বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ছিলেন একজন আদর্শ নারী, আদর্শ স্ত্রী ও আদর্শ মা : রাষ্ট্রপতি

বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ছিলেন একজন আদর্শ নারী, আদর্শ স্ত্রী ও আদর্শ মা : রাষ্ট্রপতি

বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ছিলেন একজন আদর্শ নারী, আদর্শ স্ত্রী ও আদর্শ মা : রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন বলেছেন, দেশ ও জাতির জন্য অপরিসীম ত্যাগ, সহমর্মিতা, সহযোগিতা ও বিচক্ষণতাই বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবকে বঙ্গমাতায় অভিষিক্ত করেছে। তিনি ছিলেন একজন আদর্শ নারী, আদর্শ স্ত্রী ও আদর্শ মা।   

রাষ্ট্রপতি বলেন, বাঙালি জাতির স্বাধিকার আন্দোলন ও মুক্তি সংগ্রামের নেপথ্যের কারিগর হিসেবে প্রতিটি পদক্ষেপে বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব বঙ্গবন্ধুকে সক্রিয় সহযোগিতা করেছেন। দেশের স্বার্থে বঙ্গবন্ধুকে বারবার কারাবরণ করতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে সেই কঠিন দিনগুলোতে তিনি ছিলেন দৃঢ় ও অবিচল। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের নেপথ্যেও ছিলেন তিনি। তাঁরই পরামর্শে বঙ্গবন্ধু হৃদয় থেকে উৎসারিত অলিখিত এ ভাষণ প্রদান করেন।মোঃ সাহাবুদ্দিন আগামীকাল বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আজ দেয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন। এ উপলক্ষ্যে তিনি এই মহীয়সী নারীর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।

এছাড়াও বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকীতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক ২০২৩ প্রাপ্তদের তিনি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, অনুষ্ঠানের এবারের প্রতিপাদ্য ‘সংগ্রাম-স্বাধীনতা, প্রেরণায় বঙ্গমাতা’ যথার্থ ও সময়োপযোগী হয়েছে বলে তিনি  মনে করেন। 
বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন অত্যন্ত নম্র, শান্ত ও ধৈর্য্যরে প্রতিমূর্তি। বুদ্ধিমত্তা, ধৈর্য্য ও অসীম সাহস নিয়ে আমৃত্যু স্বামীর পাশে থেকে একজন যোগ্য ও বিশ্বস্ত সহচর হিসেবে তিনি দেশ ও জাতি গঠনে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে হানাদার বাহিনীর হাতে গৃহবন্দী অবস্থায় পাকিস্তানে কারাবন্দী স্বামীর জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণেও তিনি সীমাহীন ধৈর্য্য, সাহস ও বিচক্ষণতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেন। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর সাথে তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। দেশ ও জাতির জন্য অপরিসীম ত্যাগ, সহমর্মিতা, সহযোগিতা ও বিচক্ষণতাই তাঁকে বঙ্গমাতায় অভিষিক্ত করেছে। তিনি ছিলেন একজন আদর্শ নারী, আদর্শ স্ত্রী ও আদর্শ মা।  

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সহধর্মিণী হয়েও বঙ্গমাতা সবসময় সাদামাটা জীবনযাপন করতেন উল্লেখ করে মোঃ সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘নির্লোভ, পরোপকারী ও নিরহংকার মুজিবপতœীর মাঝে বাঙালি মায়ের চিরন্তন প্রতিচ্ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। পার্থিব বিত্ত-বৈভব বা ক্ষমতার জৌলুস কখনো তাঁকে প্রভাবিত করেনি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে নিজ জীবনে লালন ও ধারণ করে সন্তানদেরকেও তিনি একই আদর্শে গড়ে তোলেন। তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একই শিক্ষা, আদর্শ ও চেতনাকে অবলম্বন করে বাংলাদেশকে আজ সুখী-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ হিসেবে গড়ে তুলতে নিরলস কাজ করছেন।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে স্বামী-পুত্র-পুত্রবধূসহ নিকট আত্মীয়ের সাথে তিনি ধানমন্ডির নিজ বাসভবনে স্বাধীনতা বিরোধী ঘাতকচক্রের হাতে নির্মমভাবে শহীদ হন। জাতির ইতিহাসে যা এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। বঙ্গমাতা আমাদের মাঝে না থাকলেও তাঁর রেখে যাওয়া নীতি ও আদর্শ আমাদেরকে ভবিষ্যৎ চলার পথে শক্তি ও সাহস যোগাবে। তরুণ প্রজন্ম বিশেষ করে নারী সমাজ তাঁর দেখানো পথ বেয়ে এগিয়ে যাবে উন্নতি ও অগ্রগতির পথে-এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি। রাষ্ট্রপতি  বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকীতে তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

সূত্র : বাসস