতা আবার বাড়তে শুরু করেছে। এদিকে হারানো অঞ্চলগুলো পুনর্দখলে ইউক্রেন দোনেৎস্ক ও জাপোরিঝঝিয়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। রুশ বাহিনীর হামলায় দেশটির ১৩ জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

গতকাল বুধবার (১৪ জুন) স্থানীয় সময় সকালে ইউক্রেনের দোনেৎস্কে হামলা চালায় রুশ বাহিনী। এই হামলায় তিনজন নিহত ও তিনজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ড এই তথ্য জানিয়েছে। কমান্ডের প্রধান পাভলো কিনিলেনকো বলেন, দুই শহরে রুশ হামলায় বেশ কিছু আবাসিক ভবন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গতকাল দুই দফায় বিবৃতি দিয়েছিল ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ড। প্রথম বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, রোস্তভ অঞ্চলের নিকটবর্তী দোনেৎস্কের এলাকাগুলোয় হামলায় কেএইচ-২২ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে রুশ বাহিনী। সেখানে ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে।

এদিকে ওদেসায় রুশ হামলায় ৩ জন নিহত ও ১৩ জন আহত হয়েছেন। ইউক্রেনের অপারেশনাল কমান্ড সাউথের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই বন্দরনগরীতে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। কৃষ্ণসাগর থেকে এসব ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। এই শহরে একটি গুদামে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছিল। এতে তিনজন নিহত ও সাতজন আহত হন। ধারণা করা হচ্ছে, ওই হামলায় ধ্বংসাবশেষের নিচে অনেকে চাপা পড়েছেন।

ওদেসা শহরের প্রাণকেন্দ্রে একটি বাণিজ্যিক ভবন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠা ও আবাসিক এলাকা, রেস্তোরাঁ, দোকানপাট লক্ষ্য করেও হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। এসব হামলায় সাতজন আহত হয়েছেন।

রাশিয়া গতকাল ইউক্রেন লক্ষ্য করে যেসব ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, তার একটি বড় অংশ ঠেকিয়ে দিয়েছে ইউক্রেন। সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল রুশ বাহিনী। এর মধ্যে ১২ ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকিয়ে দিতে পেরেছে ইউক্রেনীয় বিমানবাহিনী।

গতকাল সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে সুমি অঞ্চলে। এই অঞ্চলে রাশিয়ার হামলা সাতজন প্রাণ হারিয়েছেন। নিহত সবাই ইউক্রেনের বন বিভাগের কর্মী। হামলার পর সুমি অঞ্চলের প্রশাসনিক প্রধান ভলোদিমির আর্তিউখ বলেন, সেখানকার সিরেদিনো-বউদা শহরে হামলা বাড়ি, দোকানপাটসহ বেশ কিছু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এর বাইরে রাশিয়া থেকে ছোড়া ড্রোনও ঠেকিয়ে দিয়েছে ইউক্রেনের বিমানবাহিনী। বাহিনীর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ১০টি ইরানের তৈরি ড্রোন নিক্ষেপ করেছিল রুশ বাহিনী। এর মধ্যে ৯টি ঠেকিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

এদিকে রুশ হামলার মধ্যেই নিজেদের এলাকা ফেরত পেতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। দেশটির বাহিনীর এক শীর্ষ জেনারেল এ নিয়ে কথা বলেছেন।

গতকাল এ নিয়ে একটি ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন ইউক্রেনের জেনারেল ভালেরি জালুঝনি। তিনি লিখেছেন, দেশের পূর্ব ও উত্তর দুই অঞ্চলে প্রতিরোধ এবং পাল্টা আক্রমণ চালানো হচ্ছে। তাঁদের সেনারা বেশ কিছু এলাকায় এগিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন।

ভালেরি বলেন, ‘আমাদের বেশ কিছু অর্জন আছে। আমরা আমার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছি এবং সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।’

যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা

জাপোরিঝঝিয়ায় পরিকল্পনা অনুসারে পাল্টা হামলা চালিয়ে আংশিকভাবে সফল হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। দেশটির বাহিনীর মুখপাত্র আনদ্রি কোভালভ বলেন, আজভ সাগরের উপকূলবর্তী কয়েকটি এলাকায় লড়াই চলছে।

এদিকে সম্প্রতি রুশ বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে বেশ কিছু সামরিক সরঞ্জাম খুইয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। এই ঘাটতি পুষিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি গত মঙ্গলবার ঘোষণা দিয়েছে, তারা ইউক্রেনকে ১৫টি ব্র্যাডলি যান দেবে।